ঢাকা রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সাগরে জলদস্যু আতঙ্কে জেলেরা

এস কে লিটন, কুতুবী

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২৪, ০৭:৫৩ পিএম

সাগরে জলদস্যু আতঙ্কে জেলেরা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

চট্টগ্রাম: দেশের অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণীর লোক অর্থের লোভে সাগরে জলদস্যুতার কাজে নেমে পড়েছে। দেশের বঙ্গোপসাগরের উপকূল ১৯ জেলা জুড়ে বিশাল এলাকার এক শ্রেণীর জনগোষ্টি সাগরে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত। জীবন জীবিকার তাগিদে জেলেরা নৌকা নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়। আবহাওয়া প্রতিকুল পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে থাকলে জেলেরা ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ ধরতে নেমে পড়ে বঙ্গোপসাগরে। বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আহরণ করে দেশে আমিষ জাতীয় খাদ্যের চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছে এ সব জেলেরা। এতে জেলেরা দেশে বড় ধরণের অর্থনৈতিক জোগান দিচ্ছে। দেশে রাজনৈতিক অস্তিরতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে অস্ত্রধারী জলদস্যরা সাগরে মাছ ধরার ট্রলারের উপর হামলা চালিয়ে তাদের সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যায়। ইলিশ প্রজনন হিসেবে ২০ মে হতে ২৩ জুলাই মোট ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা বন্ধ ছিল। জেলেরা প্রতিটি ট্রলারসহ কোটি টাকার সমপরিমাণ পুঁজি দিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়। আহরিত মাছ যদি জলদস্যুরা অস্ত্রের মুখে  লুট করে নিয়ে যায় তখন তাদের আর করার কিছু থাকে না। সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া একাধিক ফিশিং ট্রলারের মাঝির সাথে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি যারা বিগত দিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হাতে আত্নসমর্পণ করেছে তারা আবার এসব জলদস্যুতার কাজে নেমে পড়েছে। তার সাথে ইদানিং কিছু যুব সমাজ তাদের সাথে যোগ দিয়েছে। ইতিমধ্যে থানা ও মালিকানা যেসব অস্ত্র লুট হয়েছে এসব অস্ত্রগুলো দস্যুতাসহ বিভিন্ন অপরাধ কাজে ব্যবহার হচ্ছে।

উপকূলের ফিশিং ট্রলার মালিক আব্বাস জানান, সাগরে জলদস্যু নির্মূলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে আটক এবং আত্নসমর্পনে প্রায়ই জলদস্যু জলদস্যুতা পেশা ছেড়ে সামাজিক সুশৃঙ্খল পেশা বেঁচে নিয়ে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। ইদানিং দেখা যাচ্ছে কিছু সংখ্যক জলদস্যু তারা পূর্বের পেশায় জড়িয়ে পড়েছে। বঙ্গোপসাগর থেকে জেলেরা ইলিশ ধরে উপকূলে ফিরে আসার পথে আক্রমন করে মাছ, জাল, ডিজেল,মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ইলিশের ভরা মৌসুমে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়লেও অনেক জেলে ভয়ে সাগরে মাছ ধরতে যাচ্ছে না। ফিশিং ট্রলার একবার সাগরে মাছ ধরতে যেতে প্রায় ১৫/২০ লাখ টাকার (খাবার, বরফ, বিভিন্ন সরঞ্জাম মালামাল) প্রয়োজন হয়। একবার জলদস্যুদের কবলে পড়লে দ্বিতীয়বার সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার অর্থ যোগাতে হিমসিম খেতে হয় ট্রলার মালিককে। অবশ্য জেলেদের দাবী সাগরে জলদস্যুতা নির্মূল করতে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের টহল জোরদার করতে হবে। 

এ দিকে সুন্দরবন, কুয়াকাটা, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, হাতিয়া, নোয়াখালী, স্বন্দ্বীপ, আনোয়ারা, কুতুবদিয়া, বাঁশখালী, পেকুয়া, মহেশখালী, উখিয়া, টেকনাফ উপকূলের চিহৃিত জলদস্যুরা একে অপরের সাথে যোগাযোগ করে একাধিক ট্রলার নিয়ে নির্বিচারে সাগরে জলদস্যুতার কাজে নেমে পড়েছে। অবশ্য এসব অপরাধ দমনে দেশে অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চালানো দরকার বলে সচেতন মহল অভিমত ব্যক্ত করেন।

আরবি/জেডআর

Link copied!