শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২৪, ০৬:৩৬ পিএম

কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের রোগীরা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২৪, ০৬:৩৬ পিএম

কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের রোগীরা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

৫ বছর আগে ১০০ শয্যা হতে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের কার্যক্রম চালু করা হলেও নার্স, ওয়ার্ডবয়সহ জনবল সংকটের কারণে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না ঠাকুরগাঁও হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে রোগীরা। হাসপাতালে ভর্তির পর রোগীর চিৎকারে স্বজনরা ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়লেও সেবা প্রদানের লোক খুঁজে পাওয়া যায় না। রোগীকে নিয়ে স্বজনরা দিশেহারা হয়ে পড়ছেন। সব মিলে সববিধ সমস্যার কারণে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল রোগীদের দুর্ভোগের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ১৯৮৭ সালে ৫০ শয্যা নিয়ে আধুনিক সদর হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে এক যুগ পর ১৯৯৭ সালে হাসপাতালটিকে ৫০ শয্যা থেকে ১শ শয্যায় উন্নীত করা হয়।

২০১৯ সালে ১শ শয্যাবিশিষ্ট ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালটিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে রুপান্তর করা হয়।সেই সাথে নির্মান করা হয় একটি ৭ তলা বিশিষ্ট নতুন ভবন। রোগীদের সহজে ৬ তলা পর্যন্ত ওঠানামা করার জন্য লাগানো হয় দুটি লিফট।

জেনারেল হাসপাতালের অনুমোদন কালে জনবল অনুমোদন ক্রটির কারণে এখানে স্টাফ নার্স ও ওয়ার্ডবয় সংখ্যা মোটেও বাড়েনি। অন্যান্য ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ২১০ জন স্টাফ নার্সের পদ সৃষ্টি হলেও এখানে অনুমোদন মিলে মাত্র ৮০টি। সে কারণে হাসপাতালের মেডিসিন, সার্জারী, গাইনী, সংক্রামক ব্যাধি, শিশু বিভাগে প্রতি সিফটে ২ জন করে নার্স দায়িত্ব পালন করেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, এখানে ২৫০ শয্যার হাসপাতালের বিপরীতে ৬-৭শ রোগী ভর্তি থাকে।চিকিৎসাধীন রোগীদের রুটিন মাফিক ওষুধ, ইনজেকশন ও স্যালাইন পুশ করতে কমপক্ষে এক ঘন্টা সময় চলে যায়। এ সময় নতুন কোন রোগী ভর্তি হলে তাকে তাৎক্ষনিকভাবে সেবা প্রদানের মতো কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না।

আবার সকালে ডাক্তার রোগী ছুটি দিলেও তাদের রিলিজ লেটার রেডি করতে বিকেল ২ টা বেজে যায়।নার্সরা বলছেন ৬জন রোগীর বিপরীতে একজন নার্স থাকার কথা। কিন্তু প্রতি ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত ৫০-৬০ জন রোগীকে সেবা দিতে হয় একাই। আমি আমার মাকে নিয়ে ৩দিন ধরে হাসপাতালে আছি। কিন্তু আমার মাকে একবেলা খাবারও দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এদিকে, ঠাকুরগাঁও জেলা ছাড়াও পঞ্চগড়, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলার অনেক রোগী উন্নত চিকিৎসার জন্য এ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় এখানে শয্যার অভাবে অনেক রোগীকে হাসপাতালের মেঝেতে আসন পেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।

রোগীর একজন স্বজন অভিযোগ করে বলেন, আমি আমার কিডনী রোগীকে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করেছি। চিকিৎসক ৬ ব্যাগ রক্ত দেওয়ার পরামর্শ দিলে আমি রক্ত সংগ্রহ করে ওয়ার্ডে আনি।

কিন্তু রোগীর দেহে রক্ত পুশ করার জন্য এক ঘন্টা ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছি কোন নার্স খুঁজে পাচ্ছি না অপর একজন নারী বলেন, হাসপাতালের বেডের নীচে ও ওয়ালে তেলাপোকার ছড়াছড়ি। যখন তখন তেলাপোকা এসে খাবারে পড়ে। যখন তখন গায়ে উঠে পড়ে। তেলাপোকার কারণে বাচ্চা ঘুমাতে পারছে না। 

হাসপাতালের ২টি লিফট থাকলেও অপারেটর থাকে না। বেশিরভাগ সময়ে সাধারণ মানুষ নিজেরা চালায়। অদক্ষ লোকজনের ব্যবহারের ফলে বেশিরভাগ সময় একটি লিফট অকেজো হয়ে পড়ে থাকে। তখন রোগী ও তাদের স্বজনদের সিঁড়ি বেয়ে ৬ তলা পর্যন্ত ওঠানামা করতে গিয়ে অনেকে কাহিল হয়ে পড়ছেন।

হাসিনা বেগম নামে একজন নারী তার স্বামীর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে এসে পড়েছেন বিপাকে। তিনি বলেন, হাসপাতালের মেঝে নোংরা। টয়লেটগুলো খুবই নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত।ঠিকমতো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়না। ব্যবহার করা যায় না।আমার রোগী দুর্গন্ধযুক্ত টয়লেটে যেতে পারে না। তাই তাকে বাইরে নিয়ে যেতে হচ্ছে।

নুরজাহান নুপুর নামে একজন অ্যাটেনডেন্ট অভিযোগ করে বলেন,আমার মায়ের নাকে নল ঢুকানো হয়েছে। সকালে ডাক্তার রাইন্ডে এসে সেটা খুলে দিতে বলেছেন। আমি ওয়ার্ডবয় ও নার্সদের পিছে পিছে ঘুরছি। এখন ৩ টা বাজলেও এখন পর্যন্ত নার্স ও ওয়ার্ড বয়দের পাইনি।

পায়ের ফেকচার একজন রোগী অভিযোগ করে বলেন, হাটাচলা করতে পারেন না এমন রোগীদের বহন করতে হাসপাতালে ট্রলি ও হুইল চেয়ার থাকলেও সেসব বাহন পাওয়া যায় না। হাসপাতালের দুষ্টু কর্মচারিরা সেসব বাহন লুকিয়ে রেখে টাকা কামানোর ধান্দা করছেন।

এ ব্যপারে হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. সিরাজুল ইসলাম হাসপাতালে জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে এবং জনবল সমস্যা সমাধানে স্ট্যাটাস সেটাপ তৈরী হয়েছে। সেই অনুযায়ী চাহিদা মাফিক পদ সৃজনের জন্য জন্য প্রস্তাব পাঠাতে হবে ।পদ সৃষ্টি ও জনবল নিয়োগ দেওয়া গেলে কিছুটা সমস্যা দূর করা যাবে।

আরবি/জেডআর

Link copied!