ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ১০১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

বগুড়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৪, ০২:২৭ পিএম

শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ১০১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বগুড়া শহরে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করে শিক্ষক সেলিম হোসেনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শিক্ষক হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মজিবর রহমান মজনু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপুসহ ১০১জন এবং অজ্ঞাতনামা ৩৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। 

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বগুড়া সদর থানায় নিহত শিক্ষকের বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ। মামলায় শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে আওয়ামী লীগের ২ জন সাবেক সংসদ সদস্য, ৫ জন উপজেলা চেয়ারম্যান, ২ জন মেয়র, বগুড়া পৌরসভার ৮ জন কাউন্সিলর, ১০ জন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ২৫ জনপ্রতিনিধি আছেন। 

এর আগে গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সরকার পতনের ১ দফা চলাকালে হামলায় নিহত শিক্ষক সেলিম হোসেন (৩৫) বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার পীরব ইউনিয়নের পালিকান্দা গ্রামের সেকেন্দার আলীর ছেলে। নিহত সেলিম হোসেন কাহালু উপজেলার মুরইল লাইট হাউজ স্কুলের সহকারি শিক্ষক ছিলেন। তিনি বগুড়া সদরের ইসলামপুর হরিগাড়িতে বসবাস করতেন। 

নিহত শিক্ষকের বাবা সেকেন্দার আলী মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সরকার পতনের ১ দফার প্রথম দিন ৪ আগস্ট বেলা তিনটার দিকে বগুড়া শহরের সাতমাথায় স্টেশন সড়কে আইএফআইসি ব্যাংকের সামনে আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সংসদ সদস্য মজনু-রিপুসহ সাত নেতার নেতৃত্বে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় তাঁরা ককটেল ও পেট্রোলবোমা হামলা চালান। হামলায় শিক্ষক সেলিম হোসেন রক্তাক্ত হন। বগুড়া পৌরসভার কাউন্সিলর আবদুল মতিন সরকার ও আমিনুল ইসলাম রামদা দিয়ে কুপিয়ে এবং কাউন্সিলর আরিফুর রহমান হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে তাঁকে জখম করেন। পরে অন্য হামলাকারীরা অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়। 

মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বগুড়া-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মজিবর রহমান মজনু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বগুড়া-৬ সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপু, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি টি জামান নিকেতা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহন, সাগর কুমার রায়, একেএম আসাদুর রহমান দুলু, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদৎ আলম, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হাসান, বগুড়া জেলা যুবলীগের সভাপতি শুভাশীষ পোদ্দার লিটন, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ডাবলু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান শাহীন, সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার রহমান শান্ত, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহা, সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক দুই সভাপতি আল রাজি জুয়েল ও নাঈমুর রাজ্জাক, সাবেক দুই সাধারণ সম্পাদক মাশরাফি হিরো ও অসীম কুমার রায়, শহর আওয়ায়ী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মান্নান আকন্দ, বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান, চেম্বারের সহসভাপতি ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাফুজুল ইসলাম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান।

মামলার আইনি সহায়তাকারী আইনজীবী ও বগুড়া জেলা বিএনপির সহসভাপতি আবদুল বাসেত বলেন, শিক্ষক সেলিম হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাননি। ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ায় শেখ হাসিনা এবং ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে তাঁকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই দুজনকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে আসামি করা হয়।

আরবি/ এইচএম

Link copied!