মেহেরপুর: মেহেরপুর পৌরসভার পানি সরবরাহ শাখার পাম্প চালক হাফিজুল হক এখন কোটিপতি। ২৬ হাজার ৫শ ৯০ টাকা বেতনে চাকরি করেন। তবে পৌর সভার বেতন বন্ধ রয়েছে মাসের পর মাস। এরপরও তিনি গত তিন বছরে নিজের স্ত্রী ও ছেলের নামে শহরের বিভিন্ন স্থানে কিনেছেন কয়েক কোটি টাকা মূল্যের জমি । এসব জমির দলিল মুলে মালিক হাফিজুল, তার স্ত্রী মার্জিয়া খাতুন ও ছেলে মাসুদ হাসানের নামে থাকলেও হাফিজুলের দাবি ষড়যন্ত্র মূলকভাবে একটি পক্ষ তাকে ফাঁসাতে চায়, এ জমির মালিক সে না।

অনুসন্ধারেন জানা যায়, পাম্প চালক হাফিজুল হক নিজের নামে মেহেরপুর সরকারি কলেজের অদুরে সাড়ে চার কাঠা, শহরের প্রাণ কেন্দ্রে জিনিয়াস স্কুল সংলগ্ন তিন তলা বাড়িসহ ২ কাঠা জমি, মল্লিকপাড়া রমেশ ক্লিনিকের পাশে সাড়ে তিন কাঠা জমি, এসপি আফিসের সামনে ৫ কাঠা জমি কিনেছেন। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা জেলার কুল পালায় ৩ কাঠা ও সাড়ে ৫ বিঘার উপরে জমি ক্রয় করেছেন। এছাড়া মেহেরপুর সদর উপজেলা পরিষদের পেছনে ২ কোটি ২১ লাখ টাকায় ৪ বিঘা ও মালোপাড়ায় ১ কোটি ৮৬ লক্ষ ৪০ হাজার টাকায় ২ বিঘা জমি ক্রয়ের জন্য বায়না করেছে। স্ত্রী মর্জিয়া খাতুনের নামে মেহেরপুর শহরের ফৌজদারি পাড়ায় দেড় কোটি টাকায় একতলা বাড়িসহ ৬ কাঠা জমি ক্রয় করেছেন। পুত্র মাসুদ হাসানের নামে মেহেরপুর এসপি অফিসের সামনে ৪ কঠা ও মালো পাড়ায় ৫ কঠা জমি ক্রয় করেছেন।
হাফিজুল হকের জমির দলিল থেকে জানা গিয়েছে , এ সকল জমি তিনি ২০২০ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ক্রয় করেছেন।
এলাকাবাসীর দাবি, শহরের প্রাণ কেন্দ্রে এ সকল জমির মূল্য প্রায় কয়েক কোটি টাকা। এছাড়া স্ত্রী মার্জিয়া দির্ঘদিন ধরে ক্যান্সাররোগে আক্রান্ত। স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য প্রতি মাসে নিতে হয় ভারতের ভেলরে। সেখানে চিকিৎসাবাবদ ব্যায় হয় লাখ লাখ টাকা। ছেলে পড়েন ঢাকার একটি বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সেখানেও ব্যায় রয়েছে লাখ টাকা। নিজে ব্যবহার করেন সাড়ে তিন লক্ষ টাকা মূল্যের এফজেড ইয়াহামা মটর সাইকেল। অভিযোগ রয়েছে ঠিক মতো অফিস না করার। পৌর পানি শাখার পাম্প চালানোর জন্য মাস চুক্তিতে নামে একজনকে নিয়োগ দিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে পৌর পানি শাখার কেউ মুখ খুলতে নারাজ। পৌরসভার একজন কর্মচারী হিসেবে কিভাবে এত সম্পদের মালিক হলেন, এ অর্থের উৎস কী? এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। সম্প্রতি জমি ক্রয় সংক্রান্ত বিবাদে তার বিরুদ্ধে মেহেরপুরের আদালতে নাদিম ইকবাল নামে একজন প্রতারণা মামলাও করেছেন।

এ ব্যাপারে পাম্প চালক হাফিজুল হক বলেন, ১৯৯১ সাল থেকে চাকরি করছি। প্রতি মাসে বেতন পায়না। ৬ মাস বা একবছর পর বেতন পায়। সেই টাকা জমিয়ে ২০০৩ সালে একটি জমি কিনি। সেটা ২০২১ সালে বিক্রি করে লাভ করি সেই টাকা দিয়ে জমি কিনছি। আর এক নামে এত জমি কেন সেটা আপনারা খোঁজ নেবেন কেন? খোঁজ নেবে সাবরেজিস্ট্রার। পাম্পে চাকরির বিষয়ে বলেন, এখানে লোক নিয়োগ দেবার আমি কেউ না।
আপনার মতামত লিখুন :