মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের সিংগাইরে সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীর স্বর্ণ ও সৌদিয়ান রিয়েলসহ আনুমানিক বিশ লক্ষ টাকার মালামাল আত্মসাৎ এর পর ছিনতাইয়ের নাটক সাজানোর অভিযোগ উঠেছে রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী হাসিনা আক্তার সিংগাইর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী হাসিনা আক্তারের স্বামী জিয়াউর রহমান দীর্ঘদিন যাবৎ সৌদি আরবে চাকরি করে। সরকারি নিয়মানুযায়ী কর-ট্যাক্স দিয়ে নিজ গ্রামের আত্মীয় আরেক প্রবাসী রুবেলের মাধ্যমে গত ২৬ আগস্ট ২০২৩ তারিখে দশ ভড়ি ওজনের ১টি স্বর্ণের বার এবং ৯৫ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালংকার দেশে পাঠায়। কিন্তু রুবেল দেশে আসার পর স্বর্ণালংকার প্রবাসীর স্ত্রীর কাছে না বুঝিয়ে দিয়ে তা পরিকল্পিতভাবে আত্মসাৎ করে। এ ঘটনাটি অন্য দিকে মোড় দিতে ছিনতাইয়ের মিথ্যা নাটক সাজায়।
প্রবাসী জিয়াউর রহমানের কাছ থেকে স্বর্ণালংকারের সাথে ধার বাবদ ৫,০০০/- (পাঁচ হাজার) সৌদি রিয়াল যার বাংলা টাকায় ১,৫০,০০০/- (এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা প্রবাসী রুবেলের ছেলের চিকিৎসার কথা বলে নিয়ে ছুটিতে দেশে আসে। পরবর্তীতে রুবেল আর বিদেশে ফেরত যায়নি। ভুক্তভোগী হাসিনা আক্তার মালামাল ফেরত চাইলে বিভিন্ন তালবাহানা করতে থাকে। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে চাইলে রুবেলসহ আরো কয়েকজন ব্যাক্তি গত ১০ আগস্ট ২০২৪ তারিখে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসীমূলক হুমকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে।
জিয়াউর রহমানের মামাতো ভাই শরিফ হোসেন বলেন, জিয়া আমার ফুপাতো ভাই। বাড়িতে তেমন কোন পুরুষ মানুষ না থাকায় এয়ারপোর্ট থেকে মালমাল রিসিভ করতে আমি যাই। আমাকে একটা মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়েছিলো
এয়ারপোর্টে গিয়ে সেই নাম্বারে ফোন দেই কিন্তু সে রিসিভ করেনি। সকাল ৯ টায় নামার কথা কিন্তু দুপুর ১২ টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে বাসায় চলে আসি। পরবর্তীতে রুবেলের স্ত্রী ও শশুর-শাশুড়ির সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলে, সে কোথায় আছে আমরা জানিনা। রুবেলের স্ত্রী সুপ্তার সাথে ঢাকা পুলিশ সুপারের সাথে সুসম্পর্ক থাকার সুবাদে সাভার বা সিংগাইর থানায় আমাদের কোন অভিযোগ গ্রহণ করেনি।
সৌদি প্রবাসী জিয়াউর রহমানের স্ত্রী হাসিনা আক্তার বলেন, আওয়ামী লীগের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আমার স্বামীর পাঠানো একটি স্বর্ণের বার ও ৯৬ গ্রাম স্বর্ণালংকার এবং পাঁচ হাজার রিয়েল সৌদিয়ান মুদ্রা অর্থাৎ বাংলাদেশী দেড় লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে রুবেল। পরবর্তীতে মালামাল ছিনতাইয়ের নাটক সাজায় রুবেল। পরবর্তীতে কারো কাছে বিচার পাইনি কারণ তারা আওয়ামী লীগের ক্ষমতার দাপট দেখায়, যার কারনে পুলিশও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ।
মো. খলিলুর রহমানসহ একাধিক এলাকাবাসী জানায়, উনারা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছেও গিয়েছিলো কিন্তু কোন বিচার পাননি । উনাদের স্বর্ণ উনারা ফেরত পাননি, ডাকাতি হয়ে গেছে বলে নানান অজুহাত দেয়।
স্বর্ণ আত্মসাৎ এর ব্যাপারে জানতে রুবেলের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করার চেষ্টা করা হলেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে সিংগাইর থানার অফিসার ইনচার্জ জিয়ারুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :