ঢাকা বুধবার, ০৮ জানুয়ারি, ২০২৫

প্রতিদিন ১ মণ দুধের চা বিক্রি করেন রায়গঞ্জের রবিউল

রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২৫, ০৯:০৭ পিএম

প্রতিদিন ১ মণ দুধের চা বিক্রি করেন রায়গঞ্জের রবিউল

রবিউল ইসলাম। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ছোটবেলায় পড়াশোনায় মন না থাকলেও ব্যবসার প্রতি ব্যাপক আগ্রহ ছিল সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা রবিউল ইসলামের। তার বাড়ি উপজেলার ধুবিল ইউনিয়নের আমশড়া গ্রামে। প্রায় ১০ বছর ধরে স্থানীয় বাজারে চা বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন তিনি। তার দোকানে এখন চা পানকারীদের ভিড় লেগেই থাকে। চা তৈরিতে তার দোকানে দিনে লাগে এক মণ দুধ। আর এ চায়ের দোকানেই তার ভাগ্য বদলে গেছে।

উদ্যোক্তা রবিউল ইসলামের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, চা বানাতে ব্যস্ত তিনি। কারো সঙ্গে ৫ মিনিট নীরবে কথা বলবেন, সেই ফুরসত নেই তার। কাজের ফাঁকেই কথা হয় তার সঙ্গে। চা বানানোর সঙ্গে সঙ্গে এ প্রতিবেদক সাইদুল ইসলাম আবিরের সাথে নিজের জীবনের সংগ্রামের কথা বলছিলেন সফল এই চা-ব্যবসায়ী।

চা বিক্রেতা রবিউল বলেন, পড়াশোনা ভালো লাগত না। বাবা-মা কত চেষ্টা করেছেন কিন্তু আর স্কুলমুখী হইনি। এরপর আমশড়া জোড় পুকুর বাজারে চা দোকান দিয়ে নতুন পথচলা শুরু হয় আমার। প্রথম দিকে তেমন বেঁচাকেনা তেমন একটা হতো না দোকানে। তবে নিরাশ না হয়ে মনোযোগ দিয়েছিলাম কাজের প্রতি। বিশ্বাস ছিল গ্রাহকদের জন্য ভালো চা তৈরি করতে পারলে দোকানে ক্রেতাদের উপস্থিত বাড়বে। ধীরে ধীরে আমার চায়ের সুনাম ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এখন প্রতিদিন বহু কাপ চা বিক্রি করি। চা তৈরিতে প্রতিদিন আমার দরকার হয় ১ মণ দুধ। গড়ে প্রতিদিন ৮-১০ হাজার টাকার চা বিক্রি করে পরিবার নিয়ে ভালোভাবে সংসার চালাচ্ছেন রবিউল ইসলাম।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দোকানের একপাশে বিশাল পাতিলে জ্বাল দেওয়া হয় দুধ। গরম দুধ, চিনি ও চায়ের লিকারের মিশ্রণে মুহূর্তেই তৈরি হয় মজাদার চা। তার দোকানে বিভিন্ন রকমের চা তৈরি হয়। তার মধ্যে রং চা, গাভির দুধের চা, মালাই চা  বিক্রি হচ্ছে। সুস্বাদু চা তৈরি করায় দাম নিয়ে ক্রেতাদের কোনো অভিযোগ নেই। সারা দিনে মোটামুটি চা বিক্রি হলেও সন্ধ্যার পর দোকানটিতে দেখা যায় ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। এ সময় ভিড় ঠেলে চা খেতে হয় চা প্রেমীদের। অনেকে জায়গা না পেয়ে বাইরে দাঁড়িয়েই বন্ধুদের সঙ্গে খোশগল্প করতে করতে চা পান করেন। সকাল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত এখন তার চায়ের দোকানে মানুষের ভিড় লেগেই থাকে। প্রতিদিন দূর থেকে মানুষ আসে তার দোকানে।

চা খেতে আসা আসা সোনাখাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা লোকমান হোসেন বলেন, আমি কাজের ফাঁকে এই দোকানে এসে চা খেলাম। দোকানটা যেমন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, তেমনি চা খেতেও মজা। এ দোকানের মালাই চা খেতেই বেশি পছন্দ করেন তিনি।

মেহেদী হাসান শামীম নামে আরেক ক্রেতা বলেন, ‘অন্য দোকানের চেয়ে এ দোকানের চায়ের স্বাদ আলাদা। অবসর পেলেই এ দোকানে চা খেতে আসি। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ভালো বলেই এ দোকানে মানুষের আনাগোনা বেশি।’ চা পান করতে আসা অনেকেই বলেন, ব্যক্তিগত আড্ডা, রাজনৈতিক আলোচনা, ব্যক্তিগত বা কখনো পারিবারিক বিরোধের নিষ্পত্তিও হয় এ চায়ের দোকানে।

আরবি/জেডআর

Link copied!