ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় চাঁদার দাবিতে প্রকাশ্য দিবালোকে সন্ত্রাসী বাহিনীর ছোঁড়া গুলিতে বাম পায়েয় হাঁটুতে গুলিবিদ্ধ হয়েও তিন-তলা ভবনের ছাঁদ থেকে লাফিয়ে প্রাণে বাঁচলো সৈনিক ইসলাম নামের এক চা দোকানি।
বৃহস্পতিবার ৯ জানুয়ারি দুপুরে আশুলিয়ার গোরাটের ফুলবাগান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত সৈনিক ইসলাম নীলফামারী জেলার ডিমলা থানার লাউতলা গ্রামে মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে। সে গোরাট এলাকায় তার বৃদ্ধা মাকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থেকে চায়ের দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করে।
অভিযুক্ত আশিক, কানা সজিব ও পারভেজ গোরাট এলাকার বাসিন্দা। বাগেরহাট জেলায় তৈয়বের গ্রামের বাড়ি।
গুলিবিদ্ধ সৈনিক ইসলাম শাহীন অভিযোগ করে বলেন, আমি ডেবনিয়ার গার্মেন্টসের সামনে ফুটপাতে আমার মাকে নিয়ে চা-দোকানদারি করি। আমার কাছে এর আগে আশিক, কানা সজিব, তৈয়ব ও পারভেজ চাঁদা দাবি করে আসছিলো। এতে আমি রাজি হইনি। এরপরে আমি সিগারেট আনার জন্য ফুলবাগান এলাকায় গেলে তারা আমাকে একা পেয়ে ধাওয়া দেয়। পরে আমি দৌড় দিলে তৈয়ব পরপর ৩টি গুলি করে। ২টি গুলি শরীরে লাগে নাই। তৃতীয় গুলিটি আমার বাম পায়ে লাগে। পরে আমি রক্তাক্ত অবস্থায় দৌড় দিয়ে একটি ভবনের ৩ তলায় রুমের মধ্যে ঢুকে পড়ি এবং ভিতর থেকে দরজা আটকে দেই। পরক্ষণে সেখানে তারা গিয়ে দড়জা ভাঙার চেষ্টা করে। এরপরে আমার জীবন বাঁচাতে ওই ভবনের ৩ তলা থেকে লাফ দিয়ে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেই। সেখান থেকে লোকজনে ধরাধরি করে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমি এর ন্যায় বিচার চাই।
গুলিবিদ্ধের মা নাজমা বেগম জানান, স্থানীয় আওয়ামী লীগের লোক আকাশ, আসিক, সজীব, পারভেজ ও তৈয়বসহ ৮/১০জন সন্ত্রাসী পোশাক কারখানার সামনের প্রত্যেক দোকান থেকে প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে। চাঁদা না দিলে দোকানদারদের বেদম মারধর করে। বৃহস্পতিবার দুপুরে আকাশ, আশিক, তৈয়ব ও পারভেজ প্রত্যেক দোকান থেকে চাঁদা আদায় করছিল। এ সময় সৈনিক ইসলাম চায়ের দোকানে চা বিক্রি করছিল। চাঁদাবাজরা প্রতিদিনের মতো সৈনিক ইসলামের কাছে ৫০ টাকা চাঁদা চাইলে সে টাকা দিতে অস্বীকার করে। এতে সন্ত্রাসীরা ক্ষিপ্ত হয়। পরে আমার ছেলে ফুলবাগান এলাকায় সিগারেট আনার জন্য গেলে। তারা তাকে ধাওয়া দেয়। একপর্যায়ে সে ছুটে দৌড় দিলে তৈয়ব নামের এক সন্ত্রাসী তাকে পিছন থেকে গুলি করে। এ গুলিতে সৈনিক ইসলামের বাম পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সে পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরে স্থানীয়রা থানায় সংবাদ দিলে আশুলিয়া থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে নারী শিশু হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরবর্তীতে সেখানকার ডাক্তার ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে রেফার করেন।
এব্যাপারে নারী শিশু হাসপাতলের কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, গুলিবিদ্ধ সৈনিক ইসলামকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গুলি বের করার জন্য ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
আশুলিয়া থানার ওসি তদন্ত কামাল হোসেন জানান, গুলিবিদ্ধ চা দোকানে সৈনিক ইসলামকে আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতলে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে সে পরদর্শন করেছেন। ঘটনায় এখনো সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধারের জন্য পুলিশী অভিযান চলছে।
এবিষয়ে আশুলিয়া থানার (ওসি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :