বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


পিরোজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৪, ০৯:১৫ পিএম

মাল্টা চাষে লাখপতি ভান্ডারিয়ার মহসিন

পিরোজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৪, ০৯:১৫ পিএম

মাল্টা চাষে লাখপতি ভান্ডারিয়ার মহসিন

মহসিন হাওলাদার। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

সারিবদ্ধভাবে গাছে গাছে ঝুলছে মাল্টা। প্রতিটি গাছে এত বেশি মাল্টা ধরেছে যে, ফলের ভারে গাছের ডালগুলো মাটির দিকে নুয়ে পড়েছে। বুধবার
সকালে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় উপজেলা ভিটাবাড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ ভিটাবাড়ীয়া গ্রামে এমন চিত্রই চোখে পড়ে। এ এলাকায় মাল্টা চাষ করে সফল হয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন শিক্ষিত যুবক মহসিন হাওলাদার। তার বাগানে থাকা প্রত্যেক গাছেই ঝুলছে থোকায় থোকায় মাল্টা ফল। মহসিনের সফলতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এলাকার বেকার যুবকরাও ঝুঁকছেন মাল্টা বাগান গড়ে তোলার দিকে। চার বছরের ব্যবধানে এখন তিনি লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছেন। সে এখন স্বাবলম্বী। মাল্টাসহ বিভিন্ন কৃষি কাজ করে তিনি বর্তমানে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন।

মাল্টা চাষী মহসিন হাওলাদার জানান, বিএ পাস করে যখন চাকুরীর জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরে চাকুরী না পেয়ে হতাশ এবং করোনা চলাকালিন সময়ে সারা পৃথিবী যখন স্তব্ধ। মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছিল না তখন ঘরে বসে চিন্তা করে মন স্থির করেন, কৃষি কাজ করবেন তিনি। ছুটে যান উপজেলা কৃষি অফিসে। তারা তাকে পরামর্শ দেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট উদ্ভাবিত বারী মালটা-১ চাষ খুবই লাভজনক। তাদের পরামর্শ এবং
সহযোগিতায় ২০২১ সালে বাড়ীর কাছের রাস্তার পার্শে¦র প্রায় দেড় একর ফসলি জমি ভরাট করে দুই শতাধিক মালটা চারা, শতাধিক লেবু ও পেয়ারা গাছ এবং আমড়া গাছ, আম গাছ রোপণ করেন। মাল্টা বাগানের এক পাশ্বে তৈরী করেন নার্সারী। এক বছরের মধ্যেই মাল্টা, আম, লেবুসহ বিভিন্ন ফলদ চারা বিক্রি করে অর্থ উপার্জন শুরু করেন তিনি। তার বাগানে প্রথম ২ বছর মাল্টার ফলন কিছুটা কম হলেও এ বছর প্রচুর পরিমানে মাল্টা ধরেছে। প্রতিটি গাছে ১শ থেকে ২শ টি মাল্টা ধরেছে বলে তিনি জানান, কাগজী লেবুও ধরেছে প্রচুর। তিনি এ বছর সকল খরচ বাদে তার সবুজ বেষ্টনি থেকে কয়েক লাখ টাকা আয় করেছেন।

মহসিন আরো জানান, কৃষি অফিসের সহায়তায় তার ১ একর জমিতে ড্রিপ ইরিগেশন করে দেয়া হয়েছে। তিনি ইতোমধ্যে বেকারত্বকে বিদায় জানিয়েছেন। তিনি আর চাকুরী করবেন না বলে জানান। তার পরামর্শে এলাকার বহু শিক্ষিত বেকার যুবক এবং যুব মহিলাদের কৃষিকাজে এগিয়ে এসেছেন। এদিকে ভান্ডারিয়া উপজেলায় মাল্টার চাষ সম্প্রসারিত হচ্ছে। বেকারত্বকে ঘোচাতে এ চাষে এগিয়ে এসেছে এলাকার বহু বেকার যুবক। তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে বারী মালটা-১ জাতের সবুজ রঙের মাল্টা চাষ করে তারা স্বাবলম্বি হতে শুরু করেছেন অনেকেই। 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ ভিটাবাড়ীয়া গ্রামের মহসিন হাওলাদার , ইকড়ি গ্রামের জাকির, মাটিভাংগা গ্রামের আল-আমিন আকন, শিক্ষক আবুবকর ছিদ্দিক, দারুল হুদা গ্রামের বাবুলসহ উপজেলার শতাধিক কৃষক এবং শিক্ষত বেকর যুবক উপজেলার প্রায় ১৮ হেক্টর জমিতে মালটা চাষ করেছেন। এলাকার বেশ কিছু বেকার যুবক নিজস্ব জমিতে মালটা চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এবং পাশা
পাশি তাদের নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাচ্ছেন। উপজেলার ইকড়ি গ্রামের কৃষক জাকির এর বাগানে ৫ শতাধিক মাল্টা গাছ রয়েছে। তিনি পিরোজপুর জেলার মাল্টার চাহিদা মেটানোর পর ঢাকায় মাল্টা পাঠান। প্রতি বছরের ন্যায় এবছর ও তিনি কয়েক লক্ষ টাকার মাল্টা বিক্রি করবেন বলে প্রত্যাশা করেন । মাটিভাংগার আল-আমিন আকনের মাল্টা বাগানে প্রচুর পরিমানে মাল্টা ধরেছে। এলাকার বেকার যুবকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ তার বাগান পরিদর্শনে যান বলে তিনি জানান। তার মাল্টা বাগান দেখে এলকার বহু বেকার যুবক মাল্টা চাষে উদ্ধুদ্ধ হয়েছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. নজরুল ইসলাম জানান, প্রতিবছর ভান্ডারিয়া মালটা চাষ সম্প্রসারণ হচ্ছে মালটার উৎপদনও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন পর্যন্ত উপজেলার মোট ১৮ হেক্টর জমিতে ১৪ হাজারেরও বেশী মালটা গাছ লাগানো হয়েছে। লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় ভিটাবাড়ীয়ায় মহসিন হাওলাদার এর মাল্টা ও লেবু বাগানে ড্রিপ ইরিগেশন করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া চাষীদের কে বিনামূল্যে মাল্টাচারা, সার, স্প্রে মেশিন, বাডিং নাইফ বিতরণ করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর মালটা দ্বিগুন হয়েছে।

আরবি/জেডআর

Link copied!