নওগাঁর বদলগাছীতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির পূর্বের ডিলার বাতিল করে নতুন ডিলার নিয়োগ না হতেই গত ২৩ অক্টোবর অবৈধ্য ভাবে চাল উত্তোলন করার আদেশ প্রদান করেছেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক। যা পরের দিন ২৪ অক্টোবর সকাল ১০ টা হতে খাদ্যগুদাম থেকে চাল উত্তোলন করা হয়।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি নিতিমালা-২০২৪ সুত্রে জানা যায়, যে সকল উপজেলায় ডিলার বাতিল করা হয়েছে সেই সব উপজেলায় দ্রুত ডিলার নিয়োগ করে সংশ্লিষ্ট খাদ্য মন্ত্রনালয়কে অবহিত করতে হবে। সেই সুবাদে বদলগাছী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা সাবরিন মোস্তারি গত ৭ অক্টোবর পূর্বের ১৬ জন ডিলারকে বাতিল করে গত ১৪ অক্টোবর ডিলার নিয়োগের নোটিশ প্রদান করেন। নোটিশ অনুযায়ী উপজেলার প্রায় ৬৬ জন খাদ্যবন্ধব ডিলারশিপ প্রাপ্তির আবেদন করেন। আবেদনের শেষ দিন ছিল গত ২১ অক্টোবর বিকেল ৪ টা পর্যন্ত। আবেদনের সময় শেষ হওয়ার পর বিকেল সাড়ে ৪ টায় উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটির সভাপতি ইউএনও এবং কমিটির অন্যান্য সদস্য সহ ইউএনওর কার্যালয়ে মিটিং বসেন।
সেখানে ডিলারশিপ প্রাপ্তির ৬৬ টি আবেদন যাচাই-বাছাই চলছিল। এমন সময় স্থানীয় লোকজন ইউএনওর কার্যালয়ে প্রবেশ করে ইউএনওর সাথে বাকবিতণ্ডতায় জড়িয়ে পরে। ফলে ঐ দিন ডিলারশিপ প্রাপ্তির আবেদন যাছাই-বাছাই ভেস্তে যায়। ২ দিন পর সন্ধ্যায় ইউএনওর কার্যালয়ে ইউএনও এবং খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাবরিন মোস্তারি অতি গোপনে আবেদন পত্র গুলি যাচাই বাছাই করে। তবে অদ্য ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত কোন ডিলার নিয়োগের তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।
অপর দিকে খাদ্যবান্ধব নিতিমালা ২০২৪ মোতাবেক ডিলার নিয়োগের পর ডিলারের মাধ্যমে ব্যাংকে টাকা জমা করে চালান কপি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের নিকট জমা করা হলে তিনি খাদ্যবান্ধব চাল উত্তোলনের আদেশ বা ডিও খাদ্য গুদামে প্রেরণ করবেন। অতঃপর পুষ্টি ডিলার চাল গুলো উত্তোলন করে নিজস্ব মিলে নিয়ে গিয়ে পুষ্টি মিশ্রনের পর খাদ্যবান্ধব ডিলারদের পয়েন্টে পয়েন্টে পৌঁছে দিবে। তার পর ডিলারেরা উপকার ভোগীদের নিকট ১৫ টাকা কেজি দরে সুলভ মুল্যে বিক্রয় করবেন।
এই সব নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করেই উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাবরিনা মোস্তারি পুষ্টি ডিলার মো. আলী এগ্রো. কে গত ২৩ অক্টোবর খাদ্যগুদাম থেকে চাল উত্তোলনের ডিও বা আদেশ দিয়েছেন।
যা সম্পূর্ন নিয়মনীতি বর্হিভূত বলে পূর্বের ডিলার ও ডিলারশিপ প্রাপ্তির আবেদনকারীরা জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কিছু ডিলারশিপ প্রাপ্তির জন্য আবেদন কারীরা জানিয়েছেন, ডিলার নিয়োগ না হতেই খাদ্যবান্ধবের চাল উত্তোলন বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে।
আবার সচেতন মহল মনে করছেন, গোপনে গোপনে তার পচ্ছন্দের ব্যাক্তিকে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নে ২ টি করে মোট ১৬ জন ডিলার ব্যাগ ডেটে নিয়োগ কমপ্লিট করে রেখেছেন। এখন জন সাধারণের রোশানলে পরার ভয়ে প্রকাশ করছেন না। সময় মত প্রকাশ করবেন। কিন্তু ডিলার নিয়োগের পূর্বে চাল উত্তোলনের আদেশ বিষয়টি নিয়ে গত শনিবার ২৭ অক্টোবর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাবরিন মোস্তারীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো ফরহাদ খন্দকার এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মিলারদের জামানতের টাকা থেকে চাল উত্তোলন করা হয়েছে। যাতে ডিলার নিয়োগের পর দ্রুত সময়ের মধ্যে ভোক্তাদের কাছে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল পৌছানো যায়। এ বিষয়ে আমার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করা আছে।
উপজেলা খাদ্য বান্ধব কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহবুব হাসান এর নিকট জানতে চাইলে তিনি উপজেলা ফুড অফিসারের সাথে কথা বলতে বলেন।
আপনার মতামত লিখুন :