উত্তরের সীমান্ত ঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রামে হাড় কাঁপানো কনকনে ঠান্ডায় কাঁপছে মানুষ। ঘন কুয়াশা না থাকলেও বাতাসে আর্দ্রতার পরিমান বেশী হওয়ায় ঠান্ডা বেশী অনুভূত হচ্ছে। ফলে সূর্যের আলোতেও তেমন একটা উষ্ণতার পরশ পাচ্ছে না জেলার ১৬টি নদীর অববাহিকায় বসবাসকারী সাড়ে চার শতাধিক চর ও দ্বীপ চরের মানুষ। সে-সঙ্গে উত্তরীয় হিমেল হাওয়া বাড়িয়ে দিয়েছে ঠান্ডার মাত্রা। এতে চরম দূর্ভোগে পরেছেন খেটে-খাওয়া, শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষজন।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে জেলায় সর্বনিম্ন ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ৯৮ শতাংশ। এক সপ্তাহেরও বেশী সময় ধরে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১-১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে বলে জানিয়েছে রাজারহাট আবহাওয়া অফিস কর্তৃপক্ষ।
রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, তাপমাত্রা আরও নিম্নগামী হচ্ছে। সেই সাথে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশী থাকায় কনকনে ঠান্ডা অনুভুত হচ্ছে। এবং হিমালয়ের হিম বাতাসের কারনে মানুষের দূর্ভোগ বেড়েছে।
এদিকে হাড় কাঁপানো কনকনে ঠান্ডায় দূর্ভোগ বেড়েছে নদ নদী অববাহিকায় বসবাসকারী শ্রমজীবী ও ছিন্নমূল মানুষের। খড়কুটো জ্বালানি শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন অনেকেই। শিরশির ঠান্ডা বাতাস ও বাতাসে জলীয়বাষ্প বেশী থাকায় সূর্যের আলোর উষ্ণতা খুব একটা অনুভূত হচ্ছে না। ফলে বিপাকে পরছেন এসব অঞ্চলের দিনমজুর ও কৃষিশ্রমিক।
জেলা সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের গোয়াইলপুরী এলাকার কৃষিশ্রমিক জব্বার মোল্লা বলেন, "দিনে সূর্য উঠলেও ঠান্ডা বাতাসের কারনে স্বস্তি লাগে না। ফলে খেতে কাজ করা কষ্টকর হয়। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত কনকনে ঠান্ডায় ঘর থেকে বের হওয়া অসম্ভব হয়ে পরে।"
ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের ভ্যানচালক আব্দুর রশিদ বলেন, তিন দিন ধরে কুয়াশা কম। তবে ভ্যানে উঠলে প্রচন্ড ঠান্ডা বাতাসে হাত পায়ে কাঁপুনি আসে। শরীর অবস হওয়ার মতো হয়। কিন্তু উপায় তো নেই! রোজগার না করলে পরিবারকে খাওয়াবো কী?
অপরদিকে শীতে বাড়ছে ঠান্ডা জনিত রোগ। ফলে ডিসপেনসারিতে গুলো বাড়ছে এন্টিহিস্টামিন সহ সর্দি, কাশি ও শাসকষ্ট জনিত রোগের ওষুধ।
জেলা শহরের ওষুধ বিক্রেতা জাহিদুল ইসলাম জাহিদ জানান, ঠান্ডা বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে বেড়েছে শীত জনিত রোগ। সেই সাথে চাহিদা বেড়েছে এন্টিহিস্টামিন সহ মন্টিলুকাস্ট জাতীয় ওষুধের।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, শীত নিবারণের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দের ২৭ লাখ টাকা ও ১২ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে বরাদ্দ পাওয়ামাত্র তা বিতরণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :