মেহেরপুরে গ্রীষ্মকালীন শিম চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন চাষিরা। বৈরী আবহাওয়া সঠিক মত পরিচর্যা না করতে পারলেও ঘটে নিয়ে ফলন বিপর্যয়। বাজারে শিমের ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা। প্রতি বিঘায় সব খরচ বাদ দিয়ে লাভ প্রায় লাখ টাকা। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে শিম চাষিদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে দাবি জেলা কৃষি কর্মকর্তার।
সবজি খ্যাত জেলা মেহেরপুর। শীতের শুরুতে আগাম জাতের গ্রীষ্মকালীন শিম চাষ করে আশার আলো দেখছেন মেহেরপুরের চাষিরা। শীতের শুরুতে শিমের ব্যাপক চাহিদা ও দাম ভাল পাওয়াই খুশি কৃষকেরা। কৃষকের জমি থেকে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে মেহেরপুর জেলা এবার ৩০০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে আগাম গ্রীষ্মকালীন শিমের। শিমের বীজ সাধারণত জুন মাসে (জৈষ্ঠ-আষাঢ়) রোপণ করতে হয়। এক বিঘা জমিতে খরচ হয় ১৫-২০ হাজার টাকা। ফলন পাওয়া যায় বিঘা প্রতি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। আর শীতকালীন শিম চাষে বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। সে সময় শিমের উৎপাদন বেশি হওয়ায় বাজারে দাম কমে বিঘা প্রতি ৬০-৭০ হাজার টাকার ফলন পাওয়া যায়।
গাংনী উপজেলার করমদী গ্রামের আলী হোসেন দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে জানান , শিম সাধারণত শীতকালীন সবজি। এর আগে বর্ষাকালে চাষ হতো না। শ্রাবণ মাসের প্রথম দিকে শিমের বীজ বপণ করতে হয়। পরবর্তীতে চারা গজানোর ২৫-৩০ দিনের মাথায় ফুল আসে। এরপর দেড় মাস পর থেকেই শিম তোলা শুরু হয়। একটানা ছয় মাস পর্যন্ত খেত থেকে শিম উঠানো যায়।
মেহেরপুর সদর উপজেলার বুড়িপোতা গ্রামের আব্বাস মিয়া দৈনিক রূপালি বাংলাদেশকে জানান, চলতি বছর দুই বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন শিম চাষ করেছি। দুই বিঘা শিম চাষ করতে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এই জমি থেকে প্রায় ১ লাখ টাকার শিম বিক্রি করেছি। এবছর প্রতি কেজি শিম ৭০-৮০ টাকা ধরে বিক্রি হচ্ছে জমি থেকেই। দাম এরকম থাকলে আশা করি আমার এই দুই বিঘা জমি থেকে প্রায় ৪ লাখ শিম বিক্রি করতে পারবো।
মুজিবনগর উপজেলার তারানগর গ্রামের চাষী সোহাগ মন্ডল দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে জানান, এক বিঘা জমিতে শিম চাষে খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। বর্তমানে দাম ভাল থাকায় খরচ বাদে লক্ষাধিক টাকা ঘরে আসবে বলে আশা চাষীদের। দাম ভালো পাওয়ায় অনেকে আগ্রহ হচ্ছেন আগামীতে গ্রীষ্মকালীন শিম চাষে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে জানান, আগাম শিম চাষ মেহেরপুর জেলায় বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। চাষীদের পরিমিত কীটনাশক ও ছাত্রাকনাশক প্রয়োগ করে শিম চাষের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এই সময় সবজির দাম ও চাহীদা বেশি থাকায় আগামীতে শিম চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে।
আপনার মতামত লিখুন :