ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারি, ২০২৫

ঘুষ নিয়ে চাকরি না দেওয়ায় অধ্যক্ষ ও শিক্ষানুরাগী কারাগারে

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২৫, ০৩:১১ পিএম

ঘুষ নিয়ে চাকরি না দেওয়ায় অধ্যক্ষ ও শিক্ষানুরাগী কারাগারে

ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের দৌলতপুর ছালেহিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা ১০ লাখ টাকার ঘুষ দিয়েও অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে চাকরি না পেয়ে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোস্তাফিজুর রহমান  ও ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষানুরাগী সদস্য মো. আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে কলাপাড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৭ জানুয়ারি ২০২৪ মামলা দায়ের করেন চাকরিপ্রার্থী মো. মাহবুব এলাহী।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) নির্দেশনা দিয়েছেন। জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই (নিরস্র) সঞ্জীব কুমার সরকার তদন্তে সত্যতা পেয়েছে এই মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে আসামিরা আদালতে হাজির হয়ে আপোষ মীমাংসার শর্তে জামিন গ্রহণ করেন।

কিন্তু আসামিরা আমার পাওনা ১০ লাখ টাকা দিবো দেই দিচ্ছি বলিয়া কালক্ষেপন করতে থাকে। পরে পটুয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট  আদালতে ৬ জানুয়ারি ২০২৫ সোমবার আগাম জামিন চাইলে ম্যাজিস্ট্রেট ইউসুফ আলী জামিন নামঞ্জুর করিয়া কারাগারে প্রেরণ করে।

মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, দৌলতপুর  ছালেহিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা  অধ্যক্ষ প্রিন্সিপাল, ভাইস প্রিন্সিপাল,অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, নিরাপত্তা কর্মী, নৈশ প্রহরী  ও আয়া পদে নিয়োগের জন্য ১৮ আগস্ট ২০২৩ সালে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে যত নিয়মে আবেদন করেন মো. মাহবুব ইলাহী। পরে মাহবুবের কাছ থেকে তার পিতা মো. আব্দুল হাই উপস্থিতিতে চাকরি দেওয়ার শর্তে মাদ্রাসার উন্নয়নের কথা বলে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ  মোস্তাফিজুর রহমান ৮ লাখ টাকা ও শিক্ষানুরাগী  আব্দুল মান্নানকে ২ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন। পরবর্তীতে ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখ নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্র দেন। কিন্তু সেখানে মাদ্রাসা শিক্ষানুরাগী সদস্য আব্দুল মান্নান তার ছেলে মো. ফয়সাল শরীফকে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে এবং অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে প্রবেশপত্র দেওয়া হয়। ওই পদেও মাহাবুব ইলাহীকে চাকরি দেওয়া হয়নি।

পরে ঘুষ নিয়ে  নিয়োগ বাণিজ্য করায় অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন পত্র পত্রিকা প্রকাশ হলে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজি হাবিবুর রহমান নিয়োগ বাতিলের নির্দেশনা প্রদান করেন।

শুধু অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে নয়। বাকি ৬টি পদ প্রিন্সিপাল, ভাইস প্রিন্সিপাল, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, নিরাপত্তা কর্মী, নৈশ প্রহরী  ও আয়া পদে  ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ এনে কলাপাড়া প্রেসক্লাব সংবাদ সম্মেলন ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ৬ জন  প্রার্থী। 

এ বিষয়ে মাহবুব এলাহী অভিযোগ করে বলেন অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে চাকরি পাওয়ার জন্য জমি বিক্রি, ব্যাংক লোন ও  বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে সুদে টাকা এনে পর্যায়ক্রমে অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান ও মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষানুরাগী মান্নানের কাছে ১০ লাখ টাকা প্রদান করি। কিন্তু আমার চাকরি তো পেলামই না। উল্টো পাওনা টাকা চাইতেই বিভিন্ন মামলা, গুম খুনের হুমকি দিতেছে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। পরিবার নিয়ে দু‍‍`বেলা খাবার যোগাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে সুদের জন্য টাকা পাওনাদারেরা তাগাদা দিচ্ছি। এখন আমার আত্মহত্যা হত্যা ছাড়া কোন পথ নাই। 

আরবি/জেডআর

Link copied!