সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মানিকগঞ্জে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে ৩ কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০২৪, ০৮:১৫ পিএম

মানিকগঞ্জে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে ৩ কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যারয়ের শামসুন্নাহার হলের সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী রেহেনা আকতারের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জে বহুল আলোচিত “খেজুর গাছ প্রকল্প” হতে দূর্নীতি করে প্রায় ৩ কোটি টাকা লোপাটসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের চেয়ে দলীয় কর্মকাণ্ডে বেশি তৎপরতা, বিরোধী দলীয় বা মতের মানুষদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার পাশাপাশি বালু মহাল, বিভিন্ন হাট-ঘাট ইজারা, লঞ্চ-বাস-ট্রাক সহ বিভিন্ন পরিবহন সংগঠন, ইটভাটা, জলমহাল, চাকুরির নিয়োগ বাণিজ্য, বিভিন্ন ক্রয় কমিটির কমিশন খাওয়া,সাবেব স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপনের সকল অপকর্মের সহযোগীতা, নির্দ্দিষ্ট কয়েকটা আওয়ামী দালাল মিডিয়ার পৃষ্ঠপোষকতা সহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ থেকে উঠে আসা এই ডিসির বিরুদ্ধে।

২৭তম বিসিএস-এর এই কর্মকর্তা গত,২০২৩ সালের ২৪শে জুলাই মানিকগঞ্জে জেলা প্রশাসক হিসাবে যোগদান করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামসুন্নাহার হলের ছাত্রলীগের হল শাখার সহ-সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন বলেও জানা যায়।

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সরকারি প্রকল্প এসেনসিয়াল ড্রাগস্ কোম্পানী নিমিটেড এর কারখানা স্থাপনের জন্যে জমি ক্রয় সংক্রান্ত শত কোটি টাকার দূর্নীতির গোপন রহস্য ফাঁস ও মন্ত্রীর সম্ভাব্য দূর্নীতি ঠেকানোর দায়ে সেই সময়ের মানিকগঞ্জে সুনামধন্য জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফকে সরিয়ে মানিকগঞ্জে ডিসি করা হয় রেহেনা আকতারকে।

রেহেনা আকতার মানিকগঞ্জে বিখ্যাত হাজারী গুড় উৎপাদন বৃদ্ধি ও এই ঐতিহ্যবাহী পণ্যটিকে ব্যাপকভাবে প্রচার করার জন্যে জেলার বিভিন্ন স্থানে খেজুর গাছের চারা রোপন, রক্ষণাবেক্ষণ, সভা-সেমিনার, প্রদর্শনী করে বেশ সাড়া ফেলে দেন।

জেলাবাসী তার এই উদ্যোগকে প্রথমে অভিনন্দনও জানান। চলতি বছরের ২রা ফেব্রুয়ারী জেলর হাজারী গুড় উৎপাদনকারী এলাকা হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকার হাজারী গ্রামে হাজারী পল্লী নাম দিয়ে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে অনুষ্ঠান করে গুড় চাষীদের বিভিন্ন ধরনের সহযোগীতার ঘোষণা দেন তিনি।সেই অনুষ্ঠানে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার ঘোষণা করেন করেন, কোন গাছী কতগুলো গাছ থেকে গুড় উৎপাদন করেন সেই মোতাবেক তাদের কম সুদে ঋণ দেয়া হবে। এলাকায় সুপেয় পানির জন্যে পাম্প স্থাপন করা হবে। সেই সময় দরিদ্র গাছীরা অনেক খরচ করে তাদের মেহমানদারী করান।তাদের কাজের অনেক ক্ষতি করে ডিসিকে সময় দেন।

এর পরবর্তীতে গত ৮ই ফেব্রুয়ারী মানিকগঞ্জ বিজয় মেলার মাঠে ধুমধাম করে হাজারী গুড় প্রদর্শনী ও মেলার আয়োজন করে সকল গাছীকে ডেকে আনা হয় সেখানে। তাদের দেখানো হয় বড় বড় স্বপ্ন। প্রধান অতিথি সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আর সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম।

এসব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ডিসি ঘোষণা করেন, জেলায় নতুন করে ৫ লক্ষ খেজুর চারা লাগানো হবে। পরে এটাকে বৃদ্ধি করে বলা হয় ৭ লক্ষ চারা লাগানো হবে।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চারা রোপণ, রক্ষনাবেক্ষণ ও এ সংক্রান্ত কাজের জন্য এলআর ফান্ডের (লোকাল রিসোর্স ফান্ড ) নামে ব্যাপক চাঁদাবাজি করা হয়েছে। 

এসব বিষয়ের সাথে সরাসরি জড়িত আরেকজন (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, পুরো জেলায় নতুন করে লাগনো ৫ হাজার খেজুর গাছের চারাও বেঁচে নেই। এটা শুধুই ডিসির প্রমোশন আর টাকা আয়ের একটা মতলব। জেলার বিভিন্ন খাত থেকে টাকা নেয়া হয়েছে এই উদ্যোগের কথা বলে। বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি, বালুমহাল, বিভিন্ন পরিবহন সেক্টর, ইউনিয়ন ভূমি অফিস, উপজেলা ভূমি অফিসসহ বিভিন্ন জায়গায় হয়েছে খেজুর প্রকল্পের নামে চাঁদাবাজি। 

একেতো আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ে তার হাত রয়েছে, অপর দিকে নিজেই ছাত্রলীগ নেত্রী ছিলেন।

এইসব ভয়ে কেউ জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে পারেনি। তাছাড়া তিনি সরকারী বিভিন্ন কর্মকর্তাদের দিয়েই এলআর ফান্ডের নামে ব্যাপক দূর্নীতি করেছেন বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা। 

হাজারী গুড় উৎপাদন সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান শামীম হাজারী বলেন, আমাদের কোন গাছীকেই কোন ঋণ দেয়া হয়নি এবং পাানির পাম্পও দেয়া হয়নি।

প্রতিটি খেজুর গাছের চারা রোপনে কত টাকা খরচ হয়েছে? এ টাকাগুলো কিভাবে সংগ্রহ করা হয়েছে? ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কথা বলতে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে বেলা ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। বার বার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তারিকুল ইসলাম বলেন, অফিসে এসে স্যারের সাথে কথা বলেন। তাকে প্রতিবেদক অনুরোধ করে যেনো ডিসি ফোন ধরেন। কিন্তু অনেক ফোন করলেও জেলা প্রশাসক ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ দিলেও ডিসি কোন উত্তর দেননি। তবে রাত ৮টা ৩৯ মিনিটে ডিসি ফোন করে তার বিরুদ্ধে উখাপিত অভিযোগ অস্বীকার করেন। এ সময় তাকে প্রশ্ন করা হয় আপনি কি ঢাবির সামসুন্নাহার হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন কি’না? তিনি উত্তর না দিয়ে বলেন, আমার একটাই পরিচয় আমি মানিকগঞ্জের ডিসি। এ সময় তিনি বলেন, সব চারা লাগানো হয়নি। এটা একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। আর এই চারাগুলো লাগিয়েছেন বিভিন্ন এনজিও, স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা। এ সময় খেজুর গাছের চারা রোপণের নামে চাঁদাবাজির বিষয়টিও অস্বীকার করেন তিনি।

 

আরবি/জেডআর

Link copied!