মেহেরেপুর: মেহেরেপুরে বিএনপি ও জামায়েত ইসলামের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে ক্রসফায়ার, নাসকতার, অস্ত্র ও মাদক মামলার ভয় দেখিয়ে কোটি কোটি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে গাংনী থানার তৎকালিন ওসি হরেন্দ্রনাথ সরকারের বিরুদ্ধে। কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া কাজ সরাসরি সহযোগিতা করেন তৎকালীন ৭৪ মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন এমপি ও গুটি কয়েক সুবিধাবাদি সাংবাদিক।
নাম প্রকাশ করা যাবেনা এমন শর্তে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মী জানান, দুর্নীতির মাধ্যমে সারাজীবন নিজিকে ক্ষমতায় থাকার জন্য বিএনপির নেতাকর্মীদের সময়ে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়েছে। আবার কাউকে করেছে এলাকা ছাড়া। বিএনপি নেতাকর্মীদের বিছিন্ন করতে প্রধান হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা
হয় ওসি হরেন্দ্রনাথ সরকারকে। আর ওসি হরেন্দ্রনাথ সরকারকে বিএনপি নেতাকর্মীর তথ্য নিশ্চিত করতে সহযোগিতা করতেন কিছু গুটি কয়েকে সাংবাদিক।
এই সাংবাদিক কারা এমন তথ্য তারা বলেন, যারা শুন্য হাতে গাংনীতে এস জমি, বাড়ির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়েছে তারা। তবে তারা সাংবাদিকের নাম প্রকাশ করেনি।
রামনগর গ্রামের কাঠমিস্ত্রি শাহাআলম বলেন, সারাদিন অন্যর বাড়িতে কাজ করে, বাড়ির পাশে অন্যরে বাড়িতে বসে চা খাচ্ছিলাম। পুলিশ তুলে নিয়ে থানায় নিয়ে আসে। প্রায় শতাধিক বিএনপির নেতাকর্মীকে আটককরে থানায় নিয়ে আসে। ৭০ জন বিএনপির প্রতি নেতাকমীর কাছে থেকে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। আমরা টাকা দিতে না পারায় আমিসহ প্রায় ৩০ জনের নামে বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশিও অস্ত্র দিয়ে নাশকতা মামালা দিয়ে আদালতে প্রেরণ করে ।
মেহেরপুর জেলা সেচ্ছাসেবক দলে সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল হাসান শাওন বলেন, আমি আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে ছিলাম, গাংনী থানার তৎকালীন ওসি হরেন্দ্রনাথ সরকার আমাকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তুলে নিয়ে নাশকতার মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার নাম করে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা নেন। টাকা নেওয়ার পর আমাকে নাশকতায় মামলায় আদালতে পাঠানো হয়। শুধু আমি না আমার মত বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীকে এই মিথ্যা মামলা এখনও বয়ে নিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। তৎতকালীন এমপি সাহিদুজ্জামান খোকন সরাসরি লিস্ট করে ওসি হরেন্দ্রনাথকে দিয়ে বিএনপি নেতা কর্মীরে এমন নির্যাতন করেছেন।
গাংনী উপজেলা জামায়েতের আমির রবিউল জানান, আমি ও আমার কয়েকেজন নেতাকর্মী বসে গল্প করছিলাম, ওসি হরন্দ্রেনাথ সরকার নির্দেশে কয়েকজন থানার পুলিশ আমাদের উঠিয়ে নিয়ে আসে। থানায় এনে আমাদের কাছে মোটা অংকরে টাকা দাবি করে । আমরা টাকা না দিতে চাইলে আমাদের বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে নাশকতার মামলা দিয়ে আদালতে পাঠিয়ে দেয়।
নাম প্রকাশ করা যাবেনা এমন শর্তে কয়েক জন বলেন, ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল গাংনী উপজেলার হেয়ামেতপুর-আমতৈল বন্ধুকযুদ্ধে জমসেদ আলী নিহত হয়। কিন্তু জমসেদ আলী ছিল পেশায় একজন কৃষক, গ্রামে আ.লীগ নেতাদের সাথে মত বিরোধ থাকায়, ওসি হরেনন্দ্রাথকে টাকার বিনিময়ে জমসেদকে ডাকাত বানেিয় নাটক সাজিয়ে বন্ধুকযুদ্ধের নামে হত্যা করা হয়। ক্রসফায়ার দেবে না বলে দেবিপুর-ঝুড়াঘাট এলাকার লালনের পরিবারের কাছে থেকে নেন ওসি হরেনন্দ্রনাথ, টাকা নেওয়ার পর চোখতোলা মাঠে বন্ধুক যুদ্ধের নামে লালনকে হত্যা করা হয়।
গাংনী উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল হক বলেন, ওসি হরেনন্দ্রনাথ সরকার বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর অনেক জুলুম ও নির্যতন করেছে। আমারা দীর্ঘদিন অনেক নেতাকর্মী এলাকাছাড়া। অনেকের সন্ধান এখনও পাওয়া যায়ননি। নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে কোটি কোটি হাতিয়ে নিয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :