ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

দুর্নীতি আর লুটপাটের দায়ে ডোমার পৌরসভা থেকে মেয়র অপসারণ

নীলফামারী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২৪, ০৭:২৭ পিএম

দুর্নীতি আর লুটপাটের দায়ে ডোমার পৌরসভা থেকে মেয়র  অপসারণ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

নীলফামারী: দুর্নীতি আর লুটপাটে নিমজ্জিত ডোমার পৌরসভার মেয়র মনছুরুল ইসলাম দানুকে অপসারন করা হয়েছে। এ খবরে এলাকায় নেমে আসে স্বস্তি। তার অপসারনের পর একে একে বেরিয়ে আসছে তার আমলের নানা অনিয়ম আর দূর্নীতির খবর। প্রশ্ন উঠেছে ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের এডিবি’র বরাদ্দের টাকা নিয়ে। সোমবার ডোমার পৌরসভার মেয়র মনছুরুল ইসলাম দানুকে অপসারন করে পৌর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ডোমার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল ফেরদৌস হ্যাপি। রোববার (১৮ আগস্ট) উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্বাচিত ৩২৩টি পৌরসভার মেয়রকে অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্থানীয় সরকার। 

এতে বলা হয়, স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৪ এর ধারা ৩২(ক) প্রয়োগ করে বাংলাদেশের পৌরসভার মেয়রগণকে স্ব স্ব পদ হতে অপসারণ করা হয়। ডোমার পৌরসভার মেয়রকে অপসারণের এ ঘোষনার পর থেকে পৌরসভার দুর্নীতি এবং লুটপাটের চিত্র জনসম্মুখে প্রকাশ হতে শুরু করেছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গত ১৩ বছর ধরে তিনি মেয়র হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। ১৩বছর ধরে তার ভয়ে দুর্নীতি এবং লুটপাটের কথা বলতে কেউ সাহস পায়নি। যারাই তার বিরুদ্ধাচারণ করতো তাকেই তিনি পুলিশ দিয়ে এবং বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করেন বলে অভিযোগে প্রকাশ। বরাবরেই তিনি টাকা দিয়ে ভোট কিনে এমনকি টাকা দিয়ে নির্বাচনী ফলাফলও উল্টে দিয়ে নির্বাচিত হতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সর্বশেষ ২০২১ সালে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে পৌরসভার কাউন্সিলরদের মাঝে বৈষম্য তৈরী করে প্রভাবশালী দুই কমিশনার যথাক্রমে প্যানেল মেয়র সেলিম রেজা এবং কাউন্সিলর আখতারুজ্জামান সুমনকে সাথে নিয়ে তিনি ডোমার পৌরসভাকে দুর্নীতি এবং লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিনত করেছেন। কাউন্সিলর আখতারুজ্জামান সুমন এর নানা অনিয়মের কারনে ইতিমধ্যে এলাকাবাসী ঝাড়ু মিছিল করছেন। অন্যান্য কাউন্সিলরদের সাথে বৈরী আচরনের কারনে গত ৩ বছরে অনেক কাউন্সিলর পৌরসভায় যেতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি তার ইচ্ছে মতো প্রকল্প দাখিল এবং বাস্তবায়ন করেন। কাউকে তিনি পাত্তা দিতেন না। এমনকি ভালো রাস্তা একাধিকবার ভেঙ্গে সেখানে বার বার বরাদ্দ দিয়ে টাকা লুটপাট করা হয়েছে। তার বৈষম্য মুলক কর্মকাণ্ডের মধ্যে ডোমার বাজারের বাটার মোড় হতে চিকনমাটি মোড় পর্যন্ত একই রাস্তায় ৫বারের বেশি বরাদ্দ দিয়ে ব্যাপক লুটপাট করা হয়েছে। অপর দিকে ১, ২, ৫, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের রাস্তাগুলো চলাচলে অযোগ্য হলেও দীর্ঘদিনেও তা মেরামত করেনি। এমনকি চলাচলের অযোগ্য ওই রাস্তাগুলো সংস্কারের জন্য কোন বরাদ্দ দেয়া হয়নি। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে সাধারণ জনগন। 

এবিষয়ে পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিজানুর রহমান তুলু সাংবাদিকদের জানান, আমরা বৈষম্যের শিকার। ২ জন কাউন্সিলর ও মেয়র তাদের ইচ্ছে মতো কাজ করে আর টাকা মারে। 

৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাওছার আলম সাংবাদিকদের জানান, আমার ওয়ার্ড থেকে মেয়র সাহেব কম ভোট পান। তাই আমার ওয়ার্ডের দুরব। বহুবার বলার পরও আমার ওয়ার্ডে কোন কাজ হয়নি। পৌরসভার মেয়র অপসারণের খবরে সাধারণ মানুষজন উল্লাস প্রকাশ করেছে। সেইসাথে দুর্নীতিবাজদের শাস্তি ও আগামীতে একটি দুর্নীতি মুক্ত পৌরসভা গড়ে তোলার দাবি জানান বর্তমান পৌর প্রশাসকের কাছে।

আরবি/জেডআর

Link copied!