বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন ছোট-বড় মাছ বিলুপ্তির পথে। হারিয়ে যাওয়া ওই সব মাছের স্বাদ ভুলে যাচ্ছে মানুষেরা। কয়েক বছর আগেও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ছোট-বড় নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর ডোবায় এবং ফসলী ক্ষেতে প্রচুর দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত। এক শ্রেণীর মানুষ মাছ ধরাকে তাদের পেশা হিসেবে নিয়েছিল। কিন্তু যত্রতত্র মাছ আর পাওয়া না যাওয়ায় সে সকল জেলেরা বর্তমানে বিভিন্ন পেশা বেছে নিয়েছে।
বিলুপ্তি হওয়া মাছের মধ্যে রয়েছে বোয়াল, মাগুর, কৈ, শিং, তেলাপিয়া, শৌল, পুটি, রয়না, পাবদা, টাকি, বাইন প্রভৃতি। ইদানীং পুঁটি, জাত টাকি, চিংড়ী, তিত পুঁটি, টেংরা, বাইলা, বাইন মাছগুলোও হাট-বাজারে তেমন চোখে পরেনা। মাঝে মধ্যে পাওয়া গেলেও দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। বৃদ্ধ মৃনাল, কিশোর বয়স থেকেই মাছ ধরাকে সে পেশা হিসেবে নিয়েছিল। খাল-বিল, নদী, ডোবা, পুকুর থেকে মাছ ধরে হাট-বাজারে বিক্রির মাধ্যমেই মৃনাল তার সংসার চালাতো। তিন ছেলে-পাচঁ মেয়েকে মাছ ধরেই বড় করেছেন। ১০/১২ বছর শহিদুল ইসলাম মাছ ধরেনা বলে জানায়। তার মতে দের যুগের মধ্যে কম পক্ষে ৮/১০ প্রকারের দেশীয় প্রজাতির মিঠা পানির মাছ বিলুপ্তি হয়ে গেছে।
দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হওয়ার কারণ হিসেবে উপজেলা মৎস্য কর্মর্কতা মোহাম্মদ আলম জানান, দেশীয় প্রজাতির মাছ যত্রতত্র ডিম ছেড়ে বংশ বিস্তারের মাধ্যমে বড় হয়, কিন্তু গ্রামের গরীব ও নিম্নবিত্ত মানুষেরা শুষ্ক মওসুমে সামান্য পানি থাকা ডোবাগুলো সেচে সকল মাছ নির্বিচারে ধরার ফলে মাছের বংশ বিস্তারে চরম বিঘ্ন ঘটে। আবার ফসলী জমিতে প্রচুর কীটনাশক প্রয়োগ করায় পানি দূষিত হয়ে মাছের মৃত্যু, রোগবালাই বৃদ্ধি এবং প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট হচ্ছে, ফলে পরবর্তী বছরে পর্যায়ক্রমে দেশীয় মাছ আর পাওয়া যায়না। মাঝে মধ্যে দুচারটা পাওয়া গেলেও দাম আকাশচুম্বি।
এক্ষেত্রে বাজার দখল করছে বিদেশী কার্প জাতীয় বিভিন্ন মাছ। হাট-বাজারে এখন বিদেশী কার্প জাতীয় মাছের প্রচুর সবারাহ। ক্রেতারা বাজারে দেশীয় প্রজাতির মাছ না পেয়ে বাধ্য হয়েই স্বাদহীন কার্প জাতীয় মাছ কিনছেন।
আপনার মতামত লিখুন :