ঝিনাইদাহ: শিবির নেতা ইবনুল ইসলাম পারভেজ এবং ছাত্রদল কর্মী মিরাজুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় আলাদা দু’টি মামলা হয়েছে ঝিনাইদহ সদর থানায়। উক্ত মামলায় ঝিনাইদহের সাবেক পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন (চাকরিচ্যুত), সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখসহ ১১ পুলিশ কর্মকর্তা এবং সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুসহ ২৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন নিহতদের স্বজনেরা। আদালত মামলা দু’টিকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার জন্য থানাকে নির্দেশ দিয়েছে।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঝিনাইদহ শহরের কাঞ্চননগরের বাসিন্দা মিরাজুল ইসলাম ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৪ সালের ১৮ মার্চ বিকেলের দিকে পুলিশ পরিচয়ে কয়েকজন ব্যক্তি তাকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় অভিযুক্তরা তার পরিবারের কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদার টাকা দিতে না পারার কারণে তারা মিরাজুলকে গুম করে ফেলে। পরবর্তীতে চুয়াডাঙ্গা জেলার খাড়াগুদা মাঠে একটি অজ্ঞাত মরদেহ পড়ে থাকার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান নিহতদের স্বজনরা। এ সময় মিরাজুলের মরদেহটি দেখতে পান এবং তার শরীরে গুলির চিহ্ন দেখা যায়।
স্বজনদের অভিযোগ, পুলিশ কর্মকর্তারা টাকা না পেয়ে মিরাজুলকে গুলি করে হত্যা করেছে।
এ ঘটনায় তৎকালীন পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন (চাকুরিচ্যুত), এসআই শাহরিয়ার হাসান (বর্তমানে কর্মরত ইন্সেপেক্টর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানা), সাবেক উপ-পরিদর্শক আমিনুল এহসানসহ একাধিক পুলিশ সদস্যকে আসামি করে হত্যা মামলাটি দায়ের করেন নিহতের মা মোছাঃ বুলবুলি।
অন্য একটি মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালে ইবনুল ইসলাম পারভেজ শহরে ছাত্রশিবিরের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। অভিযুক্ত আসামিরা ঐ বছরের জুন মাসে পারভেজকে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে চোখ বেঁধে অপহরণ করে এবং তাকেও পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তাকে নানাভাবে নির্যাতন ও ক্রসফায়ারে দিয়ে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, আমরা থানায় জিডি করতে গেলেও অস্বীকৃতি জানায় অফিসাররা। ঠিক ১৭ দিন পর ঝিনাইদহে একটি গুলিবিদ্ধ মরদেহ পড়ে থাকার খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে আমরা পারভেজের মরদেহ শনাক্ত করি।
পুলিশের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতারাও এতে জড়িত ছিলেন।
এ ঘটনার সঙ্গে ঝিনাইদহের সাবেক পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন (চাকুরিচ্যুত), সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ, সাবেক সহকারী পুলিশ সুপার গোপিনাথ কানজিলাল, সাবেক ওসি হাসান হাফিজুর রহমান, এসআই কামরুল ইসলাম, আমিনুর রহমান, বোরহানুল ইসলাম, উজ্জল মৈত্র, মঞ্জুরুল ইসলাম, শাহরিয়ার হাসান, ডিএসবির সাবেক কনস্টেবল মুরাদ হোসেন, সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুসহ ২৪ জনকে আসামি করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নিহতের বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন।
আপনার মতামত লিখুন :