কাঁচামাল না থাকায় চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্প গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের ছয়টি কারখানা ও বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে চিনি ও ইস্পাত কারখানাও রয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে কারখানাগুলো বন্ধ ঘোষণার পর শ্রমিকদের বিক্ষোভের খবর আসে। তবে বেতন-ভাতা দেওয়ার কথা বলে তাদের অপেক্ষা করতে অনুরোধ করা হয়।
বুধবার থেকে এসব কারখানা বন্ধ থাকবে বলে এদিন দুপুরে নোটিসে জানিয়ে দেওয়া হয়।
এস আলম গ্রুপের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ হোসেন বলেন, কাঁচামাল না থাকায় কারখানাগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের আমলে সুবিধাভোগী ব্যবসায়িক গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত এস আলম গ্রুপ সরকার পতনের পর থেকে ব্যবসা ও কারখানা চালু রাখতে অর্থ সংকটে পড়েছে।
বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে ও ভিন্ন নামে বিপুল অঙ্কের ঋণ নেওয়া শিল্পগ্রুপটির চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ বিদেশে চলে যাওয়ায় এখন নতুন করে ঋণ দেওয়া হচ্ছে না এ গ্রুপের কোম্পানিগুলোকে। এতে দৈনন্দিন কাজ চালাতেও চাপে পড়েছে কোম্পানিটি।
অনিয়ম ও জালিয়াতির মাধ্যমে নেওয়া ঋণ নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে এস আলম হিসেবে পরিচিত সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা তদন্তও শুরু করেছে।
মঙ্গলবার গ্রুপটির মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান বোরহান উদ্দিনের সই করা নোটিসে কারখানাগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এতে ‘অনিবার্য কারণবশত’ আগামী বুধবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারখানা ও বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ থাকার কথা ঘোষণা করা হয়। তবে নিরাপত্তা বিভাগ, ডেলিভারি সেকশন ও জরুরি বিভাগগুলো খোলা থাকবে বলে নোটিসে বলা হয়েছে।
বন্ধ ঘোষণা করা কারখানা ও বিদ্যুৎকেন্দ্র হল- এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্ট লিমিটেড, এস আলম পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড, চেমন ইস্পাত লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেড ও এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেড-এনওএফ।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও আনোয়ারা উপজেলায় অবস্থিত এসব কারখানা ও বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১২ থেকে ১৪ হাজারের মত শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা কর্মরত আছেন।
এস আলম গ্রুপের ব্যবস্থাপক হোসেন বলেন, কারখানা বন্ধ থাকলেও এসময়ে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা চলবে।
এস আলম গ্রুপের সহকারী ব্যবস্থাপক পদমর্যাদার আরেক কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংকের অসহযোগিতার কারণে এসব কারখানার জন্য কাঁচামাল আমদানি করা যাচ্ছে না। এছাড়া কয়েকটিতে অনেক আগে থেকেই কাঁচামাল ছিল না। সবমিলিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বন্ধ ঘোষণার নোটিস দেওয়ার পর কর্ণফুলী উপজেলার কালারপুল এলাকায় অবস্থিত এস আলম কোল্ড রোল স্টিলসের কিছু শ্রমিক বিক্ষোভ করার চেষ্টা করেন। পরে বেতন-ভাতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তাদের শান্ত থাকার অনুরোধ করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :