কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সীগাল হোটেল পয়েন্টে খুলনার সাবেক কাউন্সিলর চাঞ্চল্যকর গোলাম রব্বানী টিপু হত্যাকান্ডের ক্লো উদঘাটন নিয়ে রীতিমতো ধোয়াশায় পড়েছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত টিপুর সঙ্গে থাকা নারীর পরিচয় নিয়েও গেল ৫ দিন ধরে জট কাটছিল না।
নিহত সাবেক কাউন্সিলর টিপুসহ সবাই কক্সবাজার এসেছিলেন ইম্পেরিয়াল এক্সপ্রেসের একটি বাসে। হোটেল কক্ষে পাওয়া সেই বাসের একটি ট্রাভেল লাগেজ ট্যাগ পায় তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। এটির সুত্র ধরেই কাজ শুরু করে তারা। এই বাসের অন্যান্য যাত্রীসহ নাম্বার তল্লাশী হয়। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এক পর্যায়ে ঋতুর নাম উঠে আসে। তারপর থেকে ঋতুর অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করা হয়।
কক্সবাজার পুলিশ সুপার মো. রহমত উল্লাহ বলেন, গত সোমবার ১৩ই জানুয়ারি দিনগত রাতে মৌলভীবাজার থেকে চাঞ্চল্যকর গোলাম রব্বানী টিপু হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত তিনকে গ্রেপ্তার করেছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ। গ্রেপ্তারদের মধ্যে হোটেলে অবস্থানকারি সঙ্গীয় নারীও রয়েছেন। এসময় উদ্ধার করা হয়েছে হত্যা কান্ডে ব্যবহৃত পিস্তল ও ৪টি কার্তুজ।
অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) পেয়ার আহমেদ।
বুধবার সকাল ১১টায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করে পুলিশ সুপার মো. রহমত উল্লাহ আরও বলেন, ঘটনার পর থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর অভিযান অব্যাহত ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন তথ্যে পুলিশ জানতে পারে ঘটনায় জড়িত নারীসহ তার সঙ্গীয় কয়েকজন মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থান করছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার থেকে জেলা পুলিশের একটি দল মৌলভীবাজারের জুড়ি থানার কাপনা পাহাড়ি চা বাগানে অভিযান চালায়। এক পর্যায়ে গত সোমবার গভীর রাতে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের মধ্যে সাবেক কাউন্সিলর গোলাম রব্বানী টিপুর সাথে কক্সবাজার ঘুরতে আসা নারী খুলনা সিটি কর্পোরেশন দেওয়ান মোল্লা পাড়া আক্কাস আলী সড়কের মো. সেলিম আকনের মেয়ে ঋতু (২৪), একই এলাকার মো. জামাল শেখের ছেলে শেখ শাহরিয়ার ইসলাম পাপ্পু ও খুলনা কেশব লাল রোড মধ্য কারিগর পাড়ার মো. হায়দর সরদার অদুদ এর ছেলে গোলাম রসুল। এসময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত পিস্তল ও কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার মো. রহমত উল্লাহ বলেন, গ্রেপ্তার তিনজনই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ছিল। এদের মধ্যে জনৈক নারী কক্সবাজার ঘুরতে এসে কাউন্সিলর টিপুর সঙ্গে হোটেলে উঠেছিল। আর ঘটনার পর থেকে ওই নারীর সন্ধান পাচ্ছিল না পুলিশ। এছাড়া গ্রেপ্তার অপর দুইজন হত্যাকান্ডের মিশনে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে। ঋতু কিলিং মিশনের সদস্য ও তাকে টুপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
গ্রেপ্তাকৃতদের আদালতে সোপর্দের পর রিমান্ড আবেদন করা হবে বলেও জানান তিনি।
খুলনা সিটি কর্পোরেশন সাবেক কাউন্সিলর গোলাম রাব্বানী টিপু (৫৫) কে গত ৯ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার সময় কক্সবাজার সৈকতের সীগাল পয়েন্টে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ১০ জানুয়ারি কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :