কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের নিয়ামতবাড়ীয়া গ্রামের কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্যাপসিকামের জমি নিয়ে। প্রায় ৬ বিঘা জমিতে তারা একসাথে ক্যাপসিকামের চারা রোপন করেছেন। আরো ৪বিঘা জমি চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
কৃষক তরিকুল ইসলাম জানান, “ক্যাপসিকাম এর চাষ কিভাবে করে সেটি আমরা জানি না। তবে শুনেছি এর জন্য অনেক খরচ করা লাগে। তাই আমরা সমিতির মাধ্যম দিয়ে এবারই প্রথম ক্যাপসিকাম চাষ করছি। আমাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ক্যাপসিকাম চাষের উপরে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছে। কৃষি অফিসের লোকজন এসে আমাদের কিভাবে কি করতে হবে সেটি দেখিয়ে দিচ্ছে। ওই এলাকার কৃষকরা নিজেদের অর্থায়নে অল্প কিছু কিছু করে সঞ্চয় জমিয়ে “জঙ্গলী আধুনিক কৃষি সমবায় সমিতি” নামের একটি সমিতির মাধ্যমে এ চাষ করছে।
সমিতির সভাপতি ইলিয়াস খাঁন জানান, “আমরা ২৯জন কৃষক মিলে এই সমিতিতে সঞ্চয় করি। সেই টাকা দিয়ে আমরা জমি বর্গা নিয়ে এবার এ ক্যাপসিকামের চাষ শুরু করেছি। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে আমরা যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় ক্যাপসিকাম চাষের উপরে ৩দিনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি। সেই সাথে প্রকল্প থেকে কিছু সহযোগিতা পেয়েছি। যার মাধ্যমে এ কাজে আমরা বেশি আগ্রহী হয়েছি। যদি এবার ক্যাপসিকাম ভালো হয় তাহলে আরো বিস্তৃর্ন এলাকায় আমরা ক্যাপসিকামের আবাদ করবো।”
স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, “ক্যাপসিকাম যেহেতু এই এলাকার জন্য নতুন একটি ফসল। এবং কৃষকরা এটির চাষ সম্পর্কে ততটা অভিজ্ঞ না। আমরা সার্বক্ষণিক তাদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি ভালোভাবে চাষের জন্য। এছাড়া তাদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণও দিচ্ছি এই ক্যাপসিকাম চাষে।”
কুমারখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবাশীষ কুমার দাস জানান, “ক্যাপপিসাম খুবই পুষ্টি সমৃদ্ধ এবং স্বাস্থ্যকর সবজি। সবজি হিসাবে এবং সালাদ হিসাবেও এটি খাওয়া যায়। এর বাজার মুল্য অন্য সবজির তুলনায় অনেক বেশি। কৃষকরা এটি চাষ করে বেশ লাভবান হতে পারে। গতবছর কুমারখালীতে ক্যাপসিকাম চাষ করে সবুজ নামের এক যুবক বেশ লাভবান হওয়ায় এলাকার অনেক কৃষক এ চাষে আগ্রহ দেখিয়েছেন। আমরা কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর মাধ্যমে এ ক্যাপসিকাম চাষে উদ্বুদ্ধ করছি।
কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান জানান, বর্তমানে কৃষকরা লাভজনক কৃষির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এখন ক্যাপসিকাম চাষের জন্য উপযুক্ত সময়। তাই কৃষকরা মাঠে জমি তেরী ও চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছে। কুষ্টিয়া জেলার জন্য ক্যাপসিকাম চাষ একটি সম্ভাবণাময় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :