ঘটি গরম বিক্রয় করে স্বাবলম্বী হয়েছেন কুষ্টিয়ার মিন্টু ইসলাম। পিতার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরতে ঘটি গরম পেশায় আসেন মিন্টু। সেই থেকে কুষ্টিয়ায় দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে ঘটি গরম বিক্রয় করে চলেছেন মিন্টু। ঘটি গরম চানাচুর বিক্রি করে নিজ সংসারের খরচ চালানোর পাশাপাশি ছেলেদের মানুষ করেছেন ৫৫ বছর বয়সী মিন্টু ইসলাম। তিনি কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ স্বরূপদহ গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। মিন্টু বিগত ৩০ বছর ধরে কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘটি গরম বিক্রয় করে চলেছেন। ঘটিগরম চানাচুর বিক্রেতা মিন্টু বলেন, বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি দিয়ে বিনোদন দিয়ে মানুষের মন আকৃষ্ট করে ঘটি গরম চানাচুর বিক্রয় করা হয়। প্রতিদিন কাঁধে করে টিনের ড্রামে করে ঘটি গরম বিক্রয় করা হয়। এর মধ্যে ঘটিতে করে জলন্ত কয়লা থাকে। ঘটি গরম চানাচুর বিক্রি করে সংসার চালান জানিয়ে তিনি বলেন, আমার বয়স ৫৫। স্ত্রী, সন্তানসহ সংসার চলে ঘটি গরম চানাচুর বিক্রি করে। ঘটি গরম চানাচুর ১০ টাকা থেকে শুরু করে ২০ টাকায় প্রতি জনে বিক্রয় করা হয়। তিনি আরও বলেন, চিড়া, চানাচুর, জিরা, হলুদ, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, বাদাম, জায়ফল, জয়ত্রীসহ বিভিন্ন ধরনের মসলা দিয়ে তৈরি করা হয় ঘটি গরম। দিন শেষে এগুলো বিক্রি হয় ২,০০০ থেকে ২,২০০ টাকা। খরচ বাদ দিয়ে লাভ থাকে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।
জানাগেছে, আগেকার দিনে নানা মুখরোচক খাবার তৈরী করার জন্য নানা উপায় অবলম্বন করা হত। সেরকমই চানাচুর এমনিতে মুখরোচক হলেও সেটিকে আরও মুখরোচক বানানোর জন্য ঘটির মধ্যে কয়লা পুড়িয়ে সেখান দিয়ে আগুন প্রস্তুত করা হত এবং সেই ঘটির চারপাশে রাখা থাকত চানাচুর। সেই থেকেই এই খাবারটির নাম হয়েছে ঘটি গরম। তবে এখনকার ঘটি গরমের সাথে কোনো মিল নেই আগেকার ঘটি গরমের।
ঘটি গরম খাওয়ারত কথা হয় সাংবাদিক এসএম জামালের সাথে। তিনি বলেন, মাঝে মধ্যেই দেখা হয় ঘটি গরম বিক্রেতার সাথে। ১০ টাকা-২০ টাকার কিনে খায়। ঘটি গরমের মধ্যে রসুনসহ বিভিন্ন মসলা রয়েছে। এ কারণে খেতেও যেমন সুস্বাদু, তেমন উপকারীর তালিকাতেও রাখা যায়।
তবে কালের বিবর্তনে আগর দিনের সেই ঘটি গরম হারিয়ে গেলেও, ঘটি গরম বিক্রয় করে স্বাবলম্বী মিন্টুর প্রায়ই দেখা মেলে শহরের অলিতে গলিতে। ঘটি গরমের সুনাম জেলার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ছড়িয়ে পড়বে এমনটিই প্রত্যাশা করেন এ বিক্রেতা মিন্টু।
আপনার মতামত লিখুন :