বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


নজরুল ইসলাম দয়া, বগুড়া

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২২, ২০২৫, ০৮:৩৭ পিএম

অপ্রতিরোধ্য ভেকু সিন্ডিকেট, মাটি বিক্রির মহোৎসব

নজরুল ইসলাম দয়া, বগুড়া

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২২, ২০২৫, ০৮:৩৭ পিএম

অপ্রতিরোধ্য ভেকু সিন্ডিকেট, মাটি বিক্রির মহোৎসব

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পুকুর সংস্কারের নামে বগুড়ায় মাটি বিক্রির মহোৎসব চলছে। আবাদি জমি খনন ও ভরাটে ধ্বংস হচ্ছে কৃষি জমি। মাটিবাহী ট্রাক্টর চলাচল করায় নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ সড়ক। সুযোগ বুঝে নাগরনদীতে বালু উত্তোলন ও সরকারি খালের পাড় কেটে মাটি বিক্রি করছে প্রভাবশালীরা। তথ্য পেয়ে গভীর রাতে অভিযান চালাচ্ছে প্রশাসন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের তৎপরতা থাকলেও অপ্রতিরোধ্য ভেকু সিন্ডিকেট। বালুমহাল, মাটি ব্যবস্থাপনা ও ভূমি আইনের তোয়াক্কা করছে না কেউ। 

সরেজমিনে দেখা যায়, বগুড়া সদরসহ নন্দীগ্রাম, কাহালু, গাবতলী, আদমদীঘি, দুপচাঁচিয়া ও শাজাহানপুর উপজেলায় প্রকাশ্যেই কৃষি জমি ধ্বংস করছে মাটিখেঁকোরা৷ কৃষিতে নির্ভর বিভিন্ন এলাকায় গত দুইমাস ধরে মাটি কেটে বিক্রি ও আবাদি জমি ভরাট কাজ চলছে। এসিল্যান্ড-ইউএনওকে ম্যানেজের কথা বলে একাধিক চক্র মোটাঅঙ্কের চাঁদা নিচ্ছে বলেও তথ্য পাওয়া গেছে।

স্থানীয়রা জানান, কাহালু উপজেলার দেওগ্রাম শনিপুকুর সংস্কারের নামে গভীর গর্ত করে মাটির সঙ্গে তোলা হচ্ছে বালু। মাটি তুলে ট্রাক্টর দিয়ে ইট ভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। গ্রামীণ সড়কে মাটি পড়ে বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে। দেওগ্রাম শনিপুকুরে ভেকু চক্রের আব্দুর রহিম জানান, সেখানে রিপন নামের একজনের দায়িত্বে কাজ করছেন। প্রশাসনসহ সবাইকে ম্যানেজ করা হয়েছে। 

এদিকে, বগুড়া সদরের নেংড়া বাজার, এরুলিয়া এলাকাসহ নন্দীগ্রাম, শাজাহানপুর ও কাহালু উপজেলায় দিনে রাতে আবাদি জমি খনন করা হচ্ছে। পুকুর সংস্কারের নামে গভীর গর্ত করে মাটি বিক্রি থেমে নেই। প্রশাসনের তৎপরতার মাঝেই নন্দীগ্রাম উপজেলার নাগর নদীতে বালু উত্তোলন করাসহ সরকারি একটি খালের পাড় কেটে মাটি বিক্রির তথ্য পাওয়া গেছে। 

গত সোমবার রাতে উপজেলার রামকৃষ্টপুর ঝিনাদীঘির সরকারি খালের পাড় কেটে মাটি বিক্রির সময় অভিযান চালিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। হাতেনাতে ভেকু সিন্ডিকেটের একজনকে আটকের পর নগদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রোহান সরকার। সম্প্রতি গুলিয়া-পারশুন এলাকার নাগর নদীতে বালু উত্তোলনের সময় অভিযান চালানো হলেও কাউকে আটক করা যায়নি। প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে বালুখেঁকোরা পালিয়ে গেছে। সেখানে এস্কেভেটর (ভেকু) ও বালুবাহী ট্রাক্টর পড়ে থাকলেও জড়িতদের সনাক্ত করতে পারেনি প্রশাসন। এর আগে গত ২১ ডিসেম্বর ভাটরা ইউনিয়নের দমদমা গ্রামে পুকুরখনন করে মাটি উত্তোলনের অপরাধে নগদ ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ডাদেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। 

ভূমি অফিস সংশ্লিষ্ট ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নন্দীগ্রাম উপজেলার রামকৃষ্টপুর ঝিনাদীঘির সরকারি খালের পাড় কেটে মাটি বিক্রি করছিল ভেকু সিন্ডিকেটের আকরাম, সাইদুল ও জাহাঙ্গীর। প্রশাসনসহ সব দপ্তর ম্যানেজের কথা বলে মেহেদী নামের এক যুবক সেখান থেকে চাঁদা নিয়েছে। তাদের নিয়ন্ত্রণে ভাটরার থালতাপাড়া এলাকায় পুকুর সংস্কারের নামে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। ভরতেতুলিয়া গ্রামের ভেকু সিন্ডিকেটের বাদল এবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। মনিনাগ এলাকায় পুকুর সংস্কারের নামে মাটি বিক্রি ও প্রশাসনের নাম ভাঙিয়েও সে অপ্রতিরোধ্য। পুকুর সংস্কারের নামে মাটি তুলে ট্রাক্টর দিয়ে কৃষি জমিতে নেওয়া হচ্ছে। পুকুরে গভীর গর্ত করায় মাছ চাষ অনুপযোগী এবং মাটি ভরাটে কমছে আবাদি জমি। ভেকু সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম ঠেকাতে তৎপর হয়েছে প্রশাসন। কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তন করায় হচ্ছে জরিমানা। 

নন্দীগ্রাম উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রোহান সরকার বলেন, পুকুর ও খাল কেটে মাটি তোলায় দুইজনের একলাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। শুনেছি প্রশাসন ম্যানেজের কথা বলে একাধিক ব্যক্তি চাঁদাবাজি করছে। নাগর নদীতে বালু উত্তোলন ও রামকৃষ্টপুরে খাল কেটে জমি ভরাটসহ মাটি বিক্রির সময় অভিযান চালানো হয়েছে। নাগর নদীতে বালু উত্তোলনে জড়িতরা পালিয়ে গেছে। অসাধু চক্রের দৌরাত্ম ঠেকাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান ও নিয়মিত মামলা দায়ের করা হচ্ছে। 

আরবি/জেডআর

Link copied!