সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়ন পরিষদ হতে মনোহরপুর পর্যন্ত ঋষিপাড়া রাস্তাটি মরন ফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত সংস্কার না করায় এই রাস্তাটি খানাখন্দে পরিনত হয়েছে। ফলে পথচারী ও অসুস্থ রোগী বহন কারিসহ সাধারণ জনগণ ও যানবাহন চলাচলে নিত্যনৈতিক দুর্ঘটনা শিকার হচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, এই রাস্তার খোয়া, পাখর, পিচ, উঠে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে চলা চলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ পায়ে হেঁটে এবং বিভিন্ন যানবাহনে করে চলাচল করে।
পথচারী উপজেলার কাজিডাঙ্গা গ্রামের গফফার মোড়ল বলেন, আমাদের এই এলাকাটি বন্যা কবলিত এলাকা ঘোনা, নারানপুর, কাজিডাঙ্গা, ভবানীপুর, খরাইল, বারাত, প্রতিবছর রাস্তার পাড়ে এক থেকে দেড় ফুট পানি জমে থাকে যে কারণে রাস্তাটির পিচ খোয়া উঠে খানা খন্দে পরিণত হয়েছে। এই রাস্তাটি সংস্কার হওয়া খুবই প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।
ঘোনা গ্রামের পথচারী হযরত সরদার বলেন, এখান থেকে ২০ বছর আগে বিগত বিএনপি সরকার থাকা অবস্থায় সাবেক এম পি হাবিবুল ইসলাম হাবিব সাহেবের আমলে এই রাস্তাটি প্রথমে নির্মাণ করা হয়। তারপর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দীর্ঘ ১৭ বছর পর্যন্ত এ রাস্তাটি সংস্কার হয়নি। ফলে রাস্তাটির খোয়া,পাথর উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ লোকজনের বাইসাইকেল, মটর সাইকেল, ভ্যান ইজিবাইক সহ বিভিন্ন পরিবহনে যাতায়াত করার সময় অহরহ দুর্ঘটনার সম্মুখীন হচ্ছেন। অনেক সময় অনেক ভ্যান গাড়ি উল্টে যেতে দেখা যায় এতে করে তাদের গাড়ির অনেক যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায় তাই দ্রুত এই রাস্তাটি সংস্কার করা প্রয়োজন।
উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের ভ্যান চালক আজিজ শেখ বলেন, এই রাস্তা দিয়ে ভ্যান নিয়ে চলাচল করতে গিয়ে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় পড়ে আমাদের সারাদিনের ইনকাম ভ্যানের পিছনে খরচ করে খালি হাতে আমাদেরকে বাড়ি ফিরতে হয়।
এই রাস্তাটি দিয়ে তালা থেকে পাটকেলঘাটা এবং সাতক্ষীরা সদরে যাওয়া অতি সহজ হওয়ায় এই রাস্তাটি জনবহুলে পরিণত হয়। কিন্তু এ রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় রাস্তাটির খোয়া, পাথর, পিচ উঠে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ায় সাধারণ জনগণের এই পথ দিয়ে চলাচল করতে বিভিন্নভাবে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে এই রাস্তাটি চলাচলের অনুপোযোগী অবস্থায় থাকলেও বিগত সরকারের আমলে সাবেক সংসদ সদস্যসহ স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বে যারা আছেন এই রাস্তাটি কারোর চোখে পড়েনি বলে অভিযোগ করেন ইসলামকাটি ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার এজহার আলি। তিনি বলেন, বিগত সরকারের আমলে ৫ বছর এম পি ইঞ্জিনিয়ার মুজিবুর রহমান ও ১০ বছর এম পি অ্যাডভোকেট মোস্তফা লুৎফুল্লাহ এই তালা কলারোয়া এমপি ছিলেন কখনো আমাদের রাস্তার খোজ খবর রাখেনি। কখনো দেখেনি আমরা কেমন করে এই রাস্তাটি দিয়ে যাতায়াত করছি। আমাদের রাস্তা ঘাটের কি অবস্থা।
রাস্তাটির ব্যাপারে ইসলামকাটি ইউনিয়নের চ্যায়ারম্যন গোলাম ফারুকের কাছে জানতে চাইলে তিনি রূপালী বাংলাদেশ কে বলেন, আমি এই রাস্তাটির দুর্দশা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও বিগত সরকারের সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যান সহ বহু জায়গায় কথা বলেছি কিন্তু কোন কাজ হয়নি। তাই আপনাদের লেখনীর মাধ্যমে রাস্তাটির চলাচলের অনুপযোগীর করুন কাহিনী কথা তুলে ধরলে আমারা আবার চেষ্টা করে যদি রাস্তাটা সংস্কার করতে পারি।
তিনি আরও বলেন গ্রামের কোন মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে এই রাস্তা দিয়ে ভ্যান, ইজিবাই যেকোনো পরিবহনে হসপাতাল এর উদ্দেশ্যে নিয়ে যেতে গেলে ঝাঁকুনিতে রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন।
স্থানীয় সাংবাদিক আতাউর রহমান বলেন, এই রাস্তা দিয়ে উপজেলার বারাত গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আনসার আলী যাওয়ার সময় অ্যাক্সিডেন্ট করে হসপিটালে মারা যান, উপজেলার কাজিডাঙ্গা গ্রামের আক্তার শেখ এই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় এক্সিডেন্ট করে প্রতিবন্ধী জীবন যাপন করছেন। বর্তমানে রাস্তাটির বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে।তিনি সহ এলাকাবাসী এই রাস্তাটি সংস্কার দ্রুত করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।
রাস্তাটির বিষয়ে জানতে চাইলে তালা উপজেলা প্রকৌশলী জনাব রথীন্দ্রনাথ হালদার এই প্রতিবেদককে জানান, আমি জেনেছি আমি দেখেছি এই রাস্তাটি আসলেই সংস্কার করা প্রয়োজন আমি উদ্ধতন কর্মকর্তাকে বলে এই রাস্তাটি যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার করা যায় তার ব্যবস্থা করবো।
আপনার মতামত লিখুন :