গত কয়েকদিন টানা ভারী বর্ষণ ও অতি জোয়ারে কাঠালিয়া উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় কৃষকের শত শত হেক্টর আমন বীজতলা তলিয়ে রয়েছে জলাবদ্ধতায়। জলাবদ্ধতার কারণে এ অঞ্চলের প্রধান ফসল আমন বীজতলা নষ্টের শঙ্কায় হতাশায় রয়েছেন কৃষক।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, গেল আষাঢ় থেকে ২/৩ দফা বীজতলা করেও ভারী বর্ষণ ও জলাবদ্ধতার কারণে ২/৩ ফুট পানির নিচে তলিয়ে থাকার কারণে বাঁচাতে পারেনি বীজতলা। বেশীর ভাগই পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। সবশেষে শ্রাবণের শেষের দিকে বীজ তলা করেও তা গত কয়েকদিন টানা বর্ষণ ও অতি জোয়ারের পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় তাও বাঁচানো যাবে কিনা শঙ্কায় রয়েছেন কৃষক। এ দিকে আমন বীজতলা করার আর এখন সময়ও তেমন নেই এবং কৃষকের কাছে বীজতলা করার মত কোন বীজধানও নেই। এ কারণে এ বছর আমন বীজের (চাড়া) ভিষণ সংকট দেখা দিবে বলে মনে করেন অনেক কৃষক। এ সংকট মোকাবেলায় উচ্চ/চড়া দামে বীজ (ধানের চাড়া) কিনতে হবে কৃষককে। কিন্তু বীজ (ধানের চারা) কৃষক ফসল ফলিয়ে তেমন লাভবান হবেনা বলে মনে করেন কৃষকরা।
উপজেলার দক্ষিন চেচঁরী গ্রামের কৃষক মো. ছায়েদ আলী ফকির জানান, টানা বৃষ্টি ও অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে তার ১৫ শতাংশ জমির বীজতলা পানিতে তলিয়ে রয়েছে। পানি নিষ্কাশন ও পরিচর্জা করে ওই বীজতলার বীজ বাচিয়ে রাখার চেষ্ট করছেন বলে তিনি জানান।
উপজেলা আনইলবুনিয়া গ্রামের কৃষক মো. স্বপন হাওলাদার বলেন, এ বছর আমন মৌসুমে কয়েক দফা বীজতলা করেও বেশীর ভাগ বীজ (ধানের চারা) নষ্ট হয়ে গেছে। যাও পানিতে তলিয়ে আছে তা গোড়া পঁচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পানি নিষ্কাশনের ভালো ব্যবস্থা না থাকায় আমাদের বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হচ্ছে।
উপজেলার পশ্চিম আউরা গ্রামের মো. নুরনবী তালুকদার বলেন, আমি আমন মৌসুমের যে বীজতলা করছিলাম তা পানিতে ডুবে বেশীর ভাগই নষ্ট হয়ে গেছে। এ বছর মনে হয় আমন বীজ কিনে অনেককেই আবাদ করতে হবে। কারণ বীজ সংকট দেখা দিবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান বিন ইসলাম বলেন, ভারী বর্ষণ ও অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে আমন বীজতলা ডুবে থাকায় পচন ঝুঁকিতে রয়েছে। তিনি আরও বলেন-চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ৮১৫ একর জমিতে স্থানীয় জাতের ও ৭০৩ একর জমিতে উফশী জাতের আমন বীজতলা কৃষকরা করেন। জলাবদ্ধতার অতিরিক্ত পানিতে ডুবে থাকা বীজতলা থেকে ২/১ দিনের মধ্যে পানি না কমলে বীজ পচে নষ্ট হওয়ার আশংকা রয়েছে। তবে অনেক কৃষকেরই বীজ তলা ভালো রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, খাল ভরাট, অপরিকল্পিত বেড়িবাঁধ ও যত্রতত্র অপরিকল্পিত কালভার্টসহ বিভিন্ন কারণে ফসলের মাঠের অতিরিক্ত পানি সরে যেতে পারে না এবং কৃষি জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পানি এ অব্যবস্থাপনার কারণে সঠিক সময় পানি নিষ্কাশন করতে পারেন না কৃষক। যার ফলে প্রতি বছরই ভারী বর্ষণের জলাবদ্ধতায় কৃষকের বীজতলাসহ বিভিন্ন আবাদ নষ্ট হয়।
আপনার মতামত লিখুন :