ঢাকা শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫
ডাক্তার, নার্স এবং হাসপাতালের মালিক পলাতক

শিবালয়ে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু

শিবালয় (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৫, ০৩:২৭ পিএম

শিবালয়ে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

মানিকগঞ্জের শিবালয়ে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভুল রিপোর্টে এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। মা গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ঘটনাটি বুধবার বিকেলে উপজেলার একটি বেসরকারি হাসপাতাল ‘ইছামতী জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার’-এ। নবজাতকের মৃত্যুর পর থেকে অস্ত্রোপচারের সময় থাকা চিকিৎসক ডা. সালমা, নার্স এবং হাসপাতালের মালিক মো. দাউদ পলাতক রয়েছেন।

পরিবারের অভিযোগ, সন্তান প্রসবের সময় হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের গাফিলতির কারণেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। নবজাতকের মৃত্যুর পর থেকে অস্ত্রোপচারের সময় থাকা চিকিৎসক ডা. সালমা, নার্স এবং হাসপাতালের মালিক মো. দাউদ পলাতক রয়েছেন।

প্রসূতির স্বামী মো. ফরিদুর রহমান জানান, “গত ১৩ জানুয়ারি সন্তান প্রসবের জন্য স্ত্রী সোনিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করান। নির্ধারিত তারিখে, ১৫ জানুয়ারি দুপুরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের সিদ্ধান্ত নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অস্ত্রোপচারের আগে আলট্রাসনোগ্রামে বাচ্চার ওজন ২ কেজি ৯০০ গ্রাম বলে জানানো হয়। জন্মের পর নবজাতকের ওজন ৫ কেজি ২০০ গ্রাম দেখা যায়। সন্তান জন্মের পর এক ঘণ্টার মধ্যেই নবজাতকের অবস্থার অবনতি ঘটে। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরবর্তীতে সাদা কাগজে আমাদের জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিয়ে মা ও নবজাতককে মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঢাকায় নেওয়ার পথে নবজাতকের মৃত্যু হয় এবং মা মারাত্মক রক্তক্ষরণের শিকার হয়ে বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।”

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, “সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া আমাদের ভুল হয়েছে। তবে রোগীর স্বজনরা জোর করে নিয়ে যেতে চেয়েছিল, এ কারণেই স্বাক্ষর নেওয়া হয়।”

শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের সঙ্গে অসদাচরণ করে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।

পরে উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর হামিদা ইয়াসমিন হাসপাতালে পরিদর্শন করে জানান, “হাসপাতালটি সরকারি নিয়মনীতি না মেনে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে আইসিইউ, এসি রুম, পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স নেই। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।” এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

উল্লেখ্য, চার মাস আগেও একই হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার কারণে একজনের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে।

আরবি/জেডআর

Link copied!