শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


সনজিত কর্মকার, চুয়াডাঙ্গা

প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২৪, ০৬:১৭ পিএম

চুয়াডাঙ্গা হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম না থাকায় বিপাকে সাপে কাটা রোগীরা

সনজিত কর্মকার, চুয়াডাঙ্গা

প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২৪, ০৬:১৭ পিএম

চুয়াডাঙ্গা হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম না থাকায় বিপাকে সাপে কাটা রোগীরা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

দীর্ঘদিন যাবত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত অ্যান্টিভেনম না থাকায় ভুক্তভোগীরা চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে না বলে ব্যাপক অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ মুহূর্তে সাপে কাটা রোগী এলে অ্যান্টিভেনম না থাকার কারণে তাদেরকে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

এদিকে, গত সোমবার রাতে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার খাসপাড়া গ্রামে সাপের কামড়ে সেলিম হোসেন (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। তিনি দুই সন্তানের জনক ছিলেন। রাতে সাপে কামড়ানোর পরই একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করে সদর হাসপাতালে নেয়া হয় সেলিমকে। হাসপাতালে সরকারিভাবে সাপের বিষের প্রতিষেধক (অ্যান্টিভেনম) সাপ্লাই ছিল না। বাইরে থেকে অ্যান্টিভেনম কেনার পরামর্শ দেয়া হয়। অত্যান্ত দরিদ্র সেলিমের পরিবারের সদস্যরা সঙ্গে করে মাত্র সাত হাজার টাকা নিয়ে এসেছিলেন। ফার্মেসিতে এক ডোজ অ্যান্টিভেনমের (১০ পিচ) মূল্য ১৪ হাজার টাকা। ওই সময় ফার্মেসি দোকানদার বাকি দিতে না চাওয়ায় বাধ্য হয়ে ভাড়া করা
মাইক্রোবাসের চাবি বন্ধক রাখা হয়। এরপরই এক ডোজ অ্যান্টিভেনম তাদেরকে দেন ফার্মেসি মালিক। হাসপাতালে নিয়ে আসার প্রায় এক ঘন্টা পর অ্যান্টিভেনম তার শরীরে পুশ করা হলেও কিছুক্ষণ পর সেলিম মারা যান।

অপরদিকে, সপ্তাহের ব্যবধানে গত বুধবার চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার বলেশ্বরপুর গ্রামের উজির আলী (৬৫) নামের আরেক ব্যক্তি সাপের কামড়ে মারা
যান। তিনি বলেশ্বরপুর গ্রামের মৃত সুলতান মণ্ডলের ছেলে।

পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, বুধবার সকাল ৭টার দিকে মাঠে ঘাস কাটতে গেলে একটি সাপ উজির আলীকে কামড় দেয়। পরে বাড়িতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা দ্রুত উজির আলীকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। রাত ১১ টার দিকে চিকিৎসারত অবস্থায় তিনি মারা যান।

এছাড়াও গত বুধবার তালতলা গ্রামের হাবিবুর রহমান নামে আরেক ব্যক্তি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। তার শারীরিক পরীক্ষা-নীরিক্ষার করার পর ডাক্তার তাকে শঙ্কামুক্ত বলে জানান।

চিকিৎসাধীন হাবিবুর রহমান জানান, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মতো একটি প্রতিষ্ঠানে সাপের অ্যান্টিভেনম না থাকা বড়ই দুঃখজনক। জেলা হাসপাতালে যদি অ্যান্টিভেনম না থাকে তাহলে সাধারণ জনগণ কোথায় যাবে। তাছাড়া সাপের অ্যান্টিভেনম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।

এছাড়াও সাপে কামড়ানো রোগীদের যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাক্সিন দেয়া প্রয়োজন। সেখানে কোনো মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলেরোগী পথেই মৃত্যুবরণ করতে পারে। এ ধরণের অনেক রোগীর ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত ভ্যাক্সিনেশনের ব্যবস্থা করা।

জানা গেছে, দেশে বর্ষা মৌসুমে সাপের কামড়ের ঘটনা বেশি ঘটে। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন উপজেলায় সাপে কাটা রোগী বাড়ছে এবং ধরা পড়ছে বিষধর সাপও। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলাও বেড়েছে বিষধর সাপের আনাগোনা।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে চাহিদা পাওয়ার ভিত্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ অ্যান্টিভেনম সরবরাহ করে জেলা সদর হাসপাতালে। প্রতি বছর চাহিদার ভিত্তিতে সদর হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম সরবরাহ করার কথা। সাপের কামড়ে মৃত্যু থেকে রক্ষা পেতে হলে উপজেলা পর্যায়েও পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনমের ব্যবস্থা করার বিকল্প নেই। জেলায় সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনায় তারা দুষছেন সময়মতো সাপে কাটার ইঞ্জেকশন না পাওয়াকে।

সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন বলেন, দীর্ঘদিন থেকে অ্যান্টিভেনম ইঞ্জেকশন মজুদ নেই। সাপে কামড়ানোর পর একজন রোগীকে শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় অ্যান্টিভেনম দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে অনেক চিকিৎসক ঝুঁকি নিতে চাইবেন না। এ কারণে হাসপাতাল রোগী এলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তবে অ্যান্টিভেনমের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। আমরা আগামী সপ্তাহের মধ্যে এটা পেয়ে যেতে পারি।

চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ও সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবাধায়কের সরকারি মোবাইল নম্বরে কল করলে তিনি বলেন, আমরা ঢাকাতে চাহিদা পত্রসহ লোক পাঠিয়েছি। সারাদেশে ভ্যাকসিন স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। তবে আমরা ১ সপ্তাহ থেকে ১০ দিনের মধ্যে পেয়ে যাবো বলে আশা করছি।

আরবি/জেডআর

Link copied!