ঢাকা বুধবার, ০৮ জানুয়ারি, ২০২৫

মেঘনায় অবৈধ জালে অবাধে মৎস্য শিকার

চাঁদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২৫, ০৫:৩০ পিএম

মেঘনায় অবৈধ জালে অবাধে মৎস্য শিকার

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে অবাধে ধরা হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির ছোট মাছ ও রেনু পোনা। নিষিদ্ধ বেহুন্দি ও মশারি জালে শীত মৌসুমে এক শ্রেণির জেলে এসব মাছ ধরার জন্য নদীতে বিচরণ করে। তারা প্রতিদিন কয়েক টন ছোট মাছ নদী উপকূলীয় আড়ৎ, মাছ বাজার ও পাড়া মহল্লায় বিক্রি করে। যার ফলে ধ্বংস হচ্ছে ছোট মাছসহ নদীর জীব বৈচিত্র। তবে মৎস্য বিভাগ বলছে খুব শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করা হবে।

গত কয়েকদিন জেলার মতলব উত্তর, সদর ও হাইমচর উপজেলার নদী উপকূলীয় এলাকা ঘুরে দেখাগেছে নদী পাড়ে বেহুন্দি ও মশারি জালসহ শত শত নৌকা।

বিশেষ করে মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর, এখলাছপুর, আমিরাবাদ, সদর উপজেলার লালপুর, আনন্দ বাজার, যমুনা রোড টিলাবাড়ী, পুরাণ বাজার রনাগোয়াল, দোকনঘর, বহরিয়া, হরিণা ফেরিঘাট, আখনের হাট ও হাইমচরের চরভৈরবী এলাকায় এসব ছোট মাছ ও রেনু পোনা ধরা হয়।

খোঁজ নিয়ে এবং ছোট মাছ বিক্রেতাদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, শুধুমাত্র শহরের পুরাণ বাজার হরিসভা এলাকায় রয়েছে প্রায় ৭০টি নৌকা। এসব জেলেদের নেতৃত্ব দেন রাসেল, লিটন গাজী, শাহজাহান গাজী ও কামাল ছৈয়াল নামে জেলে। তারা মতলব উত্তর উপজেলা থেকে মৌসুমের এই সময়টাতে এসব জেলেদের এনে ছোট মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত করেন।

গত প্রায় ১৫ দিন বেলে পোনা, জাটকা, পোয়া, রিটা, বাটা, চেওয়া, চিংড়ি পোনাসহ ছোট মাছগুলো বাজারে বেশি বিক্রি হচ্ছে। নদী উপকূলীয় এলাকা ছাড়াও শহরের পুরাণ বাজার, লোহারপুল, পালবাজার, বিপনীবাগ, ওয়ারলেছসহ শহরের অলিতে-গলিতে এবং পাড়া মহল্লায় এখন ছোট মাছ বিক্রি হচ্ছে।

একাধিক ছোট মাছ ও রেনু পোনা বিক্রেতা জানান, সাগরপোনা নামে পাঁচ মিশালি রেনুপোনা প্রতিকেজি বিক্রি হয় ১২০-১৫০টাকা, বেলে পোনা প্রতিকেজি ২৫০ থেকে ৩০০টাকা। আর চিংড়ি পোনা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০টাকা কেজি দরে।

শহরের কোড়ালিয়া রোডের বাসিন্দা সালমা জাহান ও বঙ্গবন্ধু সড়কের বাসিন্দা নাছির উদ্দিন বলেন, ভোর বেলায় এসব ছোট মাছ বিক্রির জন্য নিয়ে আসে। দুপুর ১২টার মধ্যে এসব মাছ বিক্রি হয়ে যায়। তবে বাজারের চাইতে ভ্যানগাড়ীতে দাম কিছুটা কম।

হরিণা ঘাট এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, মৌসুমের এই সময়টাতে মতলব উত্তর থেকে কিছু জেলে এসে নিষিদ্ধ জালে ছোট মাছ নিধন করে। আমাদের এলাকার জেলেরা এসব জাল ব্যবহার করে না।

চরভৈরবী মাছঘাটের ব্যবসায়ী সম্রাট হাওলাদার বলেন, এ বছর নদীতে ইলিশ কম। এখন ছোট সাইজের বিভিন্ন মাছ আমাদের আড়তে বিক্রি হয়।

হাইমচর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা আশরাফুল হক বলেন, বেহুন্দি জাল দিয়ে মেঘনায় ছোট মাছ ধরা হয় এমন সংবাদে আমরা অভিযান করেছি। আবারও অভিযান করা হবে।

চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মির্জা ওমর ফারুক বলেন, এসব জাল দিয়ে মাছ ধরা সব সময় নিষিদ্ধ। খুব শিগগিরই আমরা কম্বিং অপারেশন শুরু করবো। মৎস্য বিভাগ, নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সহায়তায় আমাদের অভিযান চলবে। ইতোমধ্যে একাধিক অভিযান হয়েছে।

আরবি/জেডআর

Link copied!