বগুড়ার ধুনটে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে যুবদল ও ছাত্রদল নেতাদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে যুবলীগের নেতাকর্মীরাদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার ১৫ নভেম্বর রাত ৮ টার দিকে উপজেলার চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের বিশ্বহরিগাছা বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় ইউনিয়ন যুবদল নেতা শাহিন আলম, শাহিদ খান ও ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী লিমন হোসেন গুরুতর আহত হয়েছে। এঘটনায় রাতেই যুবদল নেতা শাহিদ খান বাদি হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১৫/২০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতে বিশ্বহরিগাছা বাজারে চৌকিবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যোগসাজশে যুবলীগের ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা একত্রে জড়ো হয়ে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাজারের পাকা রাস্তার উপরে জয় বাংলা স্লোগান দিতে থাকে। একই সময়ে পাশের একটি চা স্টলে যুবদল ও ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী চা পান করেছিলেন। এসময় যুবলীগ নেতা জহুরুল ইসলাম মিলন তাদের সেখানে দেখে বলে বিএনপি ছাত্রদলের কু*ত্তার বাচ্চাদের ধর। তখন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হত্যার উদ্দেশ্যে রাম দা দিয়ে যুবদল নেতা শাহিন আলমের মাথা লক্ষ্য করে স্বজোরে কোপ দেয়। শাহিন আলম হুচুট খেয়ে মাটিতে পড়ে গেলে কোপ লক্ষ্য ভুষ্ট হয়ে শাহীন আলমের পায়ে লেগে সে গুরুতর আহত হয়। এসময় পাশে থাকা আরেক যুবদল নেতা শাহিদ খানের মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে । তখন ছাত্রদল নেতা লিমন হোসেন তাদের বাধা দিতে গেলে যুবলীগের নেতাকর্মীরা তাকেও হত্যার উদ্দেশ্যে রাম দা দিয়ে কোপ দিলে তার পায়ে লেগে রক্তাক্ত জখম হয়। তখন তাদের চিৎকারে বাজারের লোকজন এগিয়ে আসলে যুবলীগ নেতাকর্মীরা প্রাননাশের হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে আহতদের উদ্ধার করে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়।
যুবদল নেতা শাহিদ খান বলেন, আমরা কয়েকজন নেতাকর্মী বাজারে বসে চা খাচ্ছিলাম। এসময় যুবলীগ নেতা জহুরুল ইসলাম মিলন অতর্কিত ভাবে আমাদের উপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করে। হামলায় আমি, যুবদল নেতা শাহিন আলম ও ছাত্রদল নেতা লিমন হোসেন সহ বেশ কজন আহত হয়েছি।
যুবলীগ নেতা জহুরুল ইসলাম মিলন বলেন, আমার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ সম্পুর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন আমি এ জীবনে কোনদিন যুবলীগ করি নাই। আমাকে যুবলীগ নেতা দেখিয়ে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছে। আমি মূলত চৌকিবাড়ি ইউনিয়ন ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি ছিলাম। বর্তমানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পেশাজীবি সংগঠনের সাথে যুক্ত আছি।
চৌকিবাড়ী ইউনিয়ন যুবলীগের সেক্রেটারী জানান, জহুরুল ইসলাম মিলন যুবলীগের কেউ নয়। কোন মিছিল মিটিং এ তাকে সম্পৃক্ত থাকতে দেখিনি তবে আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের সাথে তার একটা সখ্যতা ছিল। সখ্যতার কারনেই আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের সাথে তার কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আছে। তিনি মূলত সুবিধা নিতেই ক্ষমতাবান মানুষের সাথে চলতো।
ধুনট উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা আমিনুল ইসলাম জানান, জহুরুল ইসলাম মিলন চৌকিবাড়ি ইউনিয়ন ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পেশাজীবি সংগঠনের সাথে যুক্ত আছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জহুরুল ইসলাম মিলন রাজনৈতিক ভাবে আদৌ যুবলীগের সাথে জড়িত ছিল কিনা এটা আমার জানা নেই।
ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইদুল আলম জানান, এঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :