ঢাকা রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫

ভাল ফলন হলেও বড় লোকসানে আলু চাষিরা

বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৫, ০৯:৪৯ পিএম

ভাল ফলন হলেও বড় লোকসানে আলু চাষিরা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল, মধুপুর, লাহিড়ীসহ বিভিন্ন এলাকার আলু চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত মৌসুমে আলু চাষে বেশি পরিমাণে লাভ হওয়ার কারণে এই মৌসুমে বেশি পরিমানে আলু চাষ করেছে কৃষকরা। সার, কীটনাশক ও বীজের দাম অনেক বেশি হওয়ায় বর্তমান বাজারে আলু বিক্রি করে লোকসান হচ্ছে কৃষকের। গত বছর আলুতে প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ৩০-৪০ হাজার টাকা। তবে এবছর প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ৫০-৬৫ হাজার টাকা।

গত মৌসুমে আলু চাষিরা ভালো ফলন ও দামে পেয়েছিলো। গত মৌসুমের মত লাভের আশায় এবার ধার দেনা ও ঋন করে বেশি পরিমানে আলু চাষ করে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার কৃষকরা। এই মৌসুমে আলুচাষীরা কেজিতে ১২০-১৩০ টাকা পর্যন্ত দাম পেয়ে কিছুটা লাভবান হলেও বর্তমানে আলুর কেজি ১৩-১৭ টাকা হওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের। তাতে আলু চাষিদের লাভের আশা তো দূরের কথা, ধারদেনা ও ঋন পরিশোধ নিয়েই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।

আলু চাষি ফরমান আলী জানান, এ বছর দুই বিঘা জমিতে গ্র্যানুলা জাতের আলু চাষ করেছি। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার। জমিতে আলু পেয়েছি ১৩০-১৩৫ মণ। তাতে বিক্রি হয়েছে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা। এবছর লোকসান হয়েছে ৪৫ হাজার টাকা। ভাল ফলন হওয়ার কারণে এত দাম পেয়েছি। নাহলে আরও বেশি লোকসান হতো।

আলু চাষি রবিউল জানান, গত বছর আলুর বীজের দাম ছিল সবোর্চ্চ ৪৫ টাকা পর্যন্ত। এবছরে বীজের দাম বেড়ে ১২০ টাকা পর্যন্ত এসেছিল। এতে গত বছরের তুলনায় আলুর উৎপাদন খরচ দ্বিগুন হওয়ার কারণে বর্তমানে কৃষকরা প্রতি বিঘা জমিতে লোকসান হচ্ছে প্রায় ২০-৩০ হাজার টাকা। এবছর জমি থেকে কৃষকরা আলু বিক্রি করেছে সবোর্চ্চ ১২০ টাকা এবং সর্বনিম্ন আলু বিক্রি হয়েছে ১২ টাকা।

আলু চাষি সফিকুল ইসলাম জানান, আমি এবার ঋন নিয়ে আলুর চাষ করেছিলাম লাভের আশায়। তবে এবার আলুর বাজারদর অনুযায়ী ৫০ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। এখন লোকসান কোথা থেকে দিব তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, ২০২২ সালে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে ২ হাজার ৭‍‍`শ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছিল। পরের বছর ২০২৩ সালে ৩‍‍`শ হেক্টর কমে ২ হাজার ৪‍‍`শ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। তবে গেল বছরের দাম পেয়ে চলতি বছর আবারও ২ হাজার ৭‍‍`শ হেক্টর জমিতে আলুর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ বেড়েছে আরও ৩‍‍`শ হেক্টর।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন সোহেল জানান,  এ এলাকার কৃষক যখন একটি ফসলে লাভ পান, তখন অন্যরাও সেটাতেই ফসলে প্রতি ঝোঁকেন। চলতি বছরে আলুর ক্ষেত্রেও এমনটি হয়েছে। এবছর আলুর উৎপাদন বেশি পরিমাণে হওয়ার কারণে সরবরাহ কম হচ্ছে তাই দাম কমেছে আলুর। তবে আগাম আলু চাষীরা ভাল দাম পেয়ে লাভবান হয়েছে। এবার উৎপাদন খরচ বেশি ও বেশি পরিমাণে আলু উৎপাদনের কারণে কৃষকরা লোকসান হচ্ছে।

আরবি/জেডআর

Link copied!