শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


সুজন হোসেন রিফাত, রাজৈ

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২৪, ০৮:৪১ পিএম

কোন কিছুতেই থামছে না নদ-নদীতে বালু উত্তোলন

সুজন হোসেন রিফাত, রাজৈ

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২৪, ০৮:৪১ পিএম

কোন কিছুতেই থামছে না নদ-নদীতে বালু উত্তোলন

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

মাদারীপুরের কোন কিছুতেই থামছে না নদ-নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলন \ দিন দিন আরোও  অপ্রতিরাধ্য হচ্ছে ড্রেজার মালিক ও বালু ব্যবসায়ীরা। ২০২০ সালের অক্টাবরে জেলার সকল নদ-নদী থেকে ড্রেজার মুক্ত ঘোষণা করেন সাবেক জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন। তখন কিছুদিন বন্ধ থাকলেও আবার তারা সক্রিয় হয়ে ওঠে, যা এখনও  চলোমান রয়েছে। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর দিন কিছুটা আড়াল থাকলেও রাতভর কার্যক্রম চালাচ্ছে  অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা। জেলার ও উপজেলার ২০-২৫টি স্পটে বালু উত্তোলনের কারণে ভাঙছে নদ-নদীর পাড় ও ফসলি জমি। ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে  অনেক  পরিবার। অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছেন  না এলাকাবাসী। যদিও প্রশাসন বলছে, বালু উত্তোলন বন্ধ অভিযান চলমান রয়েছে। বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত প্রভাবশালীরা। তাদের ব্যাপারে মুখ খুলতেও ভয় পান স্থানীরা।

এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে রাজৈর উপজেলার হরিদাসদি-মাহেদ্রদী, কবিরাজপুর, সদর উপজেলার শ্রীনদী, কালিরবাজার, ধুরাইল, পাঁচখোলা, জাজিরার তালুক, মহিষেরচর, কালকিনির ফাঁসিয়াতলা, শিবচরের দত্তপাড়া, সন্যাসীরচর, বন্দরখোলা, কাঁঠালবাড়ি, কুতুবপুরসহ জেলার ২০-২৫টি স্পটে নিয়মিত বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

দিনেরবেলায় ড্রেজার মেশিনগুলো  নদ-নদীর পাড়ে আড়াল ও কাঁশবনে নোঙর করে রাখা হয়। সন্ধ্যার পর থেকে ভোররাত পর্যন্ত  ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রতিদিন চলে বালু উত্তোলন। বছরের পর পর এই কার্যক্রম চালিয় যাচ্ছে  অসাধু একাধিক চক্র। এতে ভাঙ্গছে নদ-নদীরপাড়, ফসলি জমি। ঘরবাড়ি হারিয় নি:স্ব হচ্ছেন অনেক পরিবার। জেলার ৫টি উপজেলায় কাগজ-কলমে ১৭টি নদ-নদী থাকলেও পদ্মা, পালরদী, ময়নাকাটা, কুমার, আড়িয়াল খাঁ, বিষারকাদিসহ দশ্যমান নদ-নদীর সংখ্যা ৮টি। সরকারি ইজারা ছাড়াই প্রকতি ও পরিবেশের ক্ষতি করে এসব নদ-নদী থেকে  অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ ঘন ফুট বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা এসব অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের  বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে একাধিক বার অভিযাগ দিয়েও  প্রতিকার মিলছে না। একদিকে  প্রশাসন অভিযান চালায়, অন্যত্র চলে  বালু উত্তোলনের উৎসব। মজার ব্যাপার হচ্ছে  প্রশাসন অভিযান যাওয়ার আগেই বালু উত্তোলনকারীদের কাছ থেকে  সংবাদ পেয়ে  যায়। নাম প্রকাশ না করার শর্ত রাজৈর উপজেলার হরিদাসদি-মহেদ্রদী ইউনিয়নের কালীবাড়ি এলাকার এক বাসিদা বলেন, “প্রশাসন অভিযানে আসার আগেই বালু উত্তোলনকারীরা জেনে যায়। এটা কি করে সম্ভব?”

রাজৈর উপজেলার হরিদাসদি-মহেদ্রদীর কালীবাড়ির কুমার নদ, কালকিনির ফাঁসিয়াতলার আড়িয়াল খাঁ নদ, শিবচরের কাঁঠালাবাড়ির মাগুরখন্ড এলাকায় পদ্মা নদী, সদরের শ্রীনদীর কুমার নদ ও পাঁচখালার আড়িয়াল খাঁ থেকে বালু উত্তোলন করা হয় সবচেয়ে বেশি। এসব এলাকায় নদনদী ভাঙ্গনও বেশি।

রাজৈরের হরিদাসদি-মহেদ্রদী ইউনিয়নের কালীবাড়ি এলাকার কহিনুর বেগম বলন, ‘রাত ৮টার পর শুর হয় বালু উত্তোলন। এলাকার লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বালু ব্যবসায়ীদর পাহাড়া  দেয়। কিছু বলতে গেলেই হামলা চালায়, আমরা এখন অসহায় হয়ে পড়েছি।’

কালীবাড়ি এলাকার যুবক নুর নবী বলেন, ‘নদের দুইপাড়ের লোকজন বালু উত্তোলনে জড়িত। সবাই টাকা খেয়ে চুপ থাকে।

নানু মাতুবর নামের  আরেকজন  বাসিন্দা  বলেন, ‘বালু উত্তোলনের ফলে  আমার কষিজমি নদে বিলীন হয়ে গেছে। আগে জমি থেকে ৭০-৮০ মন ধান পেতাম। এখন আমি অসহায়, নিঃস্ব হয়ে পড়েছি।’

কালকিনির ফাঁসিয়াতলা এলাকার বাসিন্দা  জানান, রাত যতো গভীর হয় ততোই বাড়ে আড়িয়াল খাঁ নদের ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন। ভোর হবার আগেই ড্রেজার মেশিন ও বাল্বহেড নিয়ে সরে পড়েন বালু ব্যবসায়ীরা। অথচ প্রশাসন দিনের বেলায় অভিযান চালায়, সে ক্ষেত্রে  তেমন কোন  কার্যক্রম দেখতে পাই না। স্থায়ীভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হলে এর মূলহোতাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

মাদারীপুরের  অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো.  নাজমুল ইসলাম বলেন, বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।  প্রতিদিনই জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট এই অভিযান পরিচালনা করছেন। কোথাও জেল, আবার কোথাও অনেককেই আর্থিক জরিমানা করা হচ্ছে। এই অসাধু ব্যবসায়ীদের  পর্যায়ক্রমে সবাইকেই আইনের আওতায় আনা হবে। 

আরবি/জেডআর

Link copied!