নদীভাঙ্গন রোধ, ফসলি জমি রক্ষা ও বালুচরে চাষাবাদের লক্ষ্যে ২০০২ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে লালমনিরহাটের তিস্তা নদীতে নির্মিত হয় ৫টি স্পার বাঁধ। দীর্ঘদিন সংস্কার না করা ও নদীর গতিপথের পরিবর্তনের কারণে স্পার বাঁধগুলোর সুফল পাচ্ছেন না তিস্তাপাড়ের মানুষ।
এর আগে দীর্ঘ সময় বাঁধের সুফল পেয়েছে তিস্তা পাড়ের মানুষ। কিন্তু সময়মতো সংস্কার না করা আর নদীর গতিপথ পরিবর্তনের কারণে গত তিন বছর থেকে স্পার বাঁধের সুফল পাচ্ছেন না নদীপাড়ের বাসিন্দারা। আবার এর মধ্যেই দেখা দিয়েছে নদীভাঙ্গন আর জলাবদ্ধতা।
জানা যায়, তিস্তা নদীর ভাঙ্গন রোধ, বালুচরে চাষাবাদের লক্ষ্যে লালমনিরহাট জেলায় তিস্তা নদীর বাম তীরে ২০০২ সাল থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে নির্মিত হয় ৫টি স্পার বাঁধ। বাঁধ নির্মাণের ফলে আদিতমারী উপজেলার চন্ডিমারী, বালাপাড়া, কুটিরপাড়,মহিষখোচা, গোবর্ধন সদর উপজেলার কালমাটি, রাজপুর ,খুনিয়াগাছ ,জগতবেড়সহ ১০টি গ্রামের মানুষ নদীভাঙ্গন থেকে রক্ষা পায়। তিস্তার বামতীরের এ স্পার বাঁধগুলোর ১৫কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ধান, পাট, ভূট্টা, সবজীসহ বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি চাষ করত নদীপাড়ের মানুষজন।
স্পার বাঁধের সুফল স্থানীয়রা দীর্ঘ সময় ভোগ করলেও বর্তমানে তিস্তা নদীর গতিপথ পরিবর্তন, নাব্যতা সংকট আর স্পারগুলোর সংস্কার না হওয়ায় গত তিন বছর থেকে এর কাঙ্খিত সুফল পাচ্ছেন না তারা।
তিস্তাপাড়ের বাসিন্দা আলম মিয়া, আব্দুর রশিদ, মুকুল হোসেন জানান, স্পার বাঁধগুলো যখন প্রথম নির্মাণ হয় তখন এর সুফল পেয়েছি আমরা। এ বাঁধ নির্মাণের ফলে নদীভাঙ্গন কমে গিয়েছিল। স্পারের আশেপাশে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে চর জেগেছিল। সেসব চরে বিশেষ প্রক্রিয়ায় সেচ দিয়ে নানারকম ফসল চাষ হতো। কিন্তু গত তিন বছর থেকে স্পারগুলোর সুফল মিলছে না। তিস্তার গতিপথ পরিবর্তন আর সংস্কারের অভাবে স্পারগুলোর তলদেশে গভীর গর্ত হওয়ায় পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। দেখা দিচ্ছে জলাবদ্ধতা ও নদীভাঙ্গন।
পানির স্রোতের কারণে স্পারের আশেপাশের বাড়িঘর, ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এমনকি স্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। স্পারের আশেপাশে গভীর গর্ত হয়ে সারা বছরই পানিতে ডুবে থাকছে জমি। ফলে আগের মতো চাষাবাদও হচ্ছেনা। একারণে নদীপাড়ের মানুষ দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট পানি উন্নয়ণ বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার রায় বলেন, তিস্তা নদীর ভাঙ্গনরোধসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে পানি উন্নয়ণ বোর্ড কাজ করছে। অবিলম্বে বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমি রক্ষায় তিস্তায় টেকসই ও যুগোপযোগী বাঁধ নির্মাণসহ তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। ভাঙ্গন রোধে আমাদের কাজ চলমান রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :