ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বিক্ষোভের মুখে দায়িত্ব গ্রহণের আড়াইঘন্টা পর অধ্যক্ষের পদত্যাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪, ০৭:০১ পিএম

বিক্ষোভের মুখে দায়িত্ব গ্রহণের আড়াইঘন্টা পর অধ্যক্ষের পদত্যাগ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও ছাত্রদলের সহযোগিতায় দায়িত্ব গ্রহণের আড়াইঘন্টা পর পদত্যাগ করলেন রাজশাহী কলেজের নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. আনারুল হক প্রাং। সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর দুইটার দিকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে কলেজের উপাধ্যক্ষের কাছে প্রদান করেন তিনি। এর আগে, বেলা পোনে ১২ টার দিকে পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও ছাত্রদলের সহযোগিতায় প্রশাসন ভবনে প্রবেশ করে দায়িত্ব গ্রহন করেন নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ।

সরজমিনে দেখা যায়, বেলা পোনে ১২ টার দিকে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবিসহ নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ ক্যাম্পাসে আসেন। শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ক্যাস্পাস ছাড়েন। এরপর ১৫-২০ জন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেয়া শিক্ষার্থীদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। এ সময় নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ কক্ষে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহন করেন।

এ খবর পেয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেঁটে পড়ে। দলে দলে প্রশাসন ভবনের সামনে এসে একত্রিত হন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা চলে যায়। এরপর শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পদত্যাগ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তায় ক্যাম্পাস ছাড়েন প্রফেসর ড. মো. আনারুল হক প্রাং। রাজশাহী কলেজের সদ্য বিদেয়ী অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা: আব্দুল খালেকের পদত্যাগের পর গত ৯ সেপ্টেম্বর শিক্ষামন্ত্রণালয়ের একটি বিজ্ঞপ্তিতে নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে নিযুক্ত করা হয় প্রফেসর ড. মো: আনারুল হক প্রাংকে। এরপর থেকে রাজশাহী কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এর বিরোধিতা করে অধ্যক্ষের যোগদান ঠেকাতে আন্দোলন করতে থাকে। নবনিযুক্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে বোর্ডের ১৮ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ২০২০ সালে তিনটি মামলা করে দুদক। দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনেও এসব তথ্য উঠে আসে। আত্মসাতের সমপরিমাণ টাকা বোর্ডের ফান্ডে জমা দেওয়ার মাধ্যমে আসামিরা মামলা থেকে অব্যাহতি পান। এতকিছুর পরও শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান হওয়ার তদবিরে উঠে পড়ে নামেন এই বিতর্কিত শিক্ষক। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমেও উঠে আসে। রাজশাহী বোর্ড চেয়ারম্যানের স্বপ্ন পূরণ না হলেও তৎকালীন মেয়র লিটনের সুপারিশে পেয়েছেন বুদ্ধিজীবী কলেজের অধ্যক্ষের চেয়ার। সেই বিতর্কিত, দুর্নীতিবাজ, স্বৈরাচার সরকারের দালাল, শিক্ষক নামের পা চাটা গোলাম অ্যাখ্যা দিয়ে দেশসেরা রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ পদায়নের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় শিক্ষার্থীরা। যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করছেন ড. আনারুল হক প্রাং।

আন্দোলনের সমন্বয়কারী মহুয়া জান্নাত মৌ বলেন, রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীরা যোগ্য অধ্যক্ষ চাই৷ খুনি হাসিনার কোন দোসরকে আমাদের পবিত্র ক্যাম্পাসে জায়গা দেয়া হবে না। এ কারণেই শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছে। শিক্ষার্থীরা যখন আন্দোলন করছে হাসিনার দোসরদের বিরুদ্ধে সে সময় ছাত্রদলের কতিপয় নেতারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এটা কখনোই কাম্য নয়।

ছাত্রদলের কলেজ শাখা আহ্বায়ক আবির বলেন, এ আন্দোলনে আমরা প্রশাসন ভবনে তালা দেয়ার আগে পর্যন্ত ছিলাম। এখন আমরা নবনিযুক্ত অধ্যক্ষকের যোগদানের পক্ষে,  সে যে দলেরই হোক। কারণ অধ্যক্ষ না থাকায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দূর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছেন।

আরবি/জেডআর

Link copied!