ঢাকা রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫
১৬ বছর পাননি এক মুঠো চাল

প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে রহিমার ঠাঁই হলো গোয়ালঘরে

গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০২৫, ০৪:২৪ পিএম

প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে রহিমার ঠাঁই হলো গোয়ালঘরে

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

মোর্শেদ আলি মারা গেছেন ১৬ বছর আগে। রেখে গেছেন- স্ত্রী রহিমা বেগম, মেয়ে ও প্রতিবন্ধী ছেলেকে। ধারদেনায় কোনো রকমে মেয়ের বিয়ে হয়েছে। পরিবারের উপার্জনক্ষম কেউ নাই। ফলে অভাবে দিন কাটছে তাদের। স্বামীর ভাগে পাওয়া সম্পত্তি ভোগ করতে পারছেন না তারা। অভিযোগ করেছেন, স্বামীর রেখে যাওয়া সম্পত্তি বুঝিয়ে দেন না আত্মীয়রা। ফলে খেয়ে না খেয়ে প্রতিবেশীর গোয়ালঘরে কাটছে তাদের দিন।

রোববার (১৯ জানুয়ারি) কথা হয় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বেকাসহারা গ্রামের বাসিন্দা রহিমা বেগমের সঙ্গে।

রহিমা বেগম বলেন, ঘরসহ অনেক কৃষি জমি স্বামী মোর্শেদ রেখে গেছেন। তার মৃত্যুর পর থেকেই ভাই-ভাতিজাসহ অন্যান্য আত্মীয় স্বজনরা তা দখল করে রেখেছেন। আমার ছেলে প্রতিবন্ধী, সে মারা গেলে সম্পদের ভাগ তারা পাবে। কিন্তু ১৬ বছরে এক মুঠো চাল দিয়েও আমাদের সহযোগিতা করেনি তারা।

তিনি বলেন, স্বামীর রেখে যাওয়া একমাত্র মাটির ঘরটি গতবছরের বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে। স্বামীর ভাইদের কাছে সাহায্য চাইলেও তারা বারবার ফিরিয়ে দিয়েছে। আমি আমার অসহায়ত্বের কথা প্রতিবেশীর কাছে জানালে তারা আমাকে গোয়াল ঘরে থাকতে দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, দিনে মাছির যন্ত্রণা, রাতে মশার কামড়ে থাকতে কষ্ট হচ্ছে। ছেলের শরীরে ক্ষত দেখা দিয়েছে, চিকিৎসার সামর্থ্য নেই। নিজেও ঠিকমতো খেতে পারি না। ধার-দেনা করে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি।

আশ্রয় দেওয়া প্রতিবেশী মানিক মিয়া বলেন, আমি দুই রুমের ঘরে বাস করছি। বারান্দার একটি অংশে গরু রাখি। হঠাৎ রহিমা তার অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে আশ্রয় চান। প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে কোথায় যাবে, কি করবে? এসব চিন্তা করে ফিরিয়ে দিতে পারিনি।

তিনি জানান, ওই ঘরের একটি অংশে চৌকি দিয়ে তাদের থাকার ব্যবস্থা করেছি। রহিমার স্বামীর সম্পদ যদি তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়; তাহলে তার অসহায় হয়ে থাকতে হবে না। নিজের সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও গোয়ালঘরে থাকা অমানবিক।

অভিযোগের বিষয়ে রহিমার ভাসুরের ছেলে মাহবুব হাসান বলেন, জমির ভোগদখল দিচ্ছি না; অভিযোগ সঠিক নয়। তবে কাগজপত্র ও ভাগ নামার বিভিন্ন শরীকদের মধ্যে মতবিরোধ থাকায় বিক্রি করতে পারছেন না তারা। মূলত আমরা কেউ তার সম্পদ আটকে রাখিনি।

আরবি/এইচএম

Link copied!