বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০২৪, ০৩:২৮ পিএম

১১ বছরেও রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের স্থায়ী ক্যাম্পাস হয়নি

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০২৪, ০৩:২৮ পিএম

১১ বছরেও রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের স্থায়ী ক্যাম্পাস হয়নি

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

মনিরের তাজা রক্ত দিয়ে গড়া রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস ১১ বছরেও নির্মাণ হয়নি। কলেজ প্রতিষ্ঠাকাল হতেই রাঙামাটি সদর জেনারেল হাসপাতালের করোনারি ভবনে অনেক প্রতিক‚ লতা পেরিয়ে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। মেডিকেল কলেজটিতে রয়েছে নানান সমস্যা। যেমনি রয়েছে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা তেমনি রয়েছে শিক্ষকদের নানাবিধ সমস্যা। জোড়াতালি দিয়ে চলছে মেডিকেল কলেজটি। নেই ফরেনসিভ বিভাগের শিক্ষক এবং নেই যন্ত্রপাতি ও প্যাক্টিক্যাল ল্যাব। পূর্বে প্রতি ব্যাচে ৫০ জন ভর্তি হতো আর এখন ভর্তি হচ্ছে ৭৫ জন।
কিন্তু বাড়েনি কোন কিছুই। রয়েছে জনবল সংকট। তার পরও সমতলের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে মেডিকেল কলেজটি। অন্যান্য মেডিকেল কলেজের তুলনায় লেখাপড়ার মান অনেক ভাল। তবে বিগত ১১ বছর পর আশার আলো দেখা যাচ্ছে। মেডিকেল কলেজের ভবন নির্মাণের পথ অনেকটা এগিয়ে গেছে। এখন ডিপিপি একনেকে পাশ হলেই একাডেমিক ভবনসহ অন্যান্য কাজ শুরু করা যাবে। রাঙামাটি শহরের মধ্যে হ্যাচারি পাড়া এলাকায় ২৫ একর ৯৬ শতাংশ জমি অধিগ্রহন করা হয়েছে মেডিকেল কলেজ নির্মানের জন্য। যার অধিগ্রহন মূল্য প্রায় ৯৩ কোটি টাকার মত। মেডিকেল কলেজ ভবন নির্মাণ হয়ে গেলে এই পাহড়ি জনপদে স্বাস্থ্য খাতে আমূল পরিবর্তন আসবে।

২০১৪ সালে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয়। ২০১৫ সালের ১০ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রা শুরু হয়। ওই দিন মেডিকেল কলেজের প্রথম সূচনায় বিরোধীতাকারী উপজাতি সম্প্রদায়ের সংঘাতে প্রাণ গেল রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলা ৩নং বুড়িঘাট এলাকার দিন মুজুর মনিরের। মেডিকেল চালু হয়েছে কিন্তু নিহত মনিরের পরিবার পরিজনের কেউ খবর রাখেনি।

রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. প্রীতি প্রসূন বড়ুয়া বলেন, রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ ও রাঙামাটি নাসিং কলেজের স্থাপন প্রকল্পের প্রস্তাবনা (ডিপিডি)স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে গেছে। সর্ব শেষ খবর যেটা হলো স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিভাগের সচিবের স্বাক্ষরের পরে অর্থ মন্ত্রনালয় যাবে। তার পর সে প্রকল্প একনেকে পাশ হলেই মেডিকেল কলেজ প্রকল্পের কাজ শুরু হবেক। আশা করি খুবশিগ্গরই কাজ শুরু হবে। এখন ভবন নির্মাণে তেমন কোন জটিলতা নেই। যেহেতু অস্থায়ী ভবনে আমরা শ্রেণি কার্যক্রম চালাচ্ছি সেহেতু অনেক ধরনের সমস্যা বিরাজমান। আমাদের প্রধান সমস্যা হলো শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পারছে না। শিক্ষকদের বসার জায়গা নাই, শিক্ষকদের আবাসিক ব্যবস্থা নাই। ছাত্র-ছাত্রীদের ছাত্রাবাস নাই।

৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অর্নব চাকমা বলেন, আমাদের বড় সমস্যা হচ্ছে স্থায়ী ক্যাম্পাস। স্থায়ী ক্যাম্পাস নিয়ে আমরা অনেক আন্দোলন করেছি। আমি একাডেমিক ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় পর্যন্ত গিয়েছি। সবাই শুধু আশার বাণী শুনায়। আমাদের ৫টি ক্লাস রুম রয়েছে প্রত্যেক ক্লাস রুমে আগে ৫০জন শিক্ষার্থী ক্লাস করে। এবার থেকে প্রত্যেক ক্লাসে ৭৫জন করে ক্লাস করছে। একটা বড় কনফারেন্স রুম আছে সেখানেও আমাদের ক্লাস হয়। দেখা যায় কনফারেন্স রুমে সভা ও মিটিং অন্য কোন প্রোগ্রাম হলে তখন ক্লাস বন্ধ থাকে। এখন অধ্যক্ষের মাধ্যমে দ্রæত স্থায়ী ক্যাম্পাস হবে শুনছি। বাস্তবায়ন হলে তো ভালো, না হলে শিক্ষার্থীরা ফের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে আন্দোলনে যাবে।

শিক্ষার্থী তানভীর হোসেন ৭ম ব্যাচ বলেন, মেডিকেল কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ হলেই সব সমস্যার সমাধান হবে। বর্তমানে মেডিকেলে পর্যাপ্ত টিচার আছে তবে সাবজেক্ট ওয়ারি টিচার নাই।  ফার্মাক্লোজি টিচার ও ফরেনসিভ টিচার নাই। অডিটরিয়াম, শিক্ষার্থীদের যাত্রাবাস, টিচারদের আবাসন সমস্যা রয়েছে।

তাসনিয়া আহমেদ যুতিকা ৮ম ব্যাচ বলেন, লাইব্রেরিতে আমাদের যে সকল বই থাকার প্রয়োজন ওই সব বই নাই। আগে প্রতি ব্যাচে ৫০ জন ছিল বর্তমানে প্রতি ব্যাচে ৭৫জন শিক্ষার্থী রয়েছে। লাইব্রেরি আরো বড় হলে সবাই পড়া লেখার সুযোগ সুবিধা পেত। লাইব্রেরিটি আরো বড় হলে ভাল হতো।

আফিফা আক্তার তৃতীয়া বলেন, যে পরিমান ল্যাবরেটরি আমাদের প্রয়োজন ছিল সে পরিমান ল্যাবরেটরি নাই। ল্যাব হলো একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্যাকট্রিক্যাল সরঞ্জামি আরো প্রয়োজন। টেকনিশিয়ান নাই, প্যাকট্রিক্যাল রুম নাই। অন্যান্য মেডিকেল কলেজে যে ভাবে প্যাকট্রিক্যাল করছে আমরা সে ভাবে করতে পারছি না। তার পরও রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা ভাল রেজাল্ট করছে।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে মেডিকেল কলেজে ৫টি ব্যাচে ২৭৮ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এছাড়াও ৩১ জন ইন্টার্নি ডাক্তার রয়েছে। শিক্ষক রয়েছে ৭৭ জন আর কর্মচারি রয়েছে সব মিলে ৩১ জন। নেই রেজিস্টার, সহকারি রেজিস্টার ও ফরেনসিভ ডাক্তার। নেই মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। মেডিকেল ওয়ার্ড কার্যক্রম আরো বৃদ্ধি করা দরকার। নানান সমস্যায় জর্জরিত রাঙামাটি মেডিকেল কলেজটি।

আরবি/জেডআর

Link copied!