ঢাকা রবিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী সমাজ প্রতিষ্ঠার রূপকার ছিলেন লালন সাঁই

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২৪, ০৩:২৪ পিএম

বৈষম্যবিরোধী সমাজ প্রতিষ্ঠার রূপকার ছিলেন লালন সাঁই

ছবি : রূপালী বাংলাদেশ

১৩৪ বছর আগে মরমি সাধক ফকির লালন সাঁই তৎকালিন জোদ্দার জমিদারদের বিরুদ্ধে গরীবদের উপর যে জুলুম অত্যার করে সমাজে বৈষম্য সৃষ্টি করেছিল তার তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন। তৎকালীন তাঁর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন প্রাসঙ্গিক এবং সর্বজন গ্রহণযোগ্য ছিল। ঠিক তেমনি আজকের স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারকে পতন ঘটাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনও তেমনি প্রাসঙ্গিক এবং গুরুত্বপূর্ণ।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাতে বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের ছেঁউড়িয়ার আখড়া বাড়ীতে লালন একাডেমির আয়োজনে বাউল সম্রাটের ১৩৪তম তিরোধান দিবসের তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অন্তর্বর্তীকালিন সরকারের মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, তরুন ছাত্র-জনতার প্রতি আমার এবং সরকারের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আন্দোলনে শহীদ পরিবার এবং আহতদের পরিবারের সকল দায়িত্ব সরকার বহন করতে বদ্ধপরিকর।

মরমি সাধক ফকির লালন সাঁইজি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী সমাজ প্রতিষ্ঠার রূপকার ছিলেন লালন সাঁই। সবকিছুর উর্ধে মানুষ ও মানবতা। জাত-পাতের কোন মূল্য নেই, মূল্য শুধু মানবতার। তাই সবার আগে নিজেদের মধ্যে হানাহানি বাদ দিয়ে সাম্প্রদায়িকতার উর্ধে থেকে মানুষের কল্যাণে নিবেদিত হতে হবে।

তিনি আরো বলেন, বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের কোন ধর্ম ও জাত ছিল না। লালনের একটি মাত্র পরিচয় ছিল সেটি হচ্ছে মানবতা। তিনিই একমাত্র বাউল সাধক যিনি সকল ধর্মের সীমাবদ্ধতাকে ছাড়িয়ে সদা সত্য পথে চলতে মানুষকে মানবতাবাদীর পথে ডাক দিয়ে ছিলেন। তাই আমাদের লালন সাঁইয়ের আর্দশ হোক আধুনিক সমাজ গড়ার পথ ও পাথেয়।

ফরিদা আখতার বলেন, রাষ্ট্র কিংবা সমাজের বৈষম্য নয়, সবার আগে নিজের মধ্যকার বৈষম্য দূর করতে হবে। তবেই তো একটি সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠা হবে। দেশের উন্নয়নের অগ্রে নারী সমাজের অবদান রয়েছে অপরিসীম। তাদের প্রতি তাদের কাজের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। লালন সাঁইজি অহিংস মানবতার ব্রত নিয়ে মানুষের কল্যাণে অসংখ্য গান সৃষ্টি করে গেছেন। তাঁর এই অমর সৃষ্টি সঙ্গীত কোন ধর্মের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মোছা. শারমিন আখতারের সভাপতিত্বে গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ রুহুল আমিন, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালি) আসনের সাবেক এমপি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী প্রমুখ।

আরবি/ এইচএম

Link copied!