বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২৪, ০৬:১১ পিএম

উল্লাপাড়ায় ৫ পুকুর লিজের ৮৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২৪, ০৬:১১ পিএম

উল্লাপাড়ায় ৫ পুকুর লিজের ৮৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার আলিয়ারপুর গ্রামে ৫টি পুকুরের লিজ ও গাছ বিক্রির অর্থ থেকে ৮৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। গ্রাম পরিচালনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা গেল ১৫ বছরে এই টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে প্রতিপক্ষগনের অভিযোগ। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন, আলিয়ারপুর গ্রাম পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ ওমর ফারুক মাস্টার, সদস্য আবু বক্কার, আব্দুর রউফ মন্ডল, মোক্তার হোসেন, সেরাজ হোসেন, জমশের আলী ও রাকিব হোসেন। এই অপকর্মের প্রতিবাদে গ্রামের সাধারন লোকজন ইতোমধ্যে মানববন্ধনও করেছেন। অভিযোগ দিয়েছেন উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে।

আলিয়াপুর গ্রামের সাধারন লোকজন জানান, এই গ্রামে মোট ৫টি পুকুর রয়েছে। পুকুরগুলো হলো-বড়দিঘী, মোল্লা পুকুর, হরিয়াগাড়া, গুপিন্দা ও বুড়িগাড়া পুকুর। এই পুকুরগুলোর মালিকানা রয়েছে আলিয়াপুর মধ্যপাড়া জামে মসজিদ, আলিয়ারপুর দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদ এবং আলিয়ারপুর উত্তর ও মধ্যপাড়া জামে মসজিদের নামে। মোট পুকুরের জমির পরিমান ৫৬ বিঘা। এসব পুকুর লিজ দিয়ে যে অর্থ আদায় হয় তা দিয়ে ৩ টি মসজিদের পরিচালনা ও উন্নয়ন এবং গ্রামের আলিয়াপুর দারুল উলুম কওমিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার সকল ব্যয় নির্বাহ করা হয়। এজন্য গ্রাম পরিচালনা পরিষদ নামের একটি পরিষদ রয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই পরিচালনা পরিষদ কয়েকদফায় উল্লিখিত পুকুরগুলো লিজ দিয়ে মোট ১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা আয় করে। একই সঙ্গে পুকুরের পাড়ও লিজ দেওয়া হয়।

উল্লিখিত, বড়দিঘী পুকুরের পাড়ের প্রায় ১ হাজার গাছ, পুকুর ও কবরস্থানের স্থায়ী বাউন্ডারি দেওয়ার কথা বলে বিক্রি করে দেয় গ্রাম পরিচালনা পরিষদ। কিন্তু এসব পুকুর ও পুকুরের পাড় লিজ দিয়ে বা গাছ বিক্রির অর্থ যথাযথভাবে ব্যয় করেনি বলে অভিযোগ গ্রামের সাধারন মানুষের।

গ্রামবাসীর পক্ষে শফিকুল ইসলাম মন্ডল, মামুনুর রশিদ, মো. নেজাব উদ্দিন, মিলন আকন্দ, বাবুল সরকারসহ বেশ কিছু বাসিন্দা গত ২৭ অক্টোবর গ্রাম পরিচালনা পরিষদের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পুকুরের টাকা আত্মসাৎ করার বিষয়ে একটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন। একই অভিযোগ দেওয়া হয়েছে উল্লাপাড়া মডেল থানাতেও।

শফিকুল ইসলাম মন্ডল ও মামুনুর রশিদ অভিযোগ করেন, গ্রাম পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা অধিকাংশই আওয়ামী লীগ দলীয়। দীর্ঘদিন ধরে তারা দলীয় প্রভাব খাটিয়ে এবং লিজ প্রদানের রীতি না মেনে তাদের খুশিমতো পুকুরগুলো লিজ দিয়ে তাদের ইচ্ছেমতো মসজিদগুলো ও মাদ্রাসা পরিচালনা করেছেন। তাদের কাছে হিসেব চাইলে তারা কখনই হিসাব দিতে চাইতেন না। বরং হিসাব চাওয়ায় এসব ব্যক্তিরা গ্রামের লোকজনকে হুমকি দিতেন। বড়দিঘী পাড়ের গাছ কেটে বিক্রি করার পর গ্রামের লোকজন হিসেব চাইলে তারা হিসাব না দিয়ে উপরোন্তু গ্রামের একটি মসজিদ নিজেরা ভেঙ্গে দিয়ে গ্রামের সাধারন মানুষের বিরুদ্ধে (৫০ জন) উল্লাপাড়া
মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। গত ২০০৯ সাল থেকে অদ্যাবধী গ্রামের উল্লিখিত পুকুর, পুকুরের পাড় লিজ ও গাছ বিক্রি করে এই পরিচালনা কমিটি মোট ১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা আয় করেন। কিন্তু ৫ আগষ্ট সরকার পরিবর্তনের পর গ্রামের লোকজনের ব্যাপক চাপের মুখে তারা মোট ৯৮ লাখ টাকা ব্যয় করেছে বলে একটি হিসেব দেখায়। এ অবস্থায় গ্রামবাসীর এখন পরিচালনা পরিষদের কাছে পাওনা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮৮ লাখ টাকা। এই টাকাটি তারা আত্মসাৎ করে বসে আছেন। গ্রামের লোকজন অবিলম্বে এই টাকা ফিরিয়ে দেওয়া এবং সংশ্লিষ্ট দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন।

এদিকে, উক্ত গ্রাম পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ ওমর ফারুক মাস্টারের সঙ্গে গ্রামবাসীর অভিযোগের ব্যাপারে কথা বললে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, গ্রামবাসীর আনীত তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য নয়। বরং তিনি এক সময়ে ওই পুকুরগুলো সংশ্লিষ্ট মালিকদের নিকট থেকে মসজিদের নামে কেনার ব্যবস্থা করেছিলেন। এসময় গ্রামের লোকজন সবাই সহযোগিতা দিয়েছে। কিন্তু এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতে আমাদের দুর্বলতার সুযোগে গ্রামের লোকজন অর্থ আত্মাসাতের ঢালাও অভিযোগ এনেছেন। এটা একেবারেই মিথ্যা।

এ ব্যাপারে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মাদ হাসনাত এর সঙ্গে কথা বললে তিনি আলিয়ারপুর গ্রামবাসীর অভিযোগপত্র পেয়েছেন বলেন জানান। তিনি বলেন, দ্রুত এ ব্যাপারে তদন্ত করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অনুরুপ কথা বললেন উল্লাপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান।

আরবি/জেডআর

Link copied!