নোয়াখালী জেলা জুড়ে শীতের আগমনীবার্তা আসার সাথে সাথে ধুনানকারীদের তুলা ছাঁটাই ও লেপ তৈরির কাজে বেড়েছে কর্মচাঞ্চল্যতা। দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন লেপ-তোষক কারিগররা।
শীত যত ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে লেপ-তোষকের কদর। সেইসাথে বেড়েছে কারিগরদের কদরও। কেউ কেউ পুরনো লেপ ভেঙে নতুন করে বানিয়ে নিচ্ছেন। আবার কেউ নতুন তুলা দিয়ে তৈরি করে নিচ্ছেন লেপ, তোষক ও বালিশ।
সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে লেপ-তোষকের দোকানগুলোতে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। তবে বর্তমানের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মতোই বেড়েছে লেপ-তোষক তৈরির খরচও। তাই চলতি বছর শীতের গরম কাপড় তৈরিতে আগের চেয়েও বেশি খরচ পড়বে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
এ সময় আরো দেখা যায়, জেলা শহরের দোকানগুলোতে লেপ, তোষক, হরেক রকমের তুলা নিয়ে ব্যবসায়ীরা দোকান সাজিয়ে বিক্রি শুরু করছেন, শীতের গরম কাপড়ের দোকান গুলোতেও ভিড় ক্রেতাদের। গত কয়েক সপ্তাহ থেকেই এই জেলাতে কমতে শুরু করেছে তাপমাত্রা, এতে শীত অনুভূত হচ্ছে। বিশেষ করে ভোর বেলায় কুয়াশায় ঢেকে যায় সবুজ মাঠ ও গাছপালা।
পৌষ ও মাঘ মাসে এ জেলায় পুরো শীত পড়তে থাকে। তাই শীত মোকাবেলায় মানুষ আগেভাগেই লেপ-তোষক তৈরী করা শুরু করেছেন। তাই শীতকে সামনে রেখে কারিগরদের এখন যেন দম ফেলানোর সময় নেই।
লেপ তৈরি করতে আসা একজন মহিলা গ্রাহক জানান, প্রতি বছর প্রচণ্ড শীত হয়, তাই আগেভাগেই শীতের জন্য একটি লেপ বানিয়ে নিচ্ছি। কিছুদিন পূর্বে তার মেয়ের বিয়ে হয়। তাই মেয়ের জন্য লেপ, তোষক বানাতে এসেছেন তিনি।
বেশ কয়েকজন কারিগর জানায়, তাদের একটি তোষক বা লেপ তৈরি করতে দুইশত থেকে তিনশত টাকা মজুরি নিয়ে থাকেন। একেকটা তৈরি করতে তাদের সময় লাগে প্রায় দুই ঘণ্টা। সব কিছুর দাম বেশি তাই খুব একটা পোষানো যাচ্ছেনা না।
জেলা শহরের তুলাপট্টির ব্যবসায়ীরা বলেন, দিন দিন ক্রেতার সংখ্যা বাড়ছে, যত বেশি শীত পড়বে তত ক্রেতাও বাড়বে। পুরো বছরের চেয়ে শীতের এ তিন মাস বেচা-কেনা একটু বেশিই হয়। বাকি সময় কাজের চাপ কম থাকে। তাই ক্রেতাদের কথা ভেবে জিনিসপত্রের গুণগত মান বজায় রেখে বায়না করা কাজের পাশাপাশি রেডিমেড জিনিসও তৈরি করে বিক্রি করছেন তারা।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, লেপ-তোষক বানাতে গার্মেন্টসের ঝুট ও কার্পাস তুলা ব্যবহার করতে হয়। একটি সিঙ্গেল লেপ সাত শ’ থেকে আট শ’ টাকা, সেমি-ডাবল লেপ নয় শ’ থেকে হাজার টাকা এবং ডাবল লেপ তৈরিতে দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকায় বিক্রি করতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে সুতা, কাপড়, তুলা ও মজুরি ব্যয়। তবে তোষক বানানোর ক্ষেত্রে দাম বেশি পড়ে। তুলার মান, পরিমাণ, নারিকেলের ছোবড়া ও কাপড়ের ওপর নির্ভর করে একেকটি তোষক তৈরির খরচ। সবকিছুর মূল্যবৃদ্ধির কারণে এ বছর লেপ-তোষকের তৈরির ব্যয় আগের তুলনায় অনেকটা বেড়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :