ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ছেলেকে বাঁচাতে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বাবা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪, ১২:২০ পিএম

ছেলেকে বাঁচাতে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বাবা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের পশ্চিম কাদমা গ্রামের বাসিন্দা লাল মিয়া (৬৫)। তার ছেলে সাহিদুল ইসলাম মুন্সি (৩২) জটিল কিডনি রোগে আক্রান্ত। অর্থের অভাবে ছেলের কিডনি রোগের চিকিৎসা করাতে না পেরে টাকা জোগাড় নিয়ে অনেকটা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি । তাই অনেকটা নিরুপায় হয়ে ছেলের চিকিৎসা জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন এই বৃদ্ধ বাবা।

লাল মিয়ার অর্থ সম্পত্তি বলতে কিছুই নেই। সরকারি আবাসনের জমিতে তাদের বসবাস। এরআগে তার ছেলে সাহিদুল মুন্সী স্থানীয় বাজারে মুরগির মাংস বিক্রি করে তাদের সংসার চালাতেন। বর্তমানে অভাবের তাড়নায় তার ব্যবসা থেমে গেছে। বেচে থাকার তাগিদে তাকে প্রতিদিন তিন থেকে চারশ টাকার ওষুধ কিনে খেতে হয়। অসুস্থ সাহিদুলের একমাত্র ছেলে আরিফুল স্থানীয় চেতনার বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত রমজান মাসে হঠাৎ তার জ্বর হয়। এরপর বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিয়েও তার জ্বর ভালো হয়নি। পরে রংপুরে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানতে পারে তার দুই কিডনি বিকল হয়ে গেছে। পরে সেখান থেকে ঢরাজধানীর  ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কিডনি বিশেষজ্ঞ ও সার্জনকে দেখালে তারা জানান, তার দুইটি কিডনি অকেজো হয়ে গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তার কিডনি পরিবর্তন করতে হবে।

তার প্রতিবেশী আকবর মিয়া বলেন, এলাকায় সাহিদুল ইসলাম খুবই ভালো ছেলে। সে গত ছয় মাস ধরে কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে পরেছে। তারা খুবই দরিদ্র।  সরকারি  জায়গা জমিতে ঘরবাড়ি করে কোনোরকম তাদের বসবাস। পাশাপাশি অসুস্থ অবস্থাতেও সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করছে। তার পাশে সবাইকে দাঁড়ানো প্রয়োজন।

এ বিষয়ে অসুস্থ সাহিদুল ইসলাম মুন্সীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘হঠাৎ জ্বর থেকে জানতে পারি আমার দুইটি কিডনি নষ্ট । চিকিৎসক বলছেন, ডাক্তার বলছেন কিডনি পরিবর্তন করাতে ভারতে যেতে হবে। কিন্তু আমি অসহায় গরিব এত টাকা কই পাবো। প্রতিদিন তিন থেকে চারশ টাকার ওষুধ খেতে হয়। আমি বাঁচতে চাই। তাই সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আকুল আবেদন করছি।’

 বৃদ্ধ বাবা লাল মিয়া কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ‘অর্থের অভাবে আমার ছেলের চিকিৎসার করাতে পারছিনা। চোখের সামনে ছেলেটা ধুকে ধুকে মরছে। বাবা হয়ে আমি চেয়ে চেয়ে দেখছি।  আমি কিছুই করতে পারছি না। আমার ছেলেটার প্রাণ বাঁচাতে সবার কাছে একটু সাহায্য চাই।’

ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন পরিষদ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম বলেন, ‘সাহিদুল ইসলাম মুন্সির দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে আমরা বিষয়টি জেনেছি। ইউনিয়ন পরিষদ পক্ষ থেকে আমাদের সাধ্যমতো যতোটুকু সাহায্য করা যায় করবো পাশাপাশি দেশ ও বিদেশের বিত্তবানদের কাছে অনুরোধ করছি তার পাশে দাঁড়ানোর জন্য।’

উল্লেখ্য, অসুস্থ সাহিদুল ইসলাম মুন্সির পাশে দাঁড়ানোর জন্য  যোগাযোগ ও বিকাশ, নগদ ও রকেট -01723-206182 অথবা ব্যাংক হিসাব নম্বর -রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক -631612200010629।

আরবি/জেডআর

Link copied!