বগুড়া শহরের চারমাথা বাস টার্মিনাল এলাকার ধমকপাড়া থেকে নিখোঁজ হয় ৫ বছর বয়সী শিশু মাহাদী বাবু। একদিন পর প্রতিবেশী ভাড়াটিয়ার বাড়ি থেকে বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যায় জড়িত সন্দেহে তাহমিনা নামের এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার সকালে বগুড়া শহরের চারমাথা ধমকপাড়া মহল্লার রতনের বাড়ির ভাড়াটিয়ার ঘর থেকে শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়। আগের দিন বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে নিখোঁজ হয় মাহাদী বাবু। সে ধমকপাড়া এলাকার শফিকুল ইসলাম ও রুবি বেগম দম্পতির পুত্র। দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে মাহাদী সবার ছোট।
হত্যায় জড়িত সন্দেহে আটক তাহমিনা খাতুন শিবগঞ্জ উপজেলার জানগ্রাম এলাকার আনিস মন্ডলের স্ত্রী। তারা ধমকপাড়ার রতনের ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধের কোনো সুত্র পাওয়া যায়নি।
বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক এসএম মঈনুদ্দীন জানান, শিশুর লাশ উদ্ধারের সময় ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। মুক্তিপণের জন্যই অপহরণ করা হয়েছিল। শিশু মাহাদীকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের ধারণা। প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া নারীকে আটক করে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
স্থানীয় ও পরিবার সুত্রে জানা গেছে, শিশু মাহাদী প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার সকালে খাবার খেয়ে বাড়ি থেকে খেলতে বের হয়। দুপুরে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজ করে। এরপর মহল্লার বাসিন্দারাও খুঁজতে বের হয়। পুরো বগুড়া শহরসহ আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিলো না।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন ফকির বলেন, শুক্রবার ফজরের নামাজের পর অভিযুক্ত প্রতিবেশী তহমিনার বাড়ির পেছনের দরজা খোলার শব্দ পাই। কৌতুহলবশত আমার ঘরের জানালা খুলে তহমিনাকে রান্নাঘরের পাশে দেখতে পাই। তার পায়ের কাছে একটা বস্তা ছিল।
তিনি জানান, সন্দেহ হওয়ায় স্বপন ও তার ভাই ওই বাড়িতে যান। বস্তার মধ্য শিশু মাহাদীর পা দেখতে পেয়ে চিৎকার দিলে তহমিনা দৌড় দেয়। পালানোর সময় স্থানীয় লোকজন ধাওয়া দিয়ে তাকে আটক করে। এরপর তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
শিশু মাহাদীর বাবা শফিকুল ইসলাম জানান, তার পুত্র নিখোঁজর পর মাইকিং করা হয়। সব জায়গায় খুঁজেও সন্ধান না পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে বগুড়া সদর থানায় জিডি করেন। শুভাকাঙ্খী, আত্মীয় স্বজন ও সাংবাদিকরা নিজেদের ফেসবুকে নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি দেয়। মাহাদীর বস্তাবন্দি মরদেহ দেখে শোকে স্তব্ধ পরিবার। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে ফাঁসি চান শিশু মাহাদীর বাবা।
পুলিশ পরিদর্শক এসএম মঈনুদ্দীন বলেন, নিখোঁজের বিষয়ে থানায় জিডির পর সন্ধানে নামে পুলিশ। একদিন পর প্রতিবেশী ভাড়াটিয়ার বাড়িতে বস্তাবন্দি লাশসহ তহমিনাকে স্থানীয় বাসিন্দারা আটক করে। হত্যার নেপথ্যের কারণ উদঘাটনে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :