ঢাকা রবিবার, ০৫ জানুয়ারি, ২০২৫

শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত কুড়িগ্রামের জনজীবন

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩, ২০২৫, ১০:৩২ এএম

শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত কুড়িগ্রামের জনজীবন

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

দেশের উত্তরের সীমান্তবর্তী প্রান্তিক জেলা কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। তাপমাত্রা ক্রমেই নিম্নগামী হচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরে বেড়েই চলছে শীতের প্রকোপ। উত্তর দিক থেকে বয়ে আসা হিমালয়ের হিম বাতাসে বেড়েছে মানুষের দূর্ভোগ। সেই সাথে ঘন কুয়াশায় দূর্ঘটনা এড়াতে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। এ অবস্থায় কনকনে শীতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে জেলার অসহায় ও খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী শীতার্ত মানুষরা।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকাল ৬টায় জেলার রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

স্থানীয় রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র বলছে, এ জেলা থেকে হিমালয়ের নিকটবর্তী হওয়ায় প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও শীত মৌসুমে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রিতে ওঠানামা করার পর আজ এ জেলার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে এ অঞ্চলে হিম বাতাসে ঝরছে শীতের পারদ। শীতের তীব্রতায় জর্জরিত শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধরা। দুূর্ভোগে বেড়েছে গবাদি পশুগুলোকে নিয়েও।

লাগাতার শীতের কারণে দুর্ভোগ বেড়েছে খেটে খাওয়া মানুষদের। ঠান্ডায় ঠিকমতো কাজ না মেলায় পরিবারের খাবারের যোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে অনেকেই।  প্রয়াজন ছাড়া বিত্তবানরা ঘর থেকে বের না হলেও জীবিকার তাগিদে নিম্ন আয়ের মানুষজন শীত উপেক্ষা করেই ছুটছেন কাজের সন্ধানে।

কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুরের ঘোড়ার গাড়ি চালক আয়নাল মিয়া বলেন, "আজ প্রচন্ড শীত পরেছে। এই শীতে ঘোড়ার গাড়িতে উঠে ঠান্ডা বাতাসে হাত-পা অবশ হওয়ার উপক্রম হচ্ছে। শীত ও ঘন কুয়াশায় ঘোড়া গুলো চলতে পারছে না। ভাড়ায় মিলছে না ঠিকমতো! কিন্তু উপায় তো নেই!"

অন্যদিকে টানা শীতে চরম দূর্ভোগে পরছেন জেলার সাড়ে চারশতাধিক চর ও দ্বীপ চরের মানুষ। বিশেষ করে বিপাকে পরছেন চরাঞ্চলের কৃষিশ্রমিকরা। এসব অঞ্চলের মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের গৃহবধু আমেনা, জমেলা ও আছিয়া বলেন, ‍‍`ঠান্ডায় আমাদের অবস্থা ভয়াবহ! কনকনে ঠান্ডায় হাত-পা কাঁপছে। সাংসারিক কাজকাম করা খুবই অসুবিধে হচ্ছে। শীতবস্ত্রের অভাবে খড় জ্বালিয়ে ঠান্ডা নিবারনের চেষ্টা করছি।"

শীতের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে, অ্যাজমা, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট সহ শীতজনিত বিভিন্ন রোগ। এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর আউটডোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন লোকজন।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার বলেন, "শীতার্তদের জন্য মোট ১২ হাজার কম্বল ও ৫৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। তারমধ্যে ২৭ লাখ টাকার শীতবস্ত্র ও ১২ হাজার কম্বল বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। অবশিষ্ট টাকারও শীতবস্ত্র বিতরণের প্রক্রিয়া চলছে।"

রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, "কয়েকদিন তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করার পর আজ জেলা জুড়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্য প্রবাহ। যা আরও দুই-তিন অব্যাহত থাকতে পারে।

আরবি/জেআই

Link copied!