শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


উজ্জ্বল চক্রবর্ত্তী শিশির, দুপচাঁচিয়া

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩১, ২০২৫, ০৯:১০ পিএম

বাঁশের পণ্য বিক্রি করে সংসার চলে সালাউদ্দিনের

উজ্জ্বল চক্রবর্ত্তী শিশির, দুপচাঁচিয়া

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩১, ২০২৫, ০৯:১০ পিএম

বাঁশের পণ্য বিক্রি করে সংসার চলে সালাউদ্দিনের

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী বগুড়ার দুপচাঁচিয়া ধাপ সুলতানগঞ্জ হাটে বাঁশের পণ্য বিক্রি করে সংসার চালান সালাউদ্দিন। হাটে বাঁশশিল্প অনেকেরই গুরুত্বপূর্ণ জীবিকা জোগায়। প্রায় ২০-২৫ পরিবার বাঁশ থেকে তৈরি পণ্য বিক্রি করে জীবিকা চালায়। বাঁশের পণ্য যেমন-ডালা, চালুন, কুলা, ঝাড়ু চাতায়সহ বিভিন্ন রকমারি বিক্রি করে।

দুপচাঁচিয়া ধাপ সুলতানগঞ্জ হাট সপ্তাহে দুই দিন-রোববার ও বৃহস্পতিবার বাঁশের পণ্য কেনা-বেঁচা হয়।

ধাপহাট ঘুরে বিক্রেতা সালাউদ্দিন (৪৮) সঙ্গে কথা বলে জানায়, তিনি বিভিন্ন এলাকা থেকে বাঁশ কিনে এনে পণ্য সামগ্রী তৈরি করে হাটবাজারে বিক্রি করেন।এই এলাকার প্রতিটি হাটে ৭/৮হাজার টাকা বিক্রি করে যা লাভ হয় তাদিয়ে সংসারের জীবিকা চালায়। তিনি আরো বলেন বিশেষ করে দুপচাঁচিয়া ধাপ সুলতানগঞ্জ হাটে অনেক পরিমান পণ্য বিক্রি হয়। 

শহিদুল ইসলাম (৫৫) নামে আর একজন বাঁশের পণ্য বিক্রেতা বলেন, আমি দীর্ঘ এই হাটে ২৫ বছর ধরে এই বাঁশের পণ্য বিক্রি করে পরিবারের দুই ছেলে ও এক মেয়েকে লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে যাচ্ছি। প্রতি হাটবার এলে ৪/৭ হাজার টাকা বাঁশের পণ্য বিক্রি করি। এই পণ্য বিক্রি করলে ৬/৭শ‍‍` টাকা লাভ করে তা সংসারের প্রতি খরচ করে থাকি। তবে আমরা এখনো এই ব্যবসার ওপর নির্ভরশীল।

একজন ক্রেতা হযরত আলী (৪০) জানায়, তার বাড়িতে কুলোর প্রয়োজন তাই সে নতুন কুলা কিনতে এসেছেন। তিনি আরো বলেন, আমরা বাসের পণ্য ব্যবহার করতে অভ্যস্ত। বিশেষ করে আধুনিক যুগে প্লাস্টিকের পণ্য আশায় বাঁশের পণ্যের চাহিদা অনেকাংশে কমে গিয়েছে কিন্তু আমরা বাঁশের তৈরি গুলো দিয়ে ধান ও চাল পরিষ্কার করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ মনে করি।

ধাপহাট ঘুরে বাঁশের পণ্য তৈরীর কারিগর রফিকুল ইসলাম (৩৮) সঙ্গে কথা বলি। তিনি জানান, সপ্তাহে হাট বার আসার আগেই ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করা হয়। আমার পাশাপাশি পরিবারের নারীরাও এ কাজের সহযোগিতা করে।

র্তমানে বাঁশের মূল্য বৃদ্ধি হওয়ায় বাজারে বাঁশের চাহিদা অনেকাংশে কমে গিয়েছে। এর কারণে বাঁশের পণ্য বিক্রি করে যে লাভ হয় তা দিয়ে সংসার চালানো খুবই কষ্টকর। বাঁশের পণ্য যেমন-বড় ডালি ১১০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা, মাছ ধরার পোলো ৩৫০ টাকা থেকে ৪২০ টাকা, মাটি কাটার ডালা ৯০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা, মুরগির টোপা ১৩০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা, কবুতরের খাঁচা ১৩০ টাকা থেকে ১৯০ টাকা, ধানচালা কুলা ৯০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা। এসব বাঁশের পণ্য এই দামে বিক্রি না করলে আমাদের সংসার চলে না। এখন প্লাস্টিকের পণ্য বাঁশের পণ্য থেকে কম হওয়ায় অধিকাংশ ক্রেতা প্লাস্টিক পণ্য কিনতে আগ্রহী হচ্ছেন।

ধাপ সুলতানগঞ্জ হাটে ইজারদার আবু সাঈদ ফকির বলেন, এখন বাঁশের পণ্যের চাহিদা আগের মত নেই। প্লাস্টিক পণ্য বাজারে আসার কারণে এসব পণ্য বাজারে কম বিক্রি হচ্ছে। এই হাটে আগে ৭০ থেকে ১২০টি দোকান বসতো, এখন সেটা কমে ২০-২৫টি দোকান হয়ে গেছে।

স্থানীয় কারিগর ও ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, এই ঐতিহ্যবাহী বাঁশ শিল্প ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। গ্রামীণ অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে এ শিল্পকে বাঁচানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণে প্রয়োজনীয়তা হয়ে উঠেছে।

বাঁশশিল্পের সঙ্গে কর্মরত পরিবারগুলো আশা করছে, যদি সরকারি ও স্থানীয় উদ্যোগে তাদের এই শিল্পকে সহায়তা করা হয় তবে হয়তো তারা তাদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারবে। 

আরবি/জেডআর

Link copied!