বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২০, ২০২৪, ০৭:২৪ পিএম

মনোঘরের ৫০বছর সুবর্ণজয়ন্তীতে সন্তু লারমা

২০২৪ সালে এসেও পাহাড়ের মানুষ অনিশ্চিয়তা এবং নিরাপত্তায় ভোগছে

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২০, ২০২৪, ০৭:২৪ পিএম

২০২৪ সালে এসেও পাহাড়ের মানুষ অনিশ্চিয়তা এবং নিরাপত্তায় ভোগছে

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

রাঙামাটি মনোঘরের ৫০বছর সুবর্ণজয়ন্তীতে সন্তু লারমা বলেন, ২০২৪ সালে এসেও পাহাড়ের মানুষ অনিশ্চিয়তা এবং নিরাপত্তায় ভোগছে। সাবেক শিক্ষক গরিকা চাকমা সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা। মোনঘরের সূবর্ণ জয়ন্তী উৎসব উপলক্ষে দু’দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য র‌্যালি, আলোচনা সভা, মিলন মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় সন্তু লারমা ওরফে সন্তু লারমা। শুক্রবার সকালে মনোঘর খেলার মাঠে এই সুবর্ণজয়ন্তীর আয়োজন করা হয়েছে।

জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় সন্তু লারমা ওরফে সন্তু লারমা বলেন, তারা শুধু তাদের নির্ধারিত পাঠ্যপুস্তক পড়ে এগিয়ে যাবে সেটা না। আমাদের পাহাড়ি ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষার্থী যারা আছেন তারা তাদের স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় যে শিক্ষা জীবন সেটা সথেষ্ট নয়। মানুষ বেঁচে থাকে অনেক আশা আকংখা নিয়ে তার জীবনের অনেক কল্পনা থাকতে পারে বা থাকে। আজকে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাস্তবতা আমাদেরকে নানা ভাবে বাঁধাগ্রস্ত করে। এখানকার মানুষ স্বাধীন ভাবে তাদের জীবনকে ধরে রাখতে পারতো। কিন্তু কালের চক্রে রাজনৈতিক ডামাঢোলে ও সারা বিশ্বের যে রাজনৈতিক যে কার্যক্রম শাসন ব্যবস্থার যে বিভিন্ন বাস্তবতা তার মধ্যে দিয়ে পার্বত্য এলাকার মানুষ ধীরে ধীরে স্বাধীনসত্ত্বা হারাতে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, ২০২৪ সালে এসে আমরা কি দেখি কি অনুভব করি। পাহাড়ে একটা অনিশ্চিতা জীবন, পাহাড়ে নিরাপত্তাহীনতা জীবনযাপন করতে হচ্ছে। 

আজকে যারা মনোঘরের শিক্ষাথী ছিলেন, মনোঘরীয়ান নামে তারা পরিচিত। তারা আমাদের পাহাড়ের সম্পদ। মনোঘর এই বিদ্যাপীঠ থেকে জন্মাবেন  অনেক কবি সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ কবি সংগ্রামী মানুষ। মনোঘরে যারা জীবন অতিক্রম করে অবদান রেখেছেন তারা আগামীতে মনোঘরকে ধরে রাখবেন। আমি মনে করি পাহাড়ে যে বাস্তবতা ও  নিরাপত্তাহীনতা ও অনিশ্চিত জীবন নিয়ে বসবাস করছেন। আমারা ফিরে যেতে চাই জীবন বৈচিত্র পাহাড় ঝর্ণা সে জীবনে। আমরা একটা বিশেষ শাসনে শোষিত হচ্ছি। সে বাস্তবতাকে ফিরে পেতে এখানকার মানুষ লড়াই সংগ্রাম করেছি। এই লড়াই সংগ্রামে মনোঘরের শিক্ষার্থীরাও অংশ নিয়েছে। আগামীতেও মনোঘরীয়ানরা পাহাড়ে প্রতিটি লড়াই সংগ্রামে এগিয়ে আসবে এই প্রত্যাশা করছি।

চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিস্টার দেবার্শীষ চাকমা বলেন, মনোঘরের জন্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও বাংলাদেশের জন্য যারা যে অবদান রেখেছে তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। এই প্রতিষ্ঠানটি ৫০ বছর পেরিয়েছে সে জন্য আমি এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদকে ধন্যবাদ জানাই। পার্বত্য অঞ্চলের অনাথ, পিছিয়ে পড়া ও বঞ্চিত প্রান্তিক এলাকা থেকে এসে মনোঘরে পড়াশুনা করছে এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অনেক মেধাবি শিক্ষার্থী বের হবে ওই শিক্ষার্থী দেশ পরিচালনা করে। তাই এই প্রতিষ্ঠানে যারা অর্থ দিয়ে শ্রম দিয়ে সময় দিয়েছেন সবার প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চাকমা রাজা দেবাশীষ রায়, মং সার্কেল চীফ সাচিং প্রু চৌধুরী, নাট্যকার মামুনুর রশীদ, শিক্ষাবিদ শামসুদ্দীন শিশিরিসহ পাহাড়ের বিশিষ্টজনরা।

বক্তারা বলেন, পাহাড়ে শিক্ষা বিস্তারের আলোকবর্তিকা এই বিদ্যাপীঠ মোনঘর আগামী দিনগুলোতে আরো জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিবে এই প্রত্যাশা সবার। মনোঘর নামটি সকলের কাছে একটি পরিচিত নাম।

উপস্থিত বক্তারা বলেন, পাহাড়ে শান্তি নিকেতন হিসেবে পরিচিত ও ১৩টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাহাড়ি জাতিসত্ত্বাবাদের শিক্ষা প্রসারে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান মোনঘর। অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আজ শুক্রবার মোনঘর ৫০বছরে পা রেখেছে। প্রতিষ্ঠানটির এই সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে পাঁচ দশকের স্মৃতিতে নবীণ-প্রবীণদের যেনো মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। ১৯৭৪ সালে রাঙামাটি শহরের অদুরে রাঙ্গাপানি নামক এলাকায় চার একর জমিতে বৌদ্ধ সন্ন্যাসী জ্ঞানশ্রী মহাস্থবিরের কয়েকজন  শিয্য বিমল তিয্যে ভিক্ষু,প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু ও শ্রদ্ধালংকার ভিক্ষুর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গড়ে তুলেন মোনঘর শিশু সদন। ‘মোনঘর’ শব্দের অর্থ পাহাড়ে জুম চাষের জন্য চাষিদের থাকার অস্থায়ী আশ্রয়স্থল। যতদিন পর্ষন্ত চাষীরা জুম ধানের বীজ থেকে অন্যান্য ফলন মোনঘরে তূলতে না পারে ততক্ষণ পর্ষন্ত এই আশ্রয়স্থলে থেকে কাজকর্ম চালিয়ে যায় জুমিয়ারা।

ঠিক তেমনি পাহাড়ের ১৩টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বা চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, চাক, বম, লুসাই, পাংখোয়াসহ অসহায় ছিন্নমূল অনাথ, গরীব ও মেধাবী ছেলে-মেয়েদের মোনঘরে আশ্রয় দিয়ে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলা হয়। ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানটি পাহাড়ে অন্যতম শিক্ষার স্থান হিসেবে পরিণত হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠান থেকে পাঁচ দশকে  কয়েক হাজার পাহাড়ি সম্প্রদায়ের ছেলে-মেয়ে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশ-বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। আজ পাহাড়ের এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান মোনঘরের সূবর্ণজয়ন্তী উৎসব। এই প্রতিষ্ঠান থেকে পড়ালেখা করে যাওয়া শিক্ষার্থীরা তাদের সহপাঠী ও বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে স্মৃতি মন্থনে মেতেছেন। সেই সাথে নবীণরাও প্রবীণদের সাথে যোগ দেওয়ায় পরিণত হয়েছে মিলন একটি মেলা ।

আরবি/জেডআর

Link copied!