মিয়ানমারের মংডু শহর দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। ওপারে চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতির কারণে নাফ নদীতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নাফ নদী সীমান্ত অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেখানে কোন নৌকা, ট্রলার না যাওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে। এতে নৌকা চলাচল বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে টহল তৎপরতা জোরদার করেছে বিজিবি।
সোমবার ৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় পর থেকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় নাফ নদীতে টহল তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ ২ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর সৈয়দ ইশতিয়াক মুর্শেদ।
তিনি জানান, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে টেকনাফ ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ বিআরএম-৬ হতে বিআরএম-১০ পর্যন্ত নাফ নদীর ঝুকিপূর্ণ স্থান সমূহে এবং বাংলাদেশের জলসীমায় বিদ্যমান দ্বীপের আধিপত্য বিস্তারের জন্য নৌ টহল চলছে।
সীমান্তে নিছিদ্র নিরাপত্তায় বিজিবি দিন-রাত ২৪ ঘন্টা জলে ও স্থলে টহল পরিচালনা করা হচ্ছে ও সোচ্চার রয়েছে। এছাড়া সীমান্তের যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায়ও রয়েছে বলেও জানান তিনি।
গত কয়েকদিন ধরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপে একের পর এক বিস্ফোরণের শব্দে কাঁপে কক্সবাজারের টেকনাফের সীমান্ত এলাকা। বিস্ফোরণের বিকট শব্দে টেকনাফ পৌর, সদর, সাবরাং ও শাহপরীর দ্বীপ এলাকার বাসিন্দারা কাটিয়েছিল ঘুমহীন রাত।
এক বিবৃতিতে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি জানান, রাখাইন রাজ্যের মংডু শহর পুরোপুরি এখন তারা দখলে নিয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন জানিয়েছেন, আরাকান আর্মি টেকনাফ বর্ডারের ওপারে সেদেশের সীমান্ত পুরোপুরি দখলে নিয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে তাদের জলসীমানায় নাফ নদীতে সব নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তাই আমরাও টেকনাফের ফিশিং ট্রলার মালিকদের অবগত করেছি। নাফ নদী সীমান্ত অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেখানে কোন নৌকা, ট্রলার না যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল জোরদার রয়েছে।
মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চলছে। টেকনাফ সীমান্তঘেঁষা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বেশিরভাগ অঞ্চল এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। সেখানকার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে মরিয়া জান্তা বাহিনী একের পর এক বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে স্থলে তাদের হয়ে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে সামনাসামনি লড়াই করছে রোহিঙ্গাদের কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠি।
আপনার মতামত লিখুন :