অফিস বা বাড়ির আঙিনায় সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলতে এখন দিন দিন চাহিদা আর জনপ্রিয়তা বাড়ছে ‘লন কার্পেট’ ঘাসের। আর সেই ঘাস বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে সফলতা পেয়েছেন অনেকে। এবার পতিত জমিতে বাণিজ্যিকভাবে এই ‘লন কার্পেট’ ঘাস চাষ করে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা আয় করছেন নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার এক কৃষক।
সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের সেহড়াউন্দ গ্রামের বাসিন্দা সাইকুল ইসলাম একসময় কৃষি কাজ করতেন। ২০২০ সালে ঢাকায় বেড়াতে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে এই ‘লন কার্পেট’ ঘাস দেখতে পান তিনি। সেখান থেকে বাড়ি ফিরে ‘লন কার্পেট’ ঘাস চাষ করার কথা চিন্তা করেন। এরপর তিনি এক লাখ টাকা খরচে ৮ শতাংশ জমি ভাড়া নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ঘাসের চাষ শুরু করেন। এতে বাণিজ্যিক সফলতা পেয়েছেন তিনি। বাজারজাত করে এক বছরেই সফলতার মুখ দেখেছেন। এখন বর্তমানে তিনি ৭০ শতাংশ জমিতে এই ‘লন কার্পেট’ ঘাস চাষ করেছেন। এতে কর্মসংস্থান হয়েছে স্থানীয় যুবকদেরও। তাদের জনপ্রতি দৈনিক হাজিরা ৫০০ টাকা। সবমিলিয়ে তার প্রতি মাসে খরচ হয় ৪০-৫০ হাজার টাকা।
কৃষক সাইকুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় বেড়াতে গিয়ে ‘লন কার্পেট’ ঘাস দেখি। পরে চাষ করার কথা চিন্তা করি। চাষের পদ্ধতি খোঁজ খবর নেই। বাড়ি ফিরে ভালো মানের জমি ভাড়া নেই। পরে বীজ সংগ্রহ করে ৮ শতাংশ জমির ওপর পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করি। বর্তমানে ৭০ শতাংশ জমির ওপর এই ঘাসের চাষবাদ চলছে। ইতোমধ্যে, ঢাকা ও খুলনায় এ ঘাস বিক্রি বেশি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রথম দিকে প্রতিবেশীরা আমাকে পাগল বলেছে। কিন্তু আমি থেমে যায়নি। বর্তমানে আমার এখানে স্থানীয় ১৫-১৬ জন যুবক কাজ করছে। এতে যুবকদের বেকারত্বও দূর হয়েছে। আর নিজেও স্বাবলম্বী হচ্ছি। এই ‘লন কার্পেট’ ঘাস দূর-দূরান্ত থেকে সৌখিন মানুষ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এই ঘাস প্রতি স্কয়ার ফিট ৮০ টাকায় বিক্রি করছি। প্রতি বছর শ্রমিক ও পরিচর্যা খরচ বাদ দিয়ে আমার আয় থাকে প্রায় ৬ লাখ টাকা।
কলমাকান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, এই প্রথম ‘লন কার্পেট’ ঘাস চাষ হয়েছে উপজেলায়। কৃষক সাইকুল ইসলামের মতো কেউ এই ঘাস চাষ করতে চান তাহলে আমরা সহযোগী করব। এই ঘাস সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য সৌখিন মানুষ কিনে থাকে। আর কম খরচে বেশি লাভ পাওয়া যায়।
আপনার মতামত লিখুন :