সুপারি বাগানে বাণিজ্যিকভাবে বস্তায় আদা চাষ করে সফল লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার নারী উদ্যোক্তা ময়না বেগম। তাকে দেখে এখন এলাকার অনেকে এ পদ্ধতিতে আদা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
জানা যায়, আদা একটি লাভজনক চাষাবাদ। সঠিক পরিকল্পনায় এটি চাষাবাদ করলে খরচের তুলনায় দুই থেকে তিন গুণ লাভ হওয়ার আশা থাকে। পাশাপাশি ছায়াযুক্ত জমি বা যে জমিতে অন্য কোনো ফসল হয় না, সেই জমিতেও আদা চাষ করা সম্ভব। বস্তায় মাটি ভরে আদা চাষ কৃষকের কাছে একটি নতুন ধারণা। এভাবে আদা চাষে উদ্বুদ্ধ করছেন কৃষি বিভাগ। এ পদ্ধতিতে আদা চাষ করলে দেশের বাজারে যেমন চাহিদা মিটবে, ঠিক তেমন লাভবান হবেন কৃষকরা।
ময়না বেগম লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার গোতামারী ভারত-বাংলাদেশ বিনিময়কৃত সিটমহল এলাকার আজম আলীর স্ত্রী।
তিনি জানান, আমার বাগানে অনেক ফাঁকা জায়গা আছে, এগুলো অব্যবহৃতই থাকে। এই ফাঁকা জায়গা ব্যবহারের চিন্তা থেকে অবসর সময়ে বাড়ির পাশে সুপারি বাগানে বাড়তি কোনো ফসল ফলানো যায় কিনা তা নিয়ে ভাবতে থাকি। এক পর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিই। পরে সুপারি গাছের ফাঁকে ফাঁকে ৩০ শতক জমিতে বস্তায় আদা চাষ শুরু করি। ৫০ হাজার টাকা খরচের বিপরীতে আদা চাষে প্রায় তিন লাখ টাকা আয়ের আশা করছি।
তিনি আরো বলেন, আমি প্রথম এই পদ্ধতিতে আদা চাষ শুরু করেছি। আদা চাষে পরিমাণ মতো জৈব ও রাসায়নিক সার এবং দানাদার খাদ্যের প্রয়োজন হয়। এগুলো বেলে দো-আঁশ মাটির সঙ্গে মিশিয়ে বস্তায় ভরতে হয়। প্রত্যক বস্তায় তিনটি করে আদার গাছ আছে। সুপারি গাছের ফাঁকে ফাঁকে সারিবদ্ধভাবে এক হাজার ৮০০ বস্তা রাখা হয়েছে। সাধারণভাবে আদা চাষের চেয়ে এই পদ্ধতিতে ফলন বেশি হয়।
এই পদ্ধতিতে লাভবান হতে পারব। এ অঞ্চলে প্রত্যেক কৃষকের সুপারি বাগান আছে। আমি সফল হলে অন্য নারীদেরকে উদ্বুদ্ধ করবো। ইত্যেমধ্যে আমি ৩৫ হাজার টাতার আদা বিক্রি করেছি। এখনও তিন লাখ টাকার আদা বিক্রি করতে পারবো বলে আমি আশাবাদী।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন মিয়া বলেন, অনেকেই এখন বাণিজ্যিকভাবে আদা চাষ করছে। আশা করি, ময়না বেগম সুপারি বাগানে বস্তায় আদা চাষ সফল ও লাভবান হবেন। তখন এলাকার অনেকে এ পদ্ধতিতে আদা চাষে আগ্রহী হবেন।
আপনার মতামত লিখুন :