ঢাকা শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৪

পর্যটক নেই রাঙামাটিতে

এম কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২৪, ১২:২০ পিএম

পর্যটক নেই রাঙামাটিতে

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

গত দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে টানা পাঁচ দিনের সরকারি ছুটি ছিল। কিন্তু রাঙামাটিতে ছিল না পর্যটকের মুখরতা। গতকাল শুক্রবারও রাঙামাটির পর্যটন কেন্দ্রগুলো পর্যটকশূন্য। নেই কোনো পর্যটক। অথচ প্রতিবছর এই সময়ে সরকারি ছুটির দিনগুলোতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকে রাঙামাটি। কিন্তু তিন পার্বত্য জেলায় ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটক ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করার সরকারি নির্দেশনার কারণে পর্যটকশূন্য রাঙামাটি। এতে হতাশ ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, এ কারণে অক্টোবরে প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ কোটি টাকার ক্ষতি হবে ব্যবসায়ীদের।

রাঙামাটি পর্যটন মোটেল অ্যান্ড হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, নিরুৎসাহিতকরণ নির্দেশনার ফলে বর্তমানে সেখানে পর্যটকশূন্যতা বিরাজ করছে। এতে রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের দিনে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। আশা করছি, নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে পর্যটকদের সমাগম জমবে। ফলে ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। তাছাড়া কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে যাওয়ায় ঝুলন্ত সেতুটি ভেসে ওঠায় বর্তমানে তা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ করা হয়েছে। সেতুতে লোকজন পারাপার চালু রয়েছে। আমরা পর্যটকদের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষা করছি। 

সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, রাঙামাটিতে পর্যটন সংশ্লিষ্ট খাতের ওপর নির্ভরশীল প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। কিন্তু সাজেক, সুবলং ঝরনাসহ বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে কোথাও নেই পর্যটক। ফলে পর্যটন সংশ্লিষ্ট লোকজন হতাশায়। মৌসুমের শুরুতে এমন সিদ্ধান্ত রাঙামাটি পর্যটনখাতে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। বর্তমানে পুঁজি হারানোর শঙ্কায় তারা।

বেসরকারি পর্যটন স্পট রাঙামাটি বার্গি লেকের পরিচালক বাপ্পী তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, শুধু নিরাপত্তার জন্য পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবাইকে ভেবে দেখা দরকার। 

সাজেকে রিসোর্ট মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিজয় ত্রিপুরা জানান, প্রতি শুক্র-শনিবার প্রায় ২-৩ হাজার পর্যটক সাজেক বেড়াতে যায়। সরকারি ছুটির দিনে তা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এ সময়ে ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করায় পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে সাজেক। সব রিসোর্ট মালিকরা বেকার সময় কাটাচ্ছেন। কর্মচারীদের এ মাসের বেতন দেওয়াও সম্ভব হবে না।

উল্লেখ্য, ১৯-২০ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ঘটনার পর সম্ভাব্য অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে প্রথমে রাঙামাটি এবং পরে তিন পার্বত্য জেলায় পর্যটকদের ভ্রমণের ওপর নিরুৎসাহিতকরণ নির্দেশনা দেয় প্রশাসন। সর্বশেষ তিন পার্বত্য জেলায় ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটক ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করার সরকারি নির্দেশনার কারণে বর্তমানে একবারে পর্যটকশূন্য রাঙামাটি। এর আগে পাহাড়ে ওই সহিংসতার জেরে সাজেকে তিন দফায় ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ অক্টোবর ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হয়, যা পরে পাহাড়ের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়টি বিবেচনা করে তিন পার্বত্য জেলায় ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটকদের ভ্রমণের ওপর নিরুৎসাহিতকরণ নির্দেশনা দেয় প্রশাসন।

আরবি/জেডআর

Link copied!