আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর, অনুমোদনহীন অবৈধ বাংলাদেশ আন্ত:জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের বর্তমান কমিটির চাঁদাবাজি, শ্রমিক ও মালিকদের উপর জুলুম নির্যাতনসহ অবৈধ কমিটির সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম বন্ধ করার দাবিতে আন্ত:জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি. নং -বি-১১৪৩) সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে বুধবার (২০ নভেম্বর) বিকাল ৩ টায় নগরীর লাভ লেইনস্থ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিএমইউজে) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আন্ত:জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক তৌফিকুল ইসলাম। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন শ্রমিক ইউনিয়ন সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক ও ইউনিয়নের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ ইব্রাহিম।
উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ রফিক, সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুসলিম, সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মোশাররফ হোসেন জুয়েল, আবুল হাশেম, মোহাম্মদ নুর নবী।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশ আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের বর্তমান কমিটির অবৈধ নেতারা পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের নেতাদের সাথে যোগাযোগ করে দেশে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। শ্রমিক ও মালিকদের উপর জুলুম নির্যাতন চালাচ্ছে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। তাদের নির্যাতন খুলনার এরশাদ শিকদারের নির্যাতনকেও হার মানিয়েছে।
নেতৃবৃন্দ চাঁদাবাজ ও অবৈধ বর্তমান কমিটিকে বাতিল করে সকল কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানান। অন্যথায় এই অবৈধ কমিটিকে প্রতিহত করা হবে।
লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ১৬ বছর যাবৎ ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগ সরকারের জুলুম নির্যাতনে বাংলাদেশের সকল শ্রেণি পেশার মানুষ অতিষ্ঠ ছিল। তারা মানুষের স্বাধীন ভাবে কথা বলার স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছিল। যারা তাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছে তাদেরকে মিথ্যা মামলা ও হামলার শিকার হতে হয়েছে।
সাধারণ মানুষকে বিনা বিচারে বছরের পর বছর আয়না ঘর নামক স্থানে আটক রেখে প্রতিবাদীদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করেছে। সড়ক পথ সহ দেশের সর্বত্র প্রতিবাদীদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করেছে। সড়ক পরিবহন থেকে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে লুটপাট করে অবৈধ উপায়ে হাজার হাজার কোটি টাকা চাঁদা আদায় করেছে। দেশের নিরীহ মানুষ তাদের অত্যাচারে নিরব থাকা ছাড়া কোন উপায় ছিল না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সমর্থিত শ্রমিক নেতারা পরিবহন শ্রমিক নেতা ও সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান খানের দাপট দেখিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর যাবৎ শ্রমিক ইউনিয়নের ভিন্নমতের সাধারণ শ্রমিক ও মালিকদের উপর জুলুম নির্যাতন করে চাঁদা আদায় করেছে। ২০০৯ সালে জসিম উদ্দীনকে সভাপতি ও মো. মুসাকে সাধারণ সম্পাদক করে অনির্বাচিত একটি কমিটি গঠন করে। ২০১৮ সালে রুহুল আমিনকে সভাপতি ও ইমাম শরীফ চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক করে অনির্বাচিত আরেকটি কমিটি অনুমোদনের জন্য সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে আবেদন করলে শ্রম আদালতে আই আর মামলা নং-১৭/২০১৮ চলমান থাকায় এবং শ্রম দপ্তরের নির্দেশনা অমান্য করায় সরকারের শ্রম অধিদপ্তর ট্রেড ইউনিয়ন শাখা একটি পত্রের মাধ্যমে এই অবৈধ কমিটি বাতিল করেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ছাত্র জনতার আন্দোলনে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হওয়ার পর মন্ত্রী শাহজাহান খান সহ সরকারের দোসররা পালিয়ে যায়। কিন্তু বর্তমানে তারা পূনরায় সংগঠিত হয়ে সাধারণ শ্রমিক সহ মালিকদের উপর জুলুম নির্যাতন করে চাঁদা আদায় করছে। তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বললে বর্তমানেও তারা সাধারণ শ্রমিকদের মারধর করছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা সাধারণ শ্রমিকদের কল্যাণে কাজ করি। সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান খানের পক্ষ থেকে ইমাম শরীফ গং ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল চৌধুরীর নেতৃত্বে অসহায় শ্রমিকদের নিকট থেকে চাঁদা আদায় করা হয়। তাই তাদের অবৈধ থাবা থেকে শ্রমিকদের বাঁচানোর জন্য চাঁদাবাজ ও অবৈধ কমিটির সকল কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবী জানান।
আপনার মতামত লিখুন :