জামালপুর সরিষাবাড়ীর সীমান্তবর্তী এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধে এক কৃষকের ফসলি জমিতে রাসায়নিক (বিষ) প্রয়োগ করে ৩ বিঘা আমন ‘ধানক্ষেত’ নষ্ট করেছেন এমন অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।
গত শুক্রবার রাতে সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার মনসুর নগর ইউনিয়নের কুমারিয়াবাড়ী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শনিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে ভুক্তভোগী কৃষক মো. দুলাল মিয়া বিষয়টি অভিযোগ করে সাংবাদিকদের জানান।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, কাজিপুরের উত্তর কুমারিয়াবাড়ী গ্রামের মৃত ছায়েদ আলী উরফে ছাক্কু মন্ডলের দূই স্ত্রী ছিল। তার প্রথম ও দ্বিতীয় পক্ষের সন্তানদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। এলাকায় এই নিয়ে একাধিকবার সালিশ বিচার হলেও কেউ মীমাংসা মানেনি। পরবর্তীতে তারা একে অপরের বিরুদ্ধে ৮/১০টি করে মামলা করে। যা বর্তমান জেলা কোর্টে চলমান রয়েছে। এদিকে গত শুক্রবার রাতে বিরোধপূর্ণ জমিতে লাগানো ধান ক্ষেতে কীটনাশক বিষ প্রয়োগ করে ধান গাছ মেরে ফেলে একই এলাকার জালাল উদ্দিনের ছেলে শহীদ মিয়া ও রফিক মিয়ার পরিবারের লোকজন। এতে দুলাল মিয়ার দখলে থাকা (৩ বিঘা) জমির ধান পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়।
অভিযোগ করে কৃষক দুলাল মিয়া বলেন-এই মৌসুমে প্রায় ৪০ হতে ৫০ মণ ধান হতো। সেই ফসল তারা নষ্ট করে ফেলেছে। এখন স্ত্রীর সন্তান নিয়ে কিভাবে চলবো। জমি নিয়ে বিরোধ চলছে, সেটা আদালত ফয়সালা দিবেন। কিন্তু তারা কেন আমার ফসল নষ্ট করে দিলো। এই অন্যায়ের সঠিক বিচার চান তিনি। এতে তার প্রায় লক্ষাধিক হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে বলেও তিনি জানান।
বিষ প্রয়োগের বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দুলাল এর ভাবি মাজেদা বেগম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি শহীদ ,রফিক, তানজিলা ও তাফির মা শিপুকে ধান ক্ষেত থেকে উঠে যেতে দেখেছেন। এসময় তিনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করলে তারা বলে ধানক্ষেতে বিষ দিয়ে গেলাম।
স্থানীয় আতার আলী জানান, ‘অভিযুক্ত কালামের স্ত্রী শিপু আক্তার তাকে কয়েকদিন আগে ফোন দিয়ে বলে ধান খেতে বিষ দেওয়া লাগে। কিন্তু আমি জানি তাদের বিষ দেওয়ার মতো কোন ধানক্ষেত চাষাবাদ করেনি। এর কয়েকদিন পরেই এ ঘটনা ঘটেছে।
ভুক্তভোগী কৃষক দুলালের ভাই বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘বিবাদীরা আমাদের সৎ ভাই ও ভাতিজা। জালাল উদ্দিন ও শাহ আলীর নেতৃত্বে তারা আমাদের বাবার পৈত্রিক সম্পত্তির বন্টন বুঝিয়ে না দিয়ে বারবার চাষাবাদকৃত ফসলাদি তারা কেটে নিচ্ছে এবং বিভিন্নভাবে নষ্ট করে ফেলছে। এবার ৩ বিঘা আমন ধানের ফসলে বিষ দিয়ে নষ্ট করেছে তারা। এঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সহ বিচার দাবি করেন তারা।
এ-বিষয়ে অভিযুক্ত শিপু আক্তার ও রফিক মিয়া বলেন-অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। আমরা তাদের জমিতে বিষ দেইনি। আমাদের জমিতেই আমরা সার-বিষ দিয়েছি। তারা নিজেরাই অতিরিক্ত কীটনাশক বিষ দিয়ে আমাদের ফাঁসানো চেষ্টা করছে। আমরাও এর সঠিক তদন্তের দাবি জানাই।
এ ব্যাপারে কাজিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এমন ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :