ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আমেরিকা যাওয়ার পথে মাঝ আকাশে না ফেরার দেশে গেলেন শিক্ষক

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪, ০৬:০৩ পিএম

আমেরিকা যাওয়ার পথে মাঝ আকাশে না ফেরার দেশে গেলেন শিক্ষক

কলেজ শিক্ষক নজরুল ইসলাম ডাকুয়ার। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

আমেরিকা যাওয়া হলো না তালতলী উপজেলার ছোটবগী ইউনিয়নের কলেজ শিক্ষক নজরুল ইসলাম ডাকুয়ার। বিমানে যাওয়ার মাঝ আকাশেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন তিনি।

আজ বুধবার সকাল ৮ টায় হংকং বিমান বন্দরে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া বিমান অবতরন করলে বিমান কর্তৃপক্ষ তাকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পায়। পরে বিমান বন্দর এলাকায় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে মৃত্যু ঘোষনা করেছেন। তার মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।  

জানাগেছে, তালতলী উপজেলার ছোটবগী গ্রামের মৃত আনোয়ার হোসেন ডাকুয়ার বড় ছেলে মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন ডাকুয়া ১৯৯৫ সালে গ্রীনকার্ড লটারীর মাধ্যমে স্বপ্নের দেশ আমেরিকা যান। এর পাঁচ বছরের মাথায় তিনি তার মা ফাতেমা বেগমকে আমেরিকা নিয়ে যায়। এরপর একএক করে তোফাজ্জেল হোসেন তার তিন ভাই মোজাম্মেল ডাকুয়া, মোঃ মিজানুর রহমান ও মনিরুল ইসলামকে আমেরিকা নিয়ে যায়। এ বছর জুলাই মাসে তার সেঝ ভাই নজরুল ইসলাম ডাকুয়া, তার স্ত্রী লায়লা আক্তার (৪০), ছেলে জিহাদুল ইসলাম ইহান (৯) ও মেয়ে নওরিন ইসলাম ইভা (১৮) আমেরিকা যাওয়ার ভিসার ব্যবস্হা করেন। ভিসা লাভ ১৫ সেপ্টেম্বর সোমবার স্বপ্নের দেশ আমেরিকা উদ্দেশ্যে বাড়ী ত্যাগ করেন। মঙ্গলবার রাত সোয়া দুইটার সময় হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দর থেকে আমেরিকার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন। তাকে বহনকারী বিমানটি বুধবার সকাল ৮ টায় হংকং বিমান বন্দরে অবতরন করেন। ওই বিমান বন্দর থেকে তার অন্য বিমানে ওঠার কথা কিন্তু তিনি বিমান থেকে নামছেন না। বিমান কর্তৃপক্ষ তাকে তার সিটে অচেতন অবস্থায় দেখতে যায়। পরে তারা নজরুল ইসলামকে উদ্ধার করে স্হানীয় একটি  হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত্যু ঘোষনা করেন। বর্তমানে তার মরদেহ হংকং বিমান বন্দরের একটি হাসপাতালে রয়েছে। 

এ খবর বাংলাদেশ ও আমেরিকা তার স্বজনদের মাঝে পৌঁছলে স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।  এদিকে নজরুলের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে হংকং অবস্থানরত বাংলাদেশ দুতাবাসে যোগাযোগ করা হচ্ছে। 

বুধবার বিকেলে তার বাড়ীতে স্বজনদের মধ্যে ছিল শোকের মাতম। নজরুল ইসলামের স্ত্রী লায়লা কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, আল্লাহর নেয়ার ইচ্ছাই যখন ছিল এভাবে নেলো কেন? বাড়ীতে বসে নিয়ে যেতো। অপর দিকে মা ফাতেমা বেগম পুত্রের শোকে অসুস্থ হয়ে পরেছেন বলে জানিয়েছেন আমেরিকা প্রবাসী ছেলে তোফাজ্জেলের স্ত্রী মরিয়ম বেগম। 

আমেরিকা প্রবাসী বড় ভাই মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন ডাকুয়া কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন আমার ভাই বিমানে মারা গেছে। কিভাবে মারা গেছে তা আমি এখনো নিশ্চিত না। তবে বিমান কর্তৃপক্ষ অবহিত করেছেন হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছে।  

উল্লেখ নজরুল ইসলাম ডাকুয়া ছিলেন একজন সাদা মনের মানুষ। সকল মানুষের কাছে তিনি ছিলেন ওস্তাদ। তাকে সকল শ্রেনী পেশার মানুষ ওস্তাদ বলে সম্মোধন করতো। নজরুল পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ডিগ্রী কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিষয়ের প্রভাষক হিসেবে চাকুরী করতেন। 

আরবি/জেডআর

Link copied!