ঢাকা রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে পদ্মায় তীব্র ভাঙন

মো. আল-আমিন, শরীয়তপুর

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৪, ০৪:৩২ পিএম

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে পদ্মায় তীব্র ভাঙন

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

শরীয়তপুরের জাজিরায় পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের পাইনপাড়া আহাম্মেদ মাঝির কান্দি এলাকায় নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে অন্তত ২০০ পরিবার তাদের বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রভাবশালীরা পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে খননযন্ত্রের সাহায্যে বালু তোলার কারণে এ ভাঙন দেখা দিয়েছে।

রবিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ভাঙন কবলিত এলাকা পাইনপাড়া আহাম্মেদ মাঝির কান্দিতে ঘুরে দেখা যায়, পদ্মা সেতুর সংলগ্ন জাজিরা উপজেলার পদ্মা নদী বেষ্টিত পাইনপাড়া চরের আহাম্মেদ মাঝির কান্দি এলাকার হাকিম আলী মজুমদারের বাড়ি থেকে মতি মাঝির বাড়ি পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা ভাঙনের শিকার হয়েছে। গত দুই সপ্তাহ যাবত নদী ভাঙনে অন্তত ২০০ পরিবার তাদের বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে। পাশাপাশি নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে ফসলি জমি, গাছপালা, মসজিদ। ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে পাইনপাড়া মাঝিকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মফিজুল উলূম নূরানী মাদরাসাসহ আরও অন্তত ৩০০ বাড়িঘর। অনেকেই পাশের এলাকা মঙ্গল মাঝির ঘাট এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন।

আহাম্মেদ মাঝির কান্দি এলাকার আনোয়ার মাঝি বলেন, আমার বাপের ৩০ বিঘা জমি আছিল। তারভিতর ২০ বিঘা জমি নদীতে নিয়া গেছে। এখন যে জমিতে বাড়িঘর আছিল, বাড়িঘরও নদীতে নিয়া যাইতাছে। আমি এহন বাপ-মা, বাচ্চাকাচ্চা নিয়া কোথাই যাইব, তাও আমার ঠিকানা নাই। সরকার বাহাদুর আমাগো যেন আশ্রয় দেয় এই দাবি করি।

পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের সমাজসেবক মান্নান ফরাজী বলেন, পদ্মা সেতুর পূর্ব পাশে পাইনপাড়া চরে দীর্ঘদিন যাবত প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে খননযন্ত্রের সাহায্যে বালু তোলার কারণে আহাম্মেদ মাঝির কান্দি এলাকায় ভাঙন দেয়া দিয়েছে। গত দুই সপ্তাহে ২০০ পরিবার তাদের বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে। তাই প্রশাসনের কাছে দাবি, অবৈধভাবে খননযন্ত্রের সাহায্যে বালু তোলা বন্ধ করা হোক।

একই এলাকার আনোয়ার হোসেন মস্তক বলেন, ড্রেজার দিয়ে বালি কাটার কারণে আমাগো চরডা ভাইঙ্গা যাইতাছে। আমাগো ছয় ভাইর মিললা আসটো (আট) বিঘা জমি আছিল বেশিরভাগ গাঙ্গে (নদী) নইয়া গেছে। সরকার একটা বেড়িবাঁধ দিয়া দিলে, আর ড্রেজার বন্ধ কোরলে আমরা  বাঁচতাম।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)  সাদিয়া ইসলাম লুনা জানান, আহাম্মেদ মাঝির কান্দি এলাকায় নদী ভাঙনের স্বীকার (গত সপ্তাহে) ১৫০ জন পরিবারের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ওই পরিবারগুলোকে খাদ্য সহায়তা দিয়ে সহযোগিতা করা হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য পরিবারের তালিকা তৈরি করে সহযোগিতা করা হবে।

শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (শরীয়তপুর পওর শাখা -৩) উপসহকারী প্রকৌশলী সুমন চন্দ্র বনিক বলেন, বিগত বছরগুলোতে পাইনপাড়া এলাকায় ভাঙন কবলিত স্থানে আমরা জরুরি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করতে পেরেছি। এ বছর জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়নি। কারণ, পাইনপাড়া চর এলাকায় অর্থ বরাদ্দ চেয়ে আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে পত্র দিয়েছি। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে বরাদ্দ পেলে ভাঙন রোধে কাজ শুরু করা যাবে। 

আরবি/জেডআর

Link copied!